বাম্পার ফলনের প্রত্যাশা
নওগাঁর ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে হচ্ছে সরিষা চাষ
২৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:০০ | আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৩:২০
নওগাঁ: জেলার প্রতিটি মাঠ এখন সরিষা ফুলের হলুদ রঙে বর্ণিল হয়ে আছে। মৌমাছিরা এক ফুল থেকে আরেক ফুলে ছুটছে মধু সংগ্রহে। কখনো কখনো শীতল হাওয়ায় দোল খেয়ে উঠছে হলুদ মাঠ। এরকম হলুদ-সবুজের বর্ণিল দৃশ্যই তো গ্রাম-বাংলার চিরচেনা রূপ। এমন মনোমুগ্ধকর হলুদ মাঠে ভোরের শিশির বিন্দু জমে আরও সুন্দর আবহ তৈরি করে। আর এই দৃশ্য একজন কৃষককে মুহূর্তেই আশাবাদী করে তোলে।
গত কয়েকবছর ধরেই এই অঞ্চলের কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ায় সরিষা চাষে ঝুঁকছেন। ধারাবাহিকভাবে প্রতিবছরই সরিষার বাম্পার ফলন কৃষকদের আশাবাদী করে তুলছে। এখন শুধু ভালো ফলনের আশায় তারা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
চলতি রবি মৌসুমে নওগাঁয় ৭০ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব জমি থেকে ১ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদিত বলে প্রত্যাশা করছে কৃষি বিভাগ। এদিকে, সরিষা চাষে আগ্রহী করে তুলতে জেলার ৫৭ হাজার প্রান্তিক কৃষককে সরকারি প্রণোদনার আওতায় বিনামূল্যে বীজ ও সার সরবরাহ করেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘প্রণোদনার আওতাভুক্ত জেলার প্রত্যেক প্রান্তিক সরিষা চাষীকে সরকারি প্রণোদনা হিসেবে এক বিঘা জমির বিপরীতে বিনামূল্যে এককেজি বীজ, ১০ কেজি এমওপি সার এবং ১০ কেজি করে ডিএপি দেওয়া হয়েছে।’
কৃষি বিভাগ বলছে, প্রণোদনাপ্রাপ্ত প্রত্যেক কৃষককে ১১৫ টাকা মূল্যের এককেজি বীজ, ১৯০ টাকা মূল্যের ১০ কেজি এমওপি সার এবং ২১০ টাকা মূল্যের ১০ কেজি ডিএপি সার বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক কৃষকের অনুকূলে সরবরাহ করা বীজ ও সারের আর্থিক মূল্য ৫২৫ টাকা। সেই হিসেবে প্রণোদনা প্রাপ্ত জেলার ৫৭ হাজার কৃষকের অনুকূলে দেওয়া বীজ ও সারের মোট আর্থিক মূল্য ২ কোটি ৯৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
কৃষি বিভাগের তথ্যে দেখা যায়, নওগাঁ সদর উপজেলায় ৪৩৮০ হেক্টর, রানীনগর উপজেলায় ৭২৪০ হেক্টর, আত্রাই উপজেলায় ৬৭৬৫ হেক্টর, বদলগাছি উপজেলায় ৩৩৯০ হেক্টর, মহাদেবপুর উপজেলায় ৪২৫০ হেক্টর, পত্নীতলা উপজেলায় ৬৯২০ হেক্টর, ধামইরহাট উপজেলায় ৫৫৫০ হেক্টর, সাপাহার উপজেলায় ৬৭১০ হেক্টর, পোরশা উপজেলায় ৮২৩০ হেক্টর, মান্দা উপজেলায় ৮২১৫ হেক্টর এবং নিয়ামতপুর উপজেলায় ৮৪৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে।
কৃষকরা বলছেন, চলতি রবি মৌসুমে কোনো প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা দেয়নি। এ ছাড়া সরিষা চাষের অনুকূল পরিবেশ ছিল। সেজন্য আমরা বাম্পার ফলন আশা করছি। আর ফলন ভালো হলে আগামী মৌসুমে সরিষা চাষের জমি বাড়িয়ে দেবো।
এদিকে কৃষি বিভাগ বলছে, সরিষাসহ শীতকালীন সবজি চাষে কৃষকরা যাতে লাভবান হন এবং কোনো প্রকার সমস্যায় না পড়েন সেজন্য সার্বক্ষণিক নজর রাখা হচ্ছে। যেখানেই সমস্যা দেখা দিচ্ছে সেখানে গিয়ে সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
সারাবাংলা/পিটিএম