Saturday 04 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘আন্দোলনের মালিকানা ছিনতাই করার চেষ্টা করবেন না’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৪২ | আপডেট: ১ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:২০

ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত সমাবেশ। ছবি: সারাবাংলা

চট্টগ্রাম ব্যুরো: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মালিকানা ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

বুধবার (১ জানুয়ারি) বিকেলে নগরীর দুই নম্বর গেইটের বিপ্লব উদ্যানের পাশে ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন। চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদল এ সমাবেশের আয়োজন করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু বলেন, ‘আন্দোলনের নামে আজ আমরা নতুন নতুন বয়ান শুনছি। আন্দোলন ছিনতাই করে নিয়ে যেতে চাচ্ছে। আন্দোলন কি হাইজ্যাক করার মতো বিষয়? আন্দোলন কি এমন জিনিস যে হাইজ্যাক করে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবেন? বয়ান দেওয়ার আগে একটু চিন্তা করে দেখবেন। আমরা এ আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাই না। এ আন্দোলন বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের।’

আমীর খসরু বলেন, ‘তারেক রহমান সাহেব বলেছেন, বিএনপি একা আন্দোলন করেননি। দেশের সমস্ত মানুষ আন্দোলন করে আমরা এ ফ্যাসিস্টকে বিতাড়িত করেছি। আন্দোলনের মালিকানা কেউ নেওয়ার চেষ্টা করবেন না। মালিকানার হিসেব যদি করতে হয়, আমরা যে হিসেব দেব আপনারা লজ্জা পাবেন। হিসেব কিন্তু দিচ্ছি না। আমরা চাই না আন্দোলনকে নিয়ে দেশে একটি বিভক্তি সৃষ্টি হোক। আমরা চাই আন্দোলনকে নিয়ে দেশে ঐক্য সৃষ্টি হোক।’

তিনি বলেন, ‘আমরা চাই আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ চিরজীবনের জন্য যে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্টকে বিতাড়িত করেছে তাদের প্রেতাত্মারা আর ফিরে আসতে না পারে। আন্দোলনের ঐক্যের মাধ্যমে বাংলাদেশে আগামী দিনে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চাই। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই। জনগণের ভোটের সংসদ ও সরকার চাই। যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে, জবাবদিহি করবে।’

বিজ্ঞাপন

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘মানুষ আন্দোলন করেছে তার ভোটাধিকার, সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক অধিকার এবং মানবাধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য। আজ প্রত্যেকটি মানুষের প্রত্যাশা একটি নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের মালিকানা ফিরে পাওয়া। এ মালিকানা হচ্ছে ভোটের মাধ্যমে সে যাকে ইচ্ছে তাকে নির্বাচিত করবে।’

তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে কেউ খেলাধুলা করলে শেখ হাসিনার পথে যেতে হবে কিন্তু। আপনারা ভোট না নিয়ে নতুন নতুন বয়ান সৃষ্টি করে ক্ষমতার থাকার চেষ্টা, এখানে কাজ করবে না। ভোটে যেতে হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচনে দিতে হবে। এখানে অন্য কোনো কিছু করার নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে এটা স্থানান্তর করে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা নির্বাচিত সংসদের হাতে তুলে দেওয়া। এর বাইরে আর কোনো দায়িত্ব নেই। আর বাকি যে সংস্কারের গল্প শুনছেন সেটা হবে আগামী সংসদে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা আগামী দিনে যত সংস্কার প্রয়োজন সেটা করবে। বিএনপি ও আমাদের সঙ্গে যারা সঙ্গী ছিলেন এ আন্দোলনে ৩১ দফার সংস্কার সেটা আমরা বাস্তবায়ন করব। এ দায়িত্ব কারও হাতে নেই। এ দায়িত্ব নিতে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না। কারণ এ দায়িত্ব আপনাদেরকে কেউ দেয়নি।’

‘আপনাদের কাজ হচ্ছে নির্বাচনি সংস্কার করে, ভোট দিয়ে জনগণের মালিকানা তাদের তাদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া। জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে কোন সংস্কার হবে, কোনটা হবে না। সেটা জনগণের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে হবে। এর বাইরে কোনো সুযোগ নেই।’— যোগ করেন আমীর খসরু।

বিজ্ঞাপন

নগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাইফুল আলমের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব শরীফুল ইসলাম তুহিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, নগর আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান।

‘ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দলীয়করণের বিপক্ষে বিএনপি’

ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিএনপি দলীয়করণ করার বিপক্ষে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

বুধবার দুপুরে নগরীর মেহেদীবাগের বাসভবনে চট্টগ্রাম বঞ্চিত ব্যবসায়ী ফোরামের উদ্যোগে সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা জানান।

আমীর খসরু বলেন, ‘ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমরা দলীয়করণ করার বিপক্ষে। তারেক রহমানের নির্দেশ, আমরা কোনো ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করতে চাই না। বাংলাদেশটা ধ্বংস হয়ে গেছে দলীয়করণের কারণে। প্রত্যেকটি জায়গায় দলীয়করণ করতে করতে দেশ আজ এ জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে।

ব্যবসায়ীদের হয়ে কে নেতৃত্ব দেবে তা নিজেদের মধ্যে ঠিক করতে হবে জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, ‘যখন আমি মন্ত্রী ছিলাম তখন কে কোথাকার, কোন চেম্বারের, কোন অ্যাসোসিয়েশনে কে হবে, সেসব মাথা ঘামায়নি। কারণ, এটা একেবারে উচিত না। আপনাদের নেতা আপনাদের নির্ধারণ করতে হবে। কে নেতৃত্ব দেবে সেটার সিদ্ধান্ত আপনাদের। সেখানে আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত নেই। আমরা চাইও না।’

বঞ্চিত ব্যাবসায়ী ফোরামের আহ্বয়ক এস এম সাইফুল আলমের সভাপতিত্বে ও ফোরামের পরিচালক রোকন উদ্দিন মাহমুদের সঞ্চালনায় এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক, নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান ও ফোরামের সদস্য সচিব শহিদুল ইসলাম চৌধুরী।

সারাবাংলা/আইসি/এইচআই

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রাম ছাত্রদল বিএনপি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর