Tuesday 24 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দুই পর্বের ইজতেমা বহাল রাখতে সরকারের প্রতি আইনি নোটিশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:৪২ | আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:৪৪

আইনি নোটিশ

ঢাকা: তাবলিগ জামাতের দুই পর্বের ইজতেমা বহাল রাখতে সরকারের প্রতি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর বরাবরে মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

অরাজনৈতিক সংগঠন আল-কুরআন স্টাডি সেন্টারের (সুপ্রিম কোর্ট বার) পক্ষে আইনজীবী আশরাফ উজ-জামান ও আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন এই নোটিশ পাঠিয়েছেন।

নোটিশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ধর্ম মন্ত্রণালয় ও সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী এবং উভয় পক্ষের (মাওলানা জুবায়ের ও মাওলানা সাদপন্থি) পাঁচ জন করে ব্যক্তিকে নিয়ে বিবদমান সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে কাকরাইল মসজিদের বসবাসের আবাসিক ব্যবস্থা (তাবলিগ জামাতের লোকজনের বসবাস) বন্ধ করতে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ তাবলিগ জামাতের দুটি অংশ ‘মাওলানা জুবায়ের’ ও ‘মাওলানা সাদপন্থিদের’ চলমান দ্বন্দ্ব আবারও সংঘাতে রূপ নিয়েছে। গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে অবস্থিত বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষে এক লোমহর্ষক ঘটনা ঘটেছে। এই সংঘর্ষে চার জন নিহত ও শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।

এর আগে ২০১৮ সালে উভয়পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত ও পাঁচ হাজার মানুষ আহত হয়েছিল। তাবলিগ জামাতের কেন্দ্রীয় মার্কাজ ঢাকার কাকরাইল মসজিদের দখল ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুপক্ষের সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টির পর ২০১৭ সাল থেকে প্রতি মাসেই দুবার পালাক্রমে দুপক্ষের মধ্যে দখল-বেদখল ঘটনা ঘটছে। এমনকি টঙ্গীতে তাদের ইজতেমাকে কেন্দ্র করে গত কিছুদিন ধরেই সড়ক অবরোধ, প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেওয়াসহ নানা কর্মসূচি মাধ্যমে কাকরাইল মসজিদসহ দেশের বিভিন্ন মসজিদের পরিবেশকে উত্তপ্ত করে তুলা হচ্ছে। পক্ষ-বিপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা মামলা-মোকদ্দমার মাধ্যমে আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে।

বিজ্ঞাপন

নোটিশে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে তাবলিগ জামাতের চলমান এ দ্বন্দ্ব সংঘাতের ঘটনায় আজ ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা আতঙ্কিত ও শঙ্কিত। ঘটনা যেভাবে চলমান তাতে মনে হয় ভবিষ্যতে আরও সংঘাত ও রক্তাক্তপাতের ঘটনা ঘটতে পারে। মসজিদের পরিবেশ আরও কুলষিত হতে পারে। তাই সুপ্রিম কোর্টের আল-কুরআন স্টাডি সেন্টার তৌহিদী জনতাকে এমন ষড়যন্ত্রের কবল থেকে রক্ষা করতে বদ্ধ পরিকর এবং এই মূহূর্তে তাদের সাহায্যে সরকারের এগিয়ে এসে সমস্যা নিরসনে বাস্তব পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করে।

এ ব্যাপারে সরকারকে পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আল কুরআন স্টাডি সেন্টারের পক্ষে কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা হয়। সেগুলো হলো-

  • ক. তাবলিগ জামাতের মাওলানা সাদপন্থি ও মাওলানা জুবায়েরপন্থিদের দুপক্ষই বিশ্ব ইজতেমা গত বারের ন্যায় আলাদাভাবে করার লক্ষ্যে দুপক্ষের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং ইসলামি ফাউন্ডেশনের বিশিষ্ট ইসলামি ব্যক্তিবর্গদের (৫+৫+৫) নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের লিয়াজো কমিটি করতে হবে। বিশেষভাবে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আল-কোরআন স্টাডি সেন্টারের চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন আহমদকে উক্ত লিয়াঁজো কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। এবং লিয়াঁজো কমিটির প্রধান হবেন ধর্ম উপদেষ্টা আ.ফ.ম খালিদ হোসেন। ওই কমিটিতে তাবলিগ জামাতের উভয় পক্ষের কোন রাজনীতিবিদ থাকতে পারবে না।
  • তাবলিগ জামাতের মধ্যে বিবাদমান দুই পক্ষ দীর্ঘ সাত বছর ধরে দ্বন্দ্ব-সংঘাত করে আসছে এবং এক পক্ষ নিজেকে হকপন্থি দাবি করে অপরপক্ষকে বাতিলপন্থি বলে আসছে। দেশের বিভিন্ন মসজিদের মধ্যে এ বিষয়ে পরস্পরের প্রতি ঘৃণা-বিদ্ধেষ ছড়ানো হচ্ছে। তাতে মসজিদের পবিত্র পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে কোনো রকম লিফলেট, পোস্টার ও পত্র-পত্রিকায় বিবৃতি এমনকি মসজিদে কারও বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য বন্ধ করার জন্য সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে।
  • তাবলিগ জামাতের বিবদমান দুই পক্ষই কাকরাইল মসজিদের দখল বা নিয়ন্ত্রণ বা আবাসিক হোটেলের ন্যায় যুগযুগ ধরে বসবাস করাকে তারা বিধিবদ্ধ নিয়ম বলে ধরে নিয়েছেন। মসজিদ বসবাসের জায়গা নয়, ইবাদতের স্থান। তাই আবাসস্থল না বানিয়ে মসজিদকে মসজিদের পরিবেশে ফিরিয়ে আনা, সেই লক্ষ্যে মসজিদের স্থায়ীভাবে বিবাদ মিমাংসার লক্ষ্যে অতিস্বত্বর ঢাকা জেলা প্রশাসকের (ডিসি) নেতৃত্বে একটি কাকরাইল মসজিদ কমিটি গঠন করে মসজিদের পরিবেশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

এ ব্যাপারে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে উল্লেখিত শর্তমতে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আল-কুরআন স্টাডি সেন্টার হাইকোর্টের দারস্থ হয়ে প্রয়োজনীয় ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/কেআইএফ/এইচআই

তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর