Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাহাত্তরের সংবিধান বাতিল নয়, সংশোধনের পক্ষে গণঅধিকার পরিষদ

স্পেশাল করেসপডেন্ট
৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:০৭ | আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:৪০

দলীয় কার্যালয় আল রাজি কমপ্লেক্সে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: বাহাত্তরের সংবিধান বাতিল নয়, বরং সবার সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সংশোধনের পক্ষে মত দিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ।

দলটির সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, এই জাতি একবারই স্বাধীন হয়েছে। তাই একাত্তরের সঙ্গে চব্বিশের তুলনা চলে না। আর বাহাত্তরের সংবিধানও বাতিলের কোনো প্রয়োজন নেই। বিভিন্ন সময় সংবিধান ১৭ বার সংশোধন করা হয়েছে। সবার সঙ্গে আলোচনা করে আবার সংশোধন করা যায়।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দলীয় কার্যালয় আল রাজি কমপ্লেক্সে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় কোটা সংস্কার আন্দোলন ও জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনে আহত সবাইকে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে নুরুল হক নুর বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা একটি ঘোষণাপত্রের উদ্যোগ নিয়েছিল। প্রধান উপদেষ্টা সেটিকে সার্বজনীন করার উদ্যোগ নিয়ে জাতিকে বিভাজন থেকে রক্ষা করেছেন। আগামীর নতুন বাংলাদেশ গঠনে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই। এই পরিস্থিতিতে যেকোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত দেশকে পিছনে নিয়ে যাবে। দেশ ও জাতিকে রক্ষায় ঐক্য ও সংহতির ভিত্তিতেই দেশ চালাতে হবে।’

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, ‘২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে আমরা রাজপথে ছিলাম। একসঙ্গে পথচলতে গিয়ে আমাদের মতপার্থক্য হয়েছে, সেই মতপার্থক্যের অবসান ঘটতে শুরু হয়েছে। জনগণের কাঙ্ক্ষিত নতুন বাংলাদেশ গঠনে সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে আমরা অতীতের ন্যায় একীভূত হয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি যে, তিনি জাতিকে আরেকটি বিভাজনের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র সব দল, সংগঠন ও অংশীজনদের নিয়ে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে করতে হবে। কারণ এই গণঅভ্যুত্থানের মালিক এই দেশের ১৮ কোটি জনগণ। জনগণকে বাদ দিয়ে এই দেশে আর কোনো রাজনীতি হবে না।’

বিজ্ঞাপন

৪৩ তম বিসিএস নিয়ে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন বলেন, ‘৪৩ তম বিসিএস বাদ পড়াদের গেজেট ভুক্ত করতে হবে। শেখ হাসিনার সময়ে রাজনৈতিক পরিচয়ে বিএনপি-জামাত করার কারণে অনেকের গেজেট আটকানো হতো। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলেও একইাভাবে আটকানো হচ্ছে। যা খুবই দুঃখজনক। সরকারি চাকরিতে পুলিশ ভেরিফিকেশন পুরোপুরি বাদ দেওয়া দরকার। আমরা দাবি জানাচ্ছি নির্দিষ্ট অভিযোগ ব্যতিত কারও গেজেট যেনো না আটকানো হয়। ৪৩তম বিসিএস থেকে বাদ পড়া ১৬৮ জনকে গেজেটভুক্ত না করা হলে বাদ পড়া শিক্ষার্থীদের পক্ষে যদি রাজপথে নামতে হয় সেটিও আমরা করব। বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনই ছিল কোটা আন্দোলনের মূল স্পিরিট। সেখানে কোনো অন্যায় বৈষম্য মেনে নেওয়া হবে না।’

২০১৮ সালের কোটা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ফারুক হাসান বলেন, ‘গণঅধিকার পরিষদ তরুণদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠেছে। মাঝখানে কিছু মতপার্থক্যের কারণে গণঅধিকার পরিষদ আলাদাভাবে পথ চলতে শুরু করে। কিন্তু ২০২৪ সালের বিপ্লবে গণঅধিকার পরিষদের উভয়ে রাজপথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তাই দেশ ও জাতির প্রয়োজনে গণঅধিকার পরিষদের উভয় নেতারা ঐকবদ্ধ হওয়ার তাগিদ অনুভব করার জায়গা থেকে আজকে থেকে গণঅধিকার পরিষদ একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে গণঅধিকার পরিষদ আজকে থেকে একটিই যার ভিত্তি কোটা আন্দোলন।

বৃহত্তর স্বার্থে সকল ব্যবধান ভুলে গণঅধিকার পরিষদকে এক করা হয়েছে। দু একজন এর বাইরে থাকতে পারে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এরা সবাই যুক্ত হবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এএইচএইচ/এইচআই

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর