সাদপন্থিদের কার্যক্রম রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধের দাবি
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:৩২ | আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৬:০৯
ঢাকা: বাংলাদেশে সাদপন্থিদের সকল কার্যক্রম রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন জোবায়েরপন্থিরা। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর কাকরাইল মসজিদে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এমন দাবি জানানো হয়েছে।
টঙ্গী ইজতেমার মাঠে অবস্থানরত তাবলিগ জামাতের সাথি ও মাঠে অবস্থিত মাদরাসার কোমলমতি শিশু এবং শিক্ষকদের ওপরে বিনা কারণে সাদপন্থিকর্তৃক বর্বরোচিত হামলা ও হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে এই জরুরি সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনটি দাবি জানানো হয়:
ক. বারবার আক্রমণকারী এই সন্ত্রাসী সাদপন্থিদের সকল কার্যক্রম রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।
খ. ১৭ ডিসেম্বর গভীর রাতের হত্যাযজ্ঞ এবং ২০১৮ সালের পহেলা ডিসেম্বরের হামলার সঙ্গে জড়িত সকল আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় আনতে হবে।
গ. কাকরাইল মারকাজ ও টঙ্গী ইজতেমার মাঠসহ তাবলিগের সকল কার্যক্রম শুরা-ঈ নিজামের অধীনে পরিচালিত হওয়া নিশ্চিত করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে গত ১৭ ডিসেম্বর গভীর রাতে সাথিদের ওপর সাদপন্থি কর্তৃক হামলাকে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হিসেবে প্রচার করা থেকে বিরত থাকার জন্য সাংবাদকের অনুরোধ জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ফ্যাসিস্ট আ. লীগ সরকারের দ্রোসরদের যোগসাজসে গত ১৭ ডিসেম্বর সাদপন্থিদের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার নীল নকশা করেছিল। তাদের এ নীল নকশা বাস্তবায়নে পার্শ্ববর্তী একটি দেশ ও ইসরাইলের প্রত্যক্ষ মদদ রয়েছে বলে কিছু জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কেফায়েত উল্লাহ আজহারি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আপনারা নিশ্চই অবগত আছেন যে, বিশ্ব ইইজতেমা টঙ্গীর মাঠ রক্ষণাবেক্ষণের দায়-দায়িত্ব বিগত বছরগুলোতে শুরাই নেজামের ওপর পরিপূর্ণরূপে ন্যস্ত ছিল। কিন্তু বড় পরিতাপের বিষয় যে, গত ১৭ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) গভীর রাতে টঙ্গী ইস্তেমার মাঠে আসন্ন বিশ্ব ইজতেমা জন্য মাঠ প্রস্তুতি ও মাঠের পাহারার দায়িত্বে নিয়োজিত তাবলিগ জামাতের সাথি ও মাঠে অবস্থিত মানুষদের ওপর বিনা কারণে সাদপন্থীরা বর্বররোচিত ও পৈশাচিক হামলা চালায়। রামদা, কিরিচ, ছুরি, লোহার রডের মত ধারালো অস্ত্র দিয়ে ঘুমন্ত ও নামাজরত নিরীহ-নিরস্ত্র তাবলীগ জামাতের সাথীদের ওপর আতর্কিত হামলা চালায়। ইতিহাসের এই বর্বরোচিত হামলায় শুরাই নেজামের তিন জন সাথি নিহত এবং শত শত সাথি মারাত্মকভাবে আহত হয়। সাদপন্থীরা এতটাই হিংস্র হয়ে উঠে যে, বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসারত আহতদের ওপর ও হামলা চালাতে দ্বিধাবোধ করেনি।
সাদপন্থিরা একই কায়দায় গত ২০১৮ সালের পহেলা ডিসেম্বরেও একতরফা আক্রমণ চালিয়ে প্রায় ৫ হাজারের মতো তাবলিগ জামাতের সাথি ও ছাত্র শিক্ষকদেরকে রক্তাক্ত করে। এতেই প্রমাণিত হয় যে, সাদপন্থিরা তাবলিগী নয়। বরং তারা সন্ত্রাসী চরমপন্থি বাহিনী। যারা গত ১৭ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল তাদের মূল হোতাসহ অনেকের নামে মামলা হয়েছে। কিন্তু আসামিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার ব্যাপারে দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। দুঃখের সঙ্গে আরও বলতে হয় যে, ১৭ ডিসেম্বরের কাল রাতে টঙ্গীর মাঠের দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। অবস্থার দৃষ্টে মনে হচ্ছে, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার ও তাদের দোসররা যোগসাজস করে সাদপন্থিদের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার একটি নীল নকশা করেছিল। তাদের এ নীল নকশা বাস্তবায়নে পার্শ্ববর্তী একটি দেশ ও ইসরাইলের প্রত্যক্ষ মদদ রয়েছে বলে কিছু জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ ও মাওলানা আমানুল হক।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এমপি