এজাহারভুক্ত ‘সন্ত্রাসী’ সাদপন্থিদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের আলটিমেটাম
২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:৩৭ | আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:৫৮
ঢাকা: আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মামলার এজাহারভুক্ত ‘সন্ত্রাসী খুনি’ সাদপন্থিদের গ্রেফতারের আলটিমেটাম দিয়েছে ‘অল প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি মুসলিম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন’ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
তারা বলেছে, অন্যথায় বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমাদের আস্থা বিনষ্ট হবে এবং দেশের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা হমকির মুখে পড়বে।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন আলটিমেটম দেয় শিক্ষার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মুসা মো: ওবায়ের, কাজী নাবিদ হোসেন, হাসিবুল হাসান মাহদী, কায়সার আহমেদ উমার প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে সরকারের কাছে ৪ দফা দাবি জানানো হয়। এগুলো হচ্ছে- আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মামলার এজহারভুক্ত ‘সন্ত্রাসী খুনি’ সাদপন্থিদের গ্রেফতার করা; তাবলীগের নামে ‘সন্ত্রাসী খুনি’ সাদপন্থিদের বাংলাদেশে কোনো কার্য্ক্রম পরিচালনা করতে না দেয়া এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে সন্ত্রাসী, খুনি, উগ্রবাদী সাদপন্থিদের প্রজ্ঞাপন জারি করে নিষিদ্ধ করা; গত ১৭ ডিসেম্বর রাতে সন্ত্রাসী খুনি সামপন্থিদের কর্তৃক রাতের অন্ধকারে একপক্ষীয় আক্রমণ’কে ‘উভয়পক্ষের মারামারি’ হিসেবে প্রচার না করা এবং চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সৈনিক ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত সকলের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সাদপন্থিরা তাবলীগী নয়, বরং চরম উগ্রবাদী ও সন্ত্রাসী বাহিনী। তারা বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসাবে উপস্থাপন করার হীন চেষ্টায় লিপ্ত আছে। এই সকল সহিংস কার্যকলাপ শুধু ধর্মীয় পরিবেশকেই ক্ষতিগ্রস্থ করেনি, বরং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের উপরেও গুরুতর প্রভাব ফেলেছে। এমন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি আমাদের সামাজিক ঐক্য ও ধর্মীয় সম্প্রীতির পরিপন্থি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ইসলামের বিকাশে তাবলীগ জামাতের মহৎ ও শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় কার্য্ক্রম সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশ এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে। ক্যাম্পাসে ধর্মচর্চার এই পরিপূর্ণ উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের জন্য নৈতিক ও আধ্যাত্মিক উন্নয়নের এক আদর্শক্ষেত্র হিসেবে কাজ করে আসছে। এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মিক মূল্যবোধ বৃদ্ধি এবং আস্থার একটি নির্ভরযোগ্য স্কুল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা, বেসরকারি সকল বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের বিভিন্ন অনুষদ ও বিভাগের শিক্ষার্থীবৃন্দের পক্ষে, গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, ভারতের হিন্দুত্ববাদী মোদী সরকারের মদদপুষ্ট দিল্লীর মাওলানা সাদের এদেশীয় অনুসারী তাবলীগ নামধারী সন্ত্রাসীরা সে পরিবেশ নষ্ট করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ৩১শে জানুয়ারি হতে ২রা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাবলীগ জামাত বাংলাদেশের সুরাপন্থী সাথীরা প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করবেন। ইজতেমা শেষে, দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমার জন্য ৪ঠা ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় ‘বিশ্ব ইজতেমা মাঠ প্রস্তুতি’ কমিটিকে বিশ্ব ইজতেমার মাঠ বুঝিয়ে দিবেন। ওইদিন বিকেলে ওই কমিটির নিকট হতে সাদপন্থীরা মাঠ বুঝে নেবেন এবং দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমার আয়োজন করবেন। ইজতেমা শেষে ১১ই ফেব্রুয়ারি দুপুরে পুনরায় ওই কমিটির কাছে সাদপন্থীরা মাঠ বুঝিয়ে দিবেন। অথচ গত ১৭ই ডিসেম্বর তারিখে দিবাগত রাতের অন্ধকারে টঙ্গী ইজতেমা মাঠে সাদপন্থীরা সরকারে ওই নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে অনুপ্রবেশ করেছে। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম যথা ফেইসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ, টেলিগ্রাম ইত্যাদিতে সাদপন্থীরা সরকারের উক্ত সিদ্ধান্তেরর বহির্ভূতভাবে চলতি ২০-২৪ ডিসেম্বর তাদের কর্মীদের একটি অবৈধ ও তাদের মতে ‘ভিন্ন রকম’ সমাবেশ করবে মর্মে প্রপাগান্ডা করতে থাকে। সাদপন্থীদের নেতা ওয়াসিফুল ইসলাম চিঠি দিয়ে তার অনুসারীদেরকে ‘টর্চলাইট’ ও ‘ব্যান্ড মাইক’ নিয়ে আসার জন্য আহবান জানান, যা থেকে রাতের আঁধারে পরিকল্পিত আক্রমণের সুস্পষ্ট আভাস পাওয়া যায়।
সারাবাংলা/ এএইচএইচ/আরএস
‘অল প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি মুসলিম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন’ সাদপন্থী তাবলিগ জামাত