Saturday 04 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফিরে দেখা ২০২৪
নতুন বাংলাদেশের অভিযাত্রায় ঢাবি ছিল নেতৃত্বে

আরফাতুল ইসলাম নাইম, ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
১ জানুয়ারি ২০২৫ ২২:১৯

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সালতামামি। ছবি কোলাজ: সারাবাংলা

ঢাকা: বাংলাদেশের ইতিহাসে যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ও ঘটনাবহুল বছর রয়েছে তার মধ্যে ২০২৪ একটি। জানুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন থেকে শুরু করে বিএনপির সরকার পতনের ডাক, কোটা আন্দোলন, কোটা আন্দোলন থেকে গণঅভ্যুত্থান, শেখ হাসিনার পতন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠন, আগস্ট বন্যা থেকে শুরু করে নানা ঘটনার সাক্ষী এ বছর। এসব ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও এর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করেছে। বলতে গেলে নতুন বাংলাদেশের অভিযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই ছিল নেতৃত্বে। সারাবছর ধরে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো নিয়ে সারাবাংলার এবারের আয়োজন ‘ফিরে দেখা ২০২৪’।

বিজ্ঞাপন

জাতীয় নির্বাচন: ঢাবিতে ছাত্রলীগের মোড়ে মোড়ে অবস্থান

গত ১৫ বছর ধরে ঢাবিতে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল ছাত্রলীগের। তাদের কারণে কোনো ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠন মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। এমনকি আধিপত্য টিকিয়ে রাখতে ২০২৪ সালের নির্বাচনকে ঘিরে ঢাবির মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়েছিল ছাত্রলীগ। গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে ঢাবির প্রতিটি নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র ছিল খালি। গণমাধ্যমে উঠে এসেছে, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে ঢাবিতে প্রতিটি ভোট কেন্দ্র ছিল ফাঁকা। তারপরও সেখানে অনেক ভোট পড়ে। যেখানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ভোট দেওয়ার সত্যতা পাওয়া গেছে।

সালাম দেওয়া নিয়ে মারামারি, ছাত্রলীগের ৪ সদস্য বহিষ্কার

ছাত্রলীগের এক অনুষ্ঠানে নেতাকে সালাম না দেওয়ার ঘটনায় ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত ও কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে দুই গ্রুপের অন্তত চার সদস্যকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

দোকানিকে মারধর করে বহিষ্কার ছাত্রলীগ নেতা

চায়ের দোকানে বাকি টাকা চাওয়ায় দোকানিকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল ঢাবি সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। পরে, বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে ওই নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠন

গত ১৫ বছর ধরে ছাত্রলীগের নির্যাতন ও নিপীড়নের মুখে হারাতে বসেছিল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। গত বছরের ৭ মার্চ নতুন কমিটির মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করে ছাত্রসংগঠনটি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মতো অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আওয়ামী লীগের পতন ঘটিয়েছে ছাত্রদল।

বিজ্ঞাপন

বিশ্ববিদ্যালয় ছাড় দিলেও ছাড় নেই ছাত্রলীগ থেকে

হিট ওয়েবের সময় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের যখন ক্লাসে অংশ নেওয়া প্রায় অসম্ভব তখন ছুটি ঘোষণা করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু প্রশাসন ছুটি দিলেও ছুটি মিলেনি ছাত্রলীগের কাছ থেকে। গেস্টরুম ও তাদের নানা প্রোগ্রাম অংশ নিতে গিয়ে ঢাবির বিভিন্ন আবাসিক হলে পাঁচ শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে পড়ে।

ঢাবি প্রক্টরিয়াল টিমের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় চাঁদা নিয়ে ভাসমান দোকান বসতে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল ঢাবির প্রক্টরিয়াল বিরুদ্ধে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় ভরপুর থাকত বহিরাগত ও ভাসমান দোকান দিয়ে। ফলে, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

ঢাবির জমিদাতার খোঁজে কমিটি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১০৩ বছর পরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানে না জমিদাতাকে। কারও দাবি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ জমি নবাব স্যার সলিমুল্লাহর দান। কিন্তু আওয়ামী লীগের আমলে এ দাবিকে খারিজ করে দিয়েছিল প্রশাসন। পরবর্তী সময়ে জমিদাতার খোঁজে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছিল। যা এখন পর্যন্ত সুরাহা হয়নি।

কোটা আন্দোলন ও প্রত্যয় স্কিম নিয়ে স্থবির ঢাবি

গত ১ জুলাই ঢাবি শিক্ষকদের প্রত্যয় স্কিম চালু ও সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা বহালের মধ্য দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে এক বৈষম্য সৃষ্টি করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। যার পরিপ্রেক্ষিতে ১ জুলাই থেকে ঢাবিতে পাঠদান ও শিক্ষা কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে আসে। পরে আন্দোলন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে পাঠদান কার্যক্রম একদম বন্ধ হয়ে যায়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়।

ঢাবির হলগুলো থেকে বিতাড়িত ছাত্রলীগ

গত ১৭ জুলাই ঢাবির আবাসিক হলগুলো থেকে ছাত্রলীগকে বিতাড়িত করেছিল সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এর পর ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে আর ক্যাম্পাসে ফিরতে পারেনি ছাত্রলীগ।

প্রশাসনিক ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ১০ আগস্ট পদত্যাগ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। এ ছাড়া পদত্যাগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই উপ-উপাচার্যও। ২৭ আগস্ট নতুন উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এস এম নিয়াজ আহমেদ খান। উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) হিসেবে দায়িত্ব পান অধ্যাপক ড. সাইমা হক বিদিশা ও উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ। আর কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

এ ছাড়া ৮ আগস্ট পদত্যাগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো প্রক্টরিয়াল বডি। নতুন প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদ। পরিবর্তন এসেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি আবাসিক হলের প্রভোস্ট ও অনুষদের ডিন পদেও।

প্রশাসনের হাতে ফিরেছে হলের সিট বণ্টনের ক্ষমতা, বন্ধ হয়েছে ‘গেস্টরুম সংস্কৃতি’

আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলেদের ১২টি হলে সিট বণ্টন করতো ছাত্রলীগ। কোন ছাত্র কোন কক্ষে থাকবেন, কে হলে উঠতে পারবেন, আর কে পারবেন না- এসব নিয়ন্ত্রণ করতো ছাত্রলীগ। এসব ক্ষেত্রে হল প্রশাসনের কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। তবে ৫ আগস্টের পর হলগুলো পুরোপুরি প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এরই মধ্যে হলগুলোতে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের প্রশাসন কর্তৃক সিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের প্রায় ১৩০টি কক্ষ ‘গণরুম’ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। গণরুমে থাকার বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের একটা সময় পর্যন্ত নিয়মিত ছাত্রলীগের মিছিল-সমাবেশে অংশ নিতে হত। আবার সপ্তাহে কমপক্ষে চারদিন হাজিরা দিতে হত ‘গেস্টরুমে’। কোনোদিন ছাত্রলীগের কর্মসূচি গুলোতে অংশ না নিলে জবাবদিহি করতে হতো গেস্টরুমে। তবে ৫ আগস্টের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্টরুম সংস্কৃতি ও গণরুমগুলো বিলুপ্ত হয়েছে। গণরুমগুলো এখন সাধারণ কক্ষ হিসেবেই ব্যবহৃত হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বয়কটের’ শিকার ৭৯ শিক্ষক

ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া, আন্দোলনে যেতে বাধা ও হুমকি প্রদান, আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের অংশ নেওয়াসহ নানা অভিযোগে এ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩টি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের ৭৯ জন শিক্ষককে ‘বয়কট’ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এসব শিক্ষক ক্লাসে থাকলে সেখানে উপস্থিত না থাকার ঘোষণাও দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বয়কটের শিকার শিক্ষকের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।

শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিভিন্ন সেমিস্টারের ক্লাস, পরীক্ষাসহ নানা অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে অভিযোগ তদন্তের জন্য ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের আত্মপ্রকাশ

আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে হামলা-মামলা ও নির্যাতনের কারণে ‘সাংগঠনিক পরিচয় গোপন রেখে’ কার্যক্রম চালাত শিবিরের নেতাকর্মীরা। ফলে তাদের পরিচয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোর কাছে ছিল অজানা। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দুই মাস পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আত্মপ্রকাশ করে ছাত্রশিবির। গত ২ অক্টোবর সংগঠনটির ফেসবুক পেজে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের ১৪ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি আত্মপ্রকাশ করে। পরবর্তী সময়ে দেশের আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কমিটির পরিচয় জনসন্মুখে প্রকাশ করে সংগঠনটি।

সাড়ে তিন মাস পর শুরু হয় শিক্ষা কার্যক্রম

প্রায় সাড়ে তিন মাস পর গত ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। এর আগে চলতি বছরের ২ জুন থেকে গ্রীষ্মকালীন ছুটি ও ঈদুল আজহার ছুটি, ১ জুলাই শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর পেনশনসংক্রান্ত আন্দোলন ও শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন ও সরকার পতনের আন্দোলনের প্রভাবে তখন চালু হয়নি শিক্ষা কার্যক্রম।

সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলে চলছে আন্দোলন

রাজধানীর সাত সরকারি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করেন তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী। অধিভুক্তির পর থেকে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের। আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের পর অক্টোবর মাস থেকে অধিভুক্তি বাতিল করে ‘স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়’ দাবি করে আন্দোলন করে আসছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। একই দাবিতে আন্দোলন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি অংশও। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, এ বিষয়ে অংশীজনদের সঙ্গে আরও আলোচনা প্রয়োজন। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনায় বলা যায়, অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে এবার দু’পক্ষই একমত।

জুলাইয়ের সহিংসতার ঘটনায় সত্যানুসন্ধান কমিটি

গত ১৫ অক্টোবর কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে সরকার পতন আন্দোলন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংঘটিত বেআইনি ও সহিংস ঘটনার তথ্যানুসন্ধান করে জড়িতদের চিহ্নিত করতে ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে সাত সদস্যের একটি তথ্যানুসন্ধান কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ কমিটি গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে সংঘটিত ঘটনাগুলোর তথ্য অনুসন্ধান করবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন, নাগরিক কমিটির আত্মপ্রকাশ

ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ২২ অক্টোবর নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেছে। এতে আহ্বায়ক হয়েছেন হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসুদ। এরই মধ্যে কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গায় জেলা কমিটি গঠন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। প্ল্যাটফর্মটির একটি সূত্র জানায়, আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সকল জেলায় আহ্বায়ক কমিটি দেওয়ার চিন্তা করছে প্ল্যাটফর্মটি।

এছাড়া ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ঘটিয়ে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের লক্ষ্যে গত ৮ সেপ্টেম্বর আত্মপ্রকাশ ঘটে জাতীয় নাগরিক কমিটি’র। এর আহ্বায়ক হয়েছেন মুহাম্মাদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এবং সদস্য সচিব হয়েছেন ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ও গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক আখতার হোসেন। এছাড়া মুখপাত্র হয়েছেন সামান্তা শারমিন। এদের বাইরে কমিটিতে ৫৯ জনকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।

দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের বন্যায় ‘গণত্রাণ কর্মসূচি’

গত আগস্টে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গণত্রাণ কর্মসূচি চালু করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে প্ল্যাটফর্মটির এ কার্যক্রম চলে। এতে মোট ১১ কোটি ৬৯ লাখ ৮৪ হাজার ৪২০ টাকা সংগ্রহ করা হয়। নগদ অর্থ ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে বিভিন্ন পরিবহণে করে বন্যার্তদের জন্য খাবার, জামা-কাপড়, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী দান করে সাধারণ মানুষ।

‘চোর’ সন্দেহে এফ এইচ হলে একজনকে পিটিয়ে হত্যা

গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে ‘চোর’ সন্দেহে তোফাজ্জল নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করে হলটির কয়েকজন শিক্ষার্থী। পিটিয়ে হত্যার ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে অভিযুক্ত আট ছাত্রের আবাসিক সিট বাতিল করেছে হল প্রশাসন। সেইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত আট শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের আদেশ দিয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

আগরতলায় বাংলাদেশ দূতাবাসে হামলা, ঢাবিতে প্রতিবাদ মিছিল

আগরতলায় বাংলাদেশের দূতাবাসে হামলার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছিল ঢাবি শিক্ষার্থীরা। গত ১১ ডিসেম্বর ঢাবির বিভিন্ন হল থেকে মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। পরে রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমবেত হয়ে ভারতের এই হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানান শিক্ষার্থীরা।

ঢাবি ক্যাম্পাসে হাসিনা-কাদেরের প্রতীকী ফাঁসি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) নভেম্বর মাসের শেষের দিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের প্রতীকী ফাঁসির আয়োজন করে ঢাবি শিক্ষার্থীরা।

হাসিনার ‘ঘৃণাস্তম্ভ’ মুছে দেওয়ায় ঢাবি প্রশাসনের ওপর ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা

গত ২৮ই ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) সংলগ্ন এলাকায় ঢাবি প্রশাসনের নির্দেশে শেখ হাসিনার ‘ব্যঙ্গচিত্র’ মুছে দেওয়ায় ঢাবি প্রশাসনের ওপর ক্ষুদ্ধ হন শিক্ষার্থীরা। পরে, ব্যঙ্গচিত্র অাঁকার সঙ্গে জড়িত প্রশাসনের পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা।

টিএসসিতে পুনরায় হাসিনার ছবি এঁকে জনগণের জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি

গত ২৮ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) মেট্রোরেলের একটি পিলারে পুনরায় আঁকা হয় শেখ হাসিনার ছবি। এর পর সেই ছবির ওপর আবারও জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি পালন করে ঢাবি ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলো।

সারাবাংলা/এআইএন/পিটিএম

অভিযাত্রা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নতুন বাংলাদেশ ফিরে দেখা ২০২৪ সালতামামি

বিজ্ঞাপন

তাবলীগ জামাতের কর্মসূচি ঘোষণা
৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:০৮

আজ তাকেই সবাই শেষ বিদায় দিলো
৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১৪:৪৪

আরো

সম্পর্কিত খবর