নির্বাচনকে দীর্ঘায়িত করার ষড়যন্ত্র চলবে না: আমীর খসরু
৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:০৮ | আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৩:২০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশের মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে। নির্বাচনকে দীর্ঘায়িত করার ষড়যন্ত্র চলবে না।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরীর মাঝিরঘাট এলাকায় এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে সদরঘাট থানা বিএনপি এ সমাবেশের আয়োজন করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশে আর কোনো স্বৈরাচার থাকতে পারবে না। দেশে এখন গণতন্ত্রের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। দেশে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। এগুলো ঠেকিয়ে আবার বহুরুপে, ভিন্নরুপে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় থাকার পায়তাঁরা করলে সেটা চলবে না।’
নির্বাচন দীর্ঘায়িত করার ষড়যন্ত্র চলছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আগে থেকে বলে দিচ্ছি, বড় বড় স্বৈরাচারকে দেশের মানুষ বিতাড়িত করেছে। ওই প্রক্রিয়ায়, ভিন্নরুপে বহুরুপের ভাব দিয়ে আর কোনো স্বৈরাচারকে থাকতে দেবো না। নির্বাচন দিতে হবে, দেশের মানুষ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে। নির্বাচনকে দীর্ঘায়িত করে ষড়যন্ত্র চলবে না। দেশের মানুষ বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম গত ১৫-২০ বছর ভোট দিতে পারে নাই। মহিলারা ভোট দিতে পারে নাই। সবাই ভোট দেওয়ার অপেক্ষায় আছে।’
‘এখানে মাঝখানে কেউ এসে খেলাধুলা করবেন, ভোট পিছিয়ে দিবেন, বিলম্বিত করবেন, অন্য ষড়যন্ত্র করে ওই শেখ হাসিনা একভাবে স্বৈরাচার, আপনারা অন্যভাবে এসব করে লাভ হবে না। তাই আগে থেকে জনগণের দেওয়ালের লিখন পড়তে শিখুন। শেখ হাসিনা জনগণের দেওয়ালের লিখন পড়তে পারেনি। কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র করে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে অন্য কোনো প্রক্রিয়ায় কেউ ক্ষমতায় অব্যাহতভাবে থাকার চেষ্টা করলে দেশের জনগণ সেটা মেনে নেবে না।’
আমীর খসরু আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন হয়েছে গণতন্ত্রের জন্য। এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছে গণতন্ত্রের জন্য। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছে গণতন্ত্রের জন্য। সেই গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, মানবাধিকার অপেক্ষায় আছে। জীবনের নিরাপত্তা দেশের মানুষ চায়। কিছু মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে দেশ কোন পথে যাবে, সেটা কি জনগণ গ্রহণ করবে? যত সংস্কার প্রয়োজন, তত সংস্কার দেশের সংসদে হবে ইনশাআল্লাহ। বিএনপি এবং সহযোগীদের দেয়া সব সংস্কার ৩১ দফার মধ্যে আছে। এর বাইরেও যদি সংস্কার থাকে, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সংসদে সংস্কার করবো।’
সংস্কারের দোহাই না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া, প্রতিনিয়ত সংস্কার হবে। দেশে এমন কোনো বুদ্ধিমান মানুষ হয়নি, উনারা বসে সংস্কার করবেন। আর বাংলাদেশ প্রত্যেক বছর এ ধারায় চলবে। সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া, প্রতিনিয়ত সংস্কার হতে হবে। সংস্কারের দোহাই দেবেন না। শুধু নির্বাচনের সংস্কার করেন। নির্বাচনী সংস্কার করে নির্বাচন দিয়ে জনগণের কাছে জনগণের মালিকানা ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিন। জনগণের ম্যান্ডেট নিতে হবে নির্বাচনের মাধ্যমে। অন্য কোনো প্রক্রিয়ায় হবে না।’
খসরু বলেন, ‘আমরা বড় স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে তাড়িয়েছি। বাংলাদেশকে আমরা আর কোনোদিন কাউকে দখল করতে দিব না। বাংলাদেশে আর কোনো স্বৈরাচারকে ক্ষমতা দখল করে থাকতে দেবো না। স্বৈরাচার বহুরুপের আছে। স্বৈরাচারের রুপ কিন্তু অনেক রকম। অনেকে জনগণের ভোট নিয়ে স্বৈরাচার হয়ে যায়। অনেকে দেশের মানুষের কথা বলে স্বৈরাচার হয়ে যায়। অনেকে আন্দোলনকে হাইজেক করে স্বৈরাচার হয়ে যায়।’
শ্রমিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘শ্রমিকদের অনেক সমস্যা আছে। আগামী দিনে বিএনপি ক্ষমতায় এলে আপনাদের সঙ্গে আমরা বসবো এবং কথা বলে সেসব সমস্যা সমাধান করবো। বিএনপির ৩১ দফার সংস্কার প্রস্তাবে আপনাদের সমস্যার কথা বলা হয়েছে। সমাধানের কথাও বলা হয়েছে। আন্দোলন করে স্বৈরাচারকে যেভাবে বিতাড়িত করা হয়েছে, সেভাবে সবসময়েআপনাদের চোখ কান খোলা রাখতে হবে।’
সদরঘাট থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. সালাউদ্দিনের সভাপতিত্বে ও থানা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম সম্রাটের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে নগর কমিটির সাবেক সভাপতি ও সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, নগর কমিটির আহবায়ক এরশাদ উল্লাহ ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান বক্তব্য রাখেন।
সারাবাংলা/আরডি/এসআর