Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এ বছর সড়কে ৬১৪ শ্লীলতাহানি, ধর্ষণ ১৯

স্পেশাল করেসপডেন্ট
৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:০১ | আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৬:৫৭

উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সভাপতি মোমিন মেহেদী, মহাসচিব সান্তা ফারজানা ও ভাইস চেয়ারম্যান সোনিয়া দেওয়ান প্রীতি প্রমুখ

ঢাকা: চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সড়কপথে নারী শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে ৬১৪টি, ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ১৯টি। যার অধিকাংশই থানা-পুলিশের স্মরণাপন্ন হয়নি বলে সেভ দ্য রোড সংগঠনটির তথ্যে ওঠে এসেছে।

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) ক্রাইম রিপোটার্স এ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন সেভ দ্য রোড সংগঠনের নেতারা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সভাপতি মোমিন মেহেদী, মহাসচিব সান্তা ফারজানা ও ভাইস চেয়ারম্যান সোনিয়া দেওয়ান প্রীতি প্রমুখ।

বিজ্ঞাপন

তারা জানান, চলতি বছরে সড়কপথে চরম নৈরাজ্য-বিশৃঙ্খলা আর আইন না মেনে বাহন চলাচলের কারণে ছোট-বড় ৩৮ হাজার ৫৪০ দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৬ হাজার ৪৪৪ জন এবং আহত ৩৭ হাজার ১১৩।

সেভ দ্য রোড-এর পক্ষ থেকে সরকারি সহায়তার মাধ্যমে সমাজ সচেতনতা, গবেষণা ও স্বেচ্ছাসেবী কর্মকাণ্ডের গতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদেরহস্তক্ষেপ কামনা করেছে। বিশেষ করে পদ্মা সেতুর মত দেশের অন্যান্য সেতু বা সড়কে বাইক লেন না থাকা বিষয়টির দিকে নজর দিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সেভ দ্য রোড়ের দাবি অনুযায়ী প্রতি তিন কিলোমিটারে পুলিশ বুথ বা ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন না করা ও হাইওয়ে পুলিশসহ জেলা-উপজেলা পর্যায়ের পুলিশ-প্রশাসনের দায়িত্বে অবহেলার কারণে সড়কপথে চলতি বছরে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে ৯৬টি। ডাকাতদের হামলায় আহত হয়েছেন ১৫৫ জন এবং নিহত হয়েছেন ১ জন।

এ ছাড়া নৌপথে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশের দায়িত্ব অবহেলার সুযোগে অন্যান্য বছরের তুলনায় ডাকাতি বেড়েছে। ১৬১টি ডাকাতির ঘটনায় সর্বশেষ সাত জনসহ ১১ জন নিহত হয়েছেন। চলতি বছরে নৌ পথে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৭ হাজার ১১টি। আহত ১ হাজার ৪৫১ জন, নিহত হয়েছেন ১১২ জন।

বিজ্ঞাপন

রেলপথে মহাখালীতে দুষ্কৃতিকারীদের ছোড়া ইট-পাটকেলে ৩১ জনসহ মোট ৫৩ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া রেলপথে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে এক হাজার ৮০৬টি। আহত হয়েছেন এক হাজার ১৭৬ জন, নিহত হয়েছে ১২৪ জন।

এ সময়ের মধ্যে আকাশপথে ৯ মে সকালে ৩২ বছর বয়সী যুদ্ধবিমানের পাইলট বিমানবাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ দুর্ঘটনায় শাহাদাত বরণ করেন। এই ঘটনা ব্যতিত আর কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলেও বিমানবন্দরের অব্যবস্থাপনার কারণে অসুস্থ্য হয়েছেন এক হাজার ৭৬৬ জন মানুষ।

আকাশ-সড়ক-রেল ও নৌ পথ দুর্ঘটনামুক্ত করার লক্ষ্যে গত ১৭ বছর ধরে রাজপথে থাকা স্বেচ্ছাসেবি-গবেষণা ও সচেতনতামূলক সংগঠন সেভ দ্য রোড মনে করেন, সড়কপথ, নৌ পথ ও রেলপথের দুর্ঘটনামুক্ত চলাচলের অধিকার রক্ষায় মালিক-শ্রমিক-প্রশাসনিক এবং সাধারণ জনগণের সমন্বয়ের কোনো বিকল্প নেই।

পাশাপাশি সংগঠনটি ৭ দফা দাবি নিয়ে কাজ করছেন। তাদের দফা গুলো হলো—

  • মিরেরসরাই ট্রাজেডিতে নিহতদের স্মরণে ১১ জুলাইকে ‘দুর্ঘটনামুক্ত পথ দিবস’ ঘোষণা করতে হবে।
  • ফুটপাত দখলমুক্ত করে যাত্রীদের চলাচলের সুবিধা দিতে হবে।
  • সড়ক পথে ধর্ষণ-হয়রানি রোধে ফিটনেসবিহীন বাহন নিষিদ্ধ এবং কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ ও জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যতিত চালক-সহযোগি নিয়োগ ও হেলপাররা পরিবহণ চালানো বন্ধে সংশ্লিষ্ট সকলকে কঠোর প্রদক্ষেপ নিতে হবে।
  • স্থল-নৌ-রেল ও আকাশ পথ দুর্ঘটনায় নিহতদের কমপক্ষে ১০ লাখ ও আহতদের ৩ লাখ টাকা ক্ষতি পূরণ সরকারীভাবে দিতে হবে।
  • ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স কল বাস্তবায়নের পাশাপাশি সত্যিকারের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ট্রান্সপোর্ট পুলিশ ব্যাটালিয়ন বাস্তবায়ন করতে হবে।
  • পথ দুর্ঘটনার তদন্ত ও সাজা ত্বরান্বিত করণের মধ্য দিয়ে সতর্কতা তৈরি করতে হবে এবং ট্রান্সপোর্ট পুলিশ ব্যাটালিয়ন গঠনের পূর্ব পর্যন্ত হাইওয়ে পুলিশ, নৌ পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতা-সহমর্মিতা-সচেতনতার পাশাপাশি সকল পথের চালক-শ্রমিক ও যাত্রীদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। সকল পরিবহণ চালকের লাইসেন্স থাকতে হবে।
  • ইউলুপ বৃদ্ধি, পথ-সেতুসহ সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যাতে ভাঙা পথ, ভাঙা সেতু আর ভাঙা কালভার্টের কারণে আর কোনো প্রাণ দিতে না হয়।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/এইচআই

সেভ দ্য রোড

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর