বাংলাদেশ-চীন ‘বন্ধুত্বে’র সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন আগামী বছর
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:৫৪ | আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৩:৪২
ঢাকা: আগামী বছর বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যেকার ‘ফ্রেন্ডশিপ’ তথা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে সুবর্ণজয়ন্তী পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এর মাধ্যমে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে জানান তিনি।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে চায়না মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি) আয়োজিত বাংলাদেশ-চায়না আপন মিডিয়া ক্লাবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, গত ৫০ বছরে চীনের মানুষের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের সম্পর্ক দিন দিন বেড়েছে। দুই দেশের মানুষের সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। অন্তত ৩০০ জাহাজে চীন থেকে বাংলাদেশে পণ্য আসে। বাংলাদেশের মানুষের ব্যবহৃত গৃহস্থালি পণ্যের বেশির ভাগই চীনে তৈরি। চীনের ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স পণ্যে ভরপুর বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের কৃষিতে চীনা যন্ত্রপাতি নতুন মাত্রা যোগ করেছে উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, কৃষির উন্নতি হয়েছে প্রযুক্তির মাধ্যমে। চীনা প্রযুক্তি কেবল বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের প্রায় সব দেশেই রয়েছে। বলতে গেলে শিল্প বিপ্লব ঘটিয়ে দিয়েছে চীন। প্রযুক্তিতে এখন বিশ্বে এক নম্বর চীন। তারা খুব দ্রুতই উন্নতির শিখরে পৌঁছে গেছে।
প্রেস সচিব জানান, চীনের দুটি বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের সবচেয়ে সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শাখাই বাংলাদেশে রয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশে চায়না মিডিয়া গ্রুপ তাদের টেলিভিশন ও রেডিও পরিচালনা করে আসছে। আর এসব অনুষ্ঠান বাংলায় প্রচার করে আসছে। এতে আমাদের সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটছে। দুই দেশের সাংবাদিকদের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন ঘটছে। আগামীতে চলচ্চিত্র থেকে শুরু করে অন্যান্য দিকগুলোতেও গুরুত্ব দেওয়া হবে।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বাংলাদেশের অনেকগুলো প্রকল্পে চীনের অংশীদারি রয়েছে। অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনায় এর অবদান অনেক।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এক ভিডিওবার্তায় বলেন, চায়না মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি) আয়োজিত আপন মিডিয়া ক্লাবের যাত্রা শুভ হোক। এর মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার হবে এবং সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটবে। চীনা টেলিভিশন ও রেডিও বাংলাদেশে তাদের অনুষ্ঠান বাংলায় প্রচার করে, যার মাধ্যমে দুই দেশের সংস্কৃতি বিষয়ে দুই দেশের মানুষ জানতে পারে।
বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক এ এস এম জাহীদ বলেন, চায়না মিডিয়া গ্রুপের মতো আমাদের বিটিভি ও রেডিওকে এক প্ল্যাটফর্মে আনা যায় কি না, তা নিয়ে ভাবা যেতে পারে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইন্দ্রজিৎ কুমার ঘোষ বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের অনেক মিডিয়া একে অন্যের ছবি ব্যবহার করে থাকে।
বাচসাস সভাপতি কামরুল হাসান দর্পণ বলেন, চীনা চলচ্চিত্রের অনেক চাহিদা রয়েছে এ দেশে। তাই আগামীতে বাংলা চলচ্চিত্রের সঙ্গে যৌথভাবে ভবিষ্যতে চলচ্চিত্র নির্মাণ করা যায় কি না, তা ভাবা যেতে পারে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মানুষের মধ্যে সম্পর্ক দিন দিন বাড়ছে। অতীশ দীপঙ্কর চীনে গিয়ে উচ্চ শিক্ষা নিয়েছিলেন। এখনো সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে। অনেক ছেলে মেয়ে চীনে গিয়ে উচ্চ শিক্ষা নিচ্ছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) প্রধান প্রতিবেদক মুরসালিন নোমানি, চীনা দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সেলর লি শাওফেং, সিএমজির বাংলা বিভাগের পরিচালক ইয়ু কুয়াং ইউয়েসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতা ও সাংবাদিকরা।
সারাবাংলা/ইউজে/এনজে/টিআর