‘শিশুদের অন্যের সঙ্গে তুলনা করা মারাত্মক ভুল’
৩ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:৩২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: শিশুদের অন্যের সঙ্গে তুলনা করা মারাত্মক ভুল, যা অভিভাবকরা সচরাচর করেন বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যায়ের (সিভাসু) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে নগরীর নাসিরাবাদ সরকারি (বালক) উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মাইজভাণ্ডারি অ্যাকাডেমি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। অ্যাকাডেমির সপ্তদশ শিশু-কিশোর সমাবেশ ও প্রতিযোগিতার উদ্বোধন উপলক্ষ্যে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সিভাসু উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান বলেন, ‘আমাদের অভিভাবকদের একটা কমন সমস্যা আছে। যেমন, আমরা এখনো আমাদের ছেলেমেয়েদের কোনো প্রতিযোগিতার জন্য যখন তৈরি করি, তখন তাদের বলি এই ছেলে এমন, তুমি এমন কেন নও? সে এটি পারছে, তাহলে তুমি কেন পারছো না। পাশের বাড়ির এই ছেলে-মেয়ে এভাবে চলে, তুমি কেন ওভাবে চলতে পারো না? এটা একটা বড় মারাত্মক ভুল।’
‘এরকম ভুল করা যাবে না। কারণ সৃষ্টিকর্তা একেক জনকে একেক গুণে সৃষ্টি করেছেন। একজন শিশু কোনো একটি বিষয়ে পারদর্শী হবে, অন্যজন অন্য বিষয়ে পারদর্শী হবে। তাই তাদের সুস্থ প্রতিযোগিতার কথা বলতে হবে, কিন্তু এ কারণে যেন তার মনোবল নষ্ট হয়ে না যায়’— ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘কোনো জাতি যদি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চায় এবং বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চায়, তবে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। একটি জাতির মেরুদণ্ড হচ্ছে শিক্ষা। তবে শিক্ষা তখনই পরিপূর্ণ হবে যখন শিক্ষার সঙ্গে অন্যান্য উপকরণগুলো যুক্ত থাকবে। যেমন শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অ্যাক্সট্রা কারিকুলামে যুক্ত থাকতে হবে। সে হিসেবে মাইজভাণ্ডারি অ্যাকাডেমির এ আয়োজন জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার আয়োজন।’
অ্যাকাডেমির প্রধান সমন্বয়ক এইচ এম রাশেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারি ট্রাস্টের অধ্যাপক এ ওয়াই এমডি জাফর, ট্রাস্টের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. জসীম উদ্দিন, মাইজভাণ্ডারি অ্যাকাডেমির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বক্তব্য রাখেন।
উপমহাদেশের প্রখ্যাত সূফিসাধক সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারির ১১৯ তম ওরশ উপলক্ষ্যে সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারি ট্রাস্টের উদ্যোগে ১০ দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে মাইজভাণ্ডারি অ্যাকাডেমি এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এতে ক্বিরাত, হামদ না’ত, মাইজভাণ্ডারি সংগীত, নজরুল সংগীত, রবীন্দ্র সংগীত, কবিতা আবৃত্তি, দেশাত্মবোধক গান, উপস্থিত বক্তৃতা, ফটোগ্রাফি, রচনা, চিত্রাঙ্কন, আইডিয়াহান্ট, সূফি অলম্পিয়াড ও সীমিত চলচ্চিত্রসহ ১৯ বিষয়ে চার হাজারের বেশি শিশু-কিশোর অংশ নেয়।
বিজয়ীদের আগামী ১০ জানুয়ারি সকালে নগরের নাসিরাবাদ সরকারি (বালক) উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পুরস্কার বিতরণ করা হবে।
সারাবাংলা/আরডি/এইচআই