অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর কার্ল নেহামা জোট সরকার গঠনের আলোচনা ব্যর্থ হওয়ায় পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। দেশের বৃহত্তম কেন্দ্রীয় দলগুলোর মধ্যে জোট সরকার আলোচনা ভেঙে পড়ার পর শনিবার (৪ জানুয়ারি) এ ঘোষণা দেন তিনি।
লিবারেল নেয়োস পার্টি শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) নেহামারের কনজারভেটিভ পিপলস পার্টি (ওভিপি) এবং সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটস (এসপিও)-এর সঙ্গে আলোচনায় থেকে সরে দাঁড়ানোর পর এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। নেহামার বলেন, ‘জোট আলোচনার ব্যর্থতার পর আমি আগামী কয়েক দিনের মধ্যে চ্যান্সেলর এবং পিপলস পার্টির পার্টি চেয়ারম্যান দুই পদ থেকেই সরে দাঁড়াব।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, কেন্দ্রীয়-বামপন্থীদের সঙ্গে দীর্ঘ ও সৎ আলোচনা সত্ত্বেও, ফার-রাইট ফ্রিডম পার্টিকে (এফপিও) ঠেকানোর মতো কোনো সমঝোতা হয়নি।
নেহামার জোর দিয়ে বলেন, দেশের বর্তমান অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির মাঝে তার দল এমন কোনো পদক্ষেপ সমর্থন করবে না যা অর্থনীতির ক্ষতি করে বা নতুন কর আরোপ করে। তিনি একটি সুশৃঙ্খল ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেন এবং চরমপন্থীদের সমালোচনা করেন, যারা সমস্যার সমাধান না দিয়ে সমস্যার বর্ণনা দিয়েই টিকে থাকে।
ডানপন্থী ফ্রিডম পার্টি (এফপিও) গত সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে প্রায় ৩০ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রথমবারের মতো পার্লামেন্ট নির্বাচনে জয় লাভ করে।
তবে ইউরোস্কেপ্টিক এবং রাশিয়া-সমর্থক এফপিও এবং তাদের নেতা হার্বার্ট কিকলের সঙ্গে কোনো দল জোট গঠনে রাজি হয়নি। ফলে প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ভ্যান ডার বেলেন অক্টোবরের শেষ দিকে নেহামারকে জোট গঠনের দায়িত্ব দেন। নেহামার এফপিওকে এড়িয়ে নেয়োস পার্টির সঙ্গেও সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হন।
নেহামারের পদত্যাগের পর ওভিপি নতুন নেতা নির্বাচনের জন্য বৈঠক করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বর্তমানে অস্ট্রিয়ার রাজনৈতিক অচলাবস্থা বজায় রয়েছে এবং স্থিতিশীল সরকার গঠনের সম্ভাবনা আপাতত অনিশ্চিত। প্রেসিডেন্ট এখন নতুন নেতা নিয়োগ দিতে পারেন বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে পারেন বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন।
ইউরোপীয় কমিশনের মতে, অস্ট্রিয়ার পরবর্তী সরকারকে ১৮ থেকে ২৪ বিলিয়ন ইউরো সঞ্চয় করার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। দেশটি গত দুই বছর ধরে মন্দার মধ্যে রয়েছে, যেখানে বেকারত্ব বেড়েছে এবং বাজেট ঘাটতি মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৩.৭ শতাংশ, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্ধারিত ৩ শতাংশ সীমার চেয়ে বেশি।