নিজ দফতর পুড়ে ছাই, নীরবে বেরিয়ে গেলেন উপদেষ্টা আসিফ
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫:২৮ | আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:৩০
ঢাকা: সচিবালয়ের সাত নম্বর ভবনে যখন আগুন জ্বলছে, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তখন উত্তরাঞ্চল সফরে যাচ্ছেন। আগুনের খবর পেয়ে সব ফেলে ফিরে এসেছেন ঢাকায়। ছুটে গেছেন সচিবালয়ে। তার অধীনে যে দুটি মন্ত্রণালয়, দুটি যে পুড়ে গেছে আগুনের শিখায়।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার কিছু পরে সচিবালয়ে প্রবেশ করেন তরুণ উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। মন্ত্রণালয় আর নিজ কার্যালয় দেখার পর বিমর্ষ হয়ে পড়েন তিনি। প্রায় পাঁচ মাস ধরে কাজ করে আসা দফতরটাই যে চিনতে পারছিলেন না। তার নিজের অফিস কক্ষটিও পুড়ে ছাই হয়েছে।
সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনের আগুনে ষষ্ঠ থেকে নবম তলার প্রায় পুরোটাই পুড়ে গেছে। এর মধ্যেই রয়েছে স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। এই দুটি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসনকে সঙ্গে নিয়ে পুড়ে যাওয়া ভবনে প্রবেশ করেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব। এ সময় তার চোখে-মুখে বিষণ্ণতার ছাপ দেখা যায়। ভবন পরিদর্শন শেষে দুপুর ১২টা ৪৩ মিনিটে নীরবে সচিবালয় ত্যাগ করেন তিনি।
সচিবালয়ে হাজির হয়ে সাংবাদিকদের কিছু বলেননি আসিফ মাহমুদ। তবে এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্য ফেসবুকে নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে অগ্নিকাণ্ডের পেছনে নাশকতা বা ষড়যন্ত্রের গন্ধ পেয়েছেন বলে ইঙ্গিত দেন। বলেছেন, আগের সরকারের দুর্নীতির তথ্যপ্রমাণ লোপাট করার জন্য আগুন দেওয়া হতে পারে।
আসিফ মাহমুদ লিখেছেন, ‘স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের বিগত সময়ের অর্থ লোপাট ও দুর্নীতি নিয়ে আমরা কাজ করছিলাম। কয়েক হাজার কোটি টাকা লুটপাটের প্রমাণও পাওয়া গিয়েছিল। আগুনে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এখনো জানা যায়নি।’
সরকারকে ব্যর্থ করে দেওয়র ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতি কঠোর হুঁশিয়াও দিয়েছেন উপদেষ্টা আসিফ। লিখেছেন, ‘আমাদের ব্যর্থ করার এই ষড়যন্ত্রে যে বা যারাই জড়িত থাকবে, তাদের বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না।’
এর আগে বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে আগুন লাগে সচিবালয়ের সাত নম্বর ভবনে। ফায়ার সার্ভিসের তথ্য বলছে, রাত ১টা ৫২ মিনিটে আগুন লাগার খবর পাওয়ার পর ১টা ৫৪ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট। প্রথমে আটটি ইউনিট সেখানে কাজ করলেও পরে একে একে যুক্ত হয় মোট ১৯টি ইউনিট। প্রায় ছয় ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
এখন পর্যন্ত আগুন লাগার কারণ নিয়ে ফায়ার সার্ভিস বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি। এ ঘটনায় এরই মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিবকে প্রধান করে সাত সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সারাবাংলা/জেআর/এমপি