৫০ বছর পর কুড়িগ্রামে ২০ হাজার মানুষের স্বস্তি
৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:৪৩ | আপডেট: ৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১৪:৫৯
কুড়িগ্রাম: শুষ্ক মৌসুমে ধু ধু বালু চর, বর্ষায় অথৈ পানি। নেই রাস্তা, যোগাযোগ-যাতায়াতে ভোগান্তি। ৫০ বছরের এমন অবর্ণনীয় পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেয়েছেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার তিন ইউনিয়নের ২০ হাজার মানুষ। এখন নৌকা কিংবা ভেলা নয়, ঘুরবে চাকা। ঘুচবে পায়ে হাঁটার ক্লান্তি।
গত ৫০ বছর ধরে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নুনখাওয়া, কঁচাকাটা ও বামনডাঙ্গার ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজাার মানুষের কোনো যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল না। বছরের পর বছর শুষ্ক মৌসুমে আবাদি জমি ও চরের বালু ভেঙ্গে পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতেন এ জনপদের হাজার হাজার মানুষ। আর বর্ষা মৌসুমে নৌকা ও কলা গাছের ভেলাই ছিল এখানকার একমাত্র ভরসা।
যুগের পর যুগ ওই তিন ইউনিয়নের মানুষ যোগাযোগ উন্নয়নের দাবি করে আসছেন। এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি এবার বাস্তবায়ন হয়েছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির সহযোগিতায় আরডিআরএস বাংলাদেশ প্রায় সাড়ে ১০ কিলোমিটার সড়ক ও বাঁধ নির্মাণ করে। এতে দুর্ভোগ লাগব হয়ে ফিরবে স্বস্তি।
নুনখাওয়া ইউনিয়নের চর কাপনা গ্রামের হামেদ আলী বলেন, ‘জন্মের পর থেকে মানুষের আবাদি জমি ও বালু দিয়ে যাতায়াত করতাম এতদিন পর রাস্তা পেয়ে আমরা খুব খুশি।’
কঁচাকাটা ইউনিয়নের মকবুল বলেন, ‘আমরা এই রাস্তা দিয়ে সহজে হাঁট-বাজার গিয়ে ব্যবসা বাণিজ্য করতে পারব। ছেলে-মেয়েরা যাবে স্কুল কলেজ ও মাদরাসায়। এতেই আমাদের আনন্দ।
বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের আব্দুর রহমান বলেন, ‘রাস্তা হওয়ায় চরাঞ্চলের মুমূর্ষু রোগীদের দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া সহজ হবে। এ রাস্তা আমাদের জন্য বড় উপহার।’
ইমারজেন্সি অ্যান্ড হিউমিনিটেরিয়ান রেসপন্স আরডিআরএস বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম সমন্বয়কারী তপন কুমার সাহা জানান, সড়ক ও বাঁধটি একদিকে যোগাযোগ ব্যবস্থার সমাধান করবে অপরদিকে চরাঞ্চলের বন্যার সময় ফসলি জমি রক্ষা করবে।’
নাগেশ্বরী উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সিব্বির আহমেদ জানান, উপজেলার ৩টি ইউনিয়নে বিশ্ব খাদ্য কর্সূচির সহায়তায় আরডিআরএস বাংলাদেশ মাধ্যমে প্রায় সাড়ে ১০ কিলোমিটার সড়ক ও বাঁধ নির্মাণ করে। এটি মানুষের দুঃখ লাখব ও উন্নত জীবন ব্যবস্থার জন্য সহযোগিতা করবে। ভবিষ্যতে যেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই এ ধরনের রাস্তা নির্মাণ করবে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ও আরডিআরএস বাংলাদেশ এই প্রত্যাশা কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলের মানুষজনের।
প্রায় ১০ কিলোমিটারের ওই সড়কটি ৩ কোটি ১৪ লাখ ৭ হাজার ৩০৩ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। গত বছরের ১০ অক্টোবর কাজ শুরু হয়। শেষ হয় ৩১ ডিসেম্বর। নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই চলাচল শুরু হয় সড়কে।
সারাবাংলা/এসআর
আরডিআরএস কড়িগ্রাম নাগেশ্বরী উপজেলা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সড়ক নির্মাণ