বেথেলহেমে বিবর্ণ বড়দিন
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:১৯ | আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:২৯
ফিলিস্থিনে যীশু খ্রিস্টের জন্মস্থান হিসেবে বিবেচিত বেথলেহেমকে মনে করা হয় বড়দিনের রাজধানী। বিশ্বজুড়ে খ্রিস্টানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন জাঁকজমকভাবে পালিত হলেও এই পবিত্র শহরেই নেই উৎসবের আমেজ।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
অধিকৃত পশ্চিম তীরের এই ফিলিস্তিনি শহরে সাধারণত বড়দিনের সময় যে ধরনের উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যায়, এ বছর তার ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি কোথাও। প্রতি বছর উৎসবমুখর আলোকসজ্জা ও অতিকায় গাছ বসিয়ে ম্যাঙ্গার স্কয়ার সজ্জিত করা হলেও এবার এসব অনুপস্থিত। প্রতি বছর এই ছুটির দিন উদযাপনের জন্য চত্বরে অসংখ্য পর্যটক ও তরুণদের ব্যান্ড জমায়েত হলেও এবার তাদেরকে দেখা যায়নি।
টানা দ্বিতীয় বছরের মতো ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরের বেথলেহেমে বড়দিনে উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
সেইন্ট পিটার ব্যাসিলিকায় পোপ ফ্রান্সিস বিশ্বাসীদের ‘যুদ্ধ, মেশিনগানের গুলি ও স্কুল-হাসপাতালে ফেলা বোমায় হতাহত শিশুদের’ কথা ভাবার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি ‘নির্মম ইসরায়েলি হামলার’ নিন্দা জানান। যথারীতি, তাৎক্ষণিকভাবে ইসরায়েলি কূটনীতিকরা পোপের বক্তব্যে আপত্তি জানিয়েছেন।
বেথলেহেমের মেয়র অ্যান্টন সালমান এএফপিকে বলেন, ‘এ বছর আমরা আমাদের উৎসব সীমিত রাখছি।’
স্থানীয় যাজক ড. মুনথার আইজ্যাক রেভারেন্ড বলেন, ‘এটি আনন্দ এবং উদযাপনের সময় হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু গাজায় আমাদের ভাইবোনদের সাথে সংহতি প্রকাশ করতেই এই শহরে জাঁকজমকভাবে উদযাপন করা হচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা বিশ্বাস করা কঠিন যে আমাদের ওপর আরেকটি বড়দিন এসেছে অথচ গণহত্যা এখনও বন্ধ হয়নি। সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীরা এটা চলতে দিতেই সন্তুষ্ট। তাদের কাছে ফিলিস্তিনিরা অযোগ্য।’
করোনাভাইরাস মহামারির আগে, ২০১৯ সালে বড়দিনের সময় প্রতি বছর এখানে ২০ লাখ মানুষের জমায়েত হতো, যা ২০২৪ সালে এসে এক লাখেরও নিচে নেমে এসেছে।
বড়দিনের উৎসব বাতিল এই শহরের অর্থনীতির ওপর বড় আঘাত হিসেবে এসেছে। বেথলেহেমের আয়ের ৭০ শতাংশই পর্যটন খাত থেকে আসে, যার সিংহভাগই বড়দিনের মৌসুমে উপার্জন হয়। মেয়র অ্যান্টন সালমান জানান, শহরে বেকারত্বের হার ৫০ শতাংশের আশেপাশে, যা পশ্চিম তীরের বাকি অংশের গড় বেকারত্বের হারের চেয়ে (৩০ শতাংশ) অনেক বেশি।
খ্রিস্টধর্মের ইতিহাসে বেথলেহেম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও এই পবিত্র ভূখণ্ডের ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষের মধ্যে খুবই ক্ষুদ্র একটি অংশ খ্রিস্টধর্ম পালন করেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলে প্রায় এক লাখ ৮২ হাজার, পশ্চিম তীর ও জেরুজালেমে ৫০ হাজার এবং গাজায় এক হাজার ৩০০ মানুষ খ্রিস্টান।
সারাবাংলা/এইচআই