ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নতুন সেবা নিয়ে এল লায়ন্স
২৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৬:৩০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে ডায়াবেটিস রোগীদের চোখের সমস্যা নির্ণয়ে ‘ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম’ শুরু করেছে লায়ন্স চক্ষু হাসপাতাল।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে নগরীর নাসিরাবাদের জাকির হোসেন রোডের হাসপাতাল মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে হাসপাতালের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রাম লায়ন্স ফাউন্ডেশন যে হাসপাতালটি পরিচালনা করছে আমরা এখানে দিনদিন এটার উন্নতির জন্য কাজ করছি। চোখে ছানি পড়লে সামনের অংশটি দেখা যায়। এর পেছনের অংশ তো দেখা যায় না। যেটা আমাদের বড় বিপদ ডেকে আনে সেটার জন্য আমরা রেটিনোপ্যাথি ক্লিনিক নিয়ে চিন্তা করছি। রেটিনার একবার ক্ষতি হলে রক্তক্ষরণ শুরু হয়।’
‘আমরা ইনজেকশন দিয়ে যেটা কাভার করার চেষ্টা করি, সেটা দিয়ে চোখের অগ্রগতি হয় না। এর কারণে চোখটা বড় ধরণের ক্ষতি থেকে রক্ষা পায়। চোখটা আর উপড়ে ফেলতে হবে না। কিন্তু ওই ক্ষতি তো রয়ে যাবে। সে জায়গায় যদি মানুষ সচেতন না হয়, বড় ধরণের অন্ধত্ব আমাদের পেয়ে বসবে। সে জায়গা থেকে ডা. মাহি মুকিত এগিয়ে এসেছেন।’
হাসপাতালের একাডেমিক পরিচালক প্রকাশ কুমার চৌধুরী বলেন, ‘ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যেটা শরীরের প্রত্যেক অঙ্গকে আক্রমণ করে। সবচেয়ে বেশি ইফেক্ট হয় চোখ। চোখের মধ্যে আবার আমাদের বিভিন্ন অংশ আছে। আমাদের দুটি চোখ আছে, যেখানে আবার লেন্স থাকে। ডায়াবেটিস হলে সেগুলো অস্বচ্ছ ও ঘোলা হয়ে যায়, যেটাকে আমরা ছানি বলি। এটা নিয়ে আমরা তেমন চিন্তিত না। আমরা যদি নতুন লেন্স সেখানে প্রতিস্থাপন করি তাহলে আমরা আবার পুরোনো দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাব।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের চোখের পেছনে একটি পর্দা থাকে, যেটাকে বলি আমরা রেটিনা। রেটিনাতে লাখ লাখ রক্তনালী থাকে। যাদের ডায়াবেটিস ১০ বছর বা ৫ বছর তাদের এসব রক্তনালী দুর্বল হয়ে গেছে। রক্তগুলো জমাট বেঁধে চোখের প্রেশার বাড়িয়ে দেয়। তখন চোখের তীব্র ব্যাথা দেখা দেয়। ব্যাথা কমিয়ে ফেলার জন্য চোখটা পর্যন্ত কেটে ফেলে দিতে হয়।’
ডা. প্রকাশ বলেন, ‘এ রোগ প্রতিরোধে আমরা ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম শুরু করতে যাচ্ছি। আমরা যে সবকিছু করতে পারব টা না। আমরা মানুষকে সচেতন করতে চাই। আমরা এ প্রোগ্রামের একটি অংশ হতে চাই, যাতে ভবিষ্যতে আমরা আরও ভালো কিছু করতে পারি। আমরা যদি রোগীদের সঠিক চিকিৎসা দিতে পারি, তাহলে তাদের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিতে পারব। এটাই আমাদের টার্গেট।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এ উদ্যোগে যুক্ত হয়েছেন বিশ্বখ্যাত চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. মাহি মুকিত, যিনি যুক্তরাজ্যের মোরফিল্ডস আই হাসপাতালের কনসালট্যান্ট ভিট্রিওরেটিনাল সার্জন হিসেবে কাজ করছেন। তিনি ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি নিয়ে বহু গবেষণা করেছেন এবং এ রোগ নির্ণয়ের জন্য ডিজিটাল স্ক্রিনিং ইনস্ট্রুমেন্ট উদ্ভাবন করেছেন। তার এই অসামান্য কাজ ও অভিজ্ঞতা আমাদের এ প্রোগ্রামকে আরও সমৃদ্ধ করবে।’
এসময় যুক্তরাজ্যের মোরফিল্ডস আই হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. মাহি মুকিত, দেবাশীষ দত্ত, আশরাফুল আলম ও মো. মহিউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/আইসি/এমপি