কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সোমবার (৬ জানুয়ারি) তার পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। লিবারেল পার্টির নতুন নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় নেতৃত্বের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
কানাডার রাজধানী অটোয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে ৫৩ বছর বয়সী ট্রুডো বলেন, ‘আমি দলের নতুন নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় নেতৃত্ব থেকে পদত্যাগ করব।’
তিনি আরও বলেন, কানাডার পার্লামেন্ট আগামী ২৪ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত থাকবে, যেন লিবারেল পার্টি নতুন নেতা নির্বাচন করতে পারে। কানাডার নির্বাচন প্রক্রিয়া সংস্কারে ব্যর্থ হয়েছেন বলে দুঃখ প্রকাশ করেন ট্রুডো।
জাস্টিন ট্রুডো ১১ বছর ধরে লিবারেল পার্টির নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন এবং ৯ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সাম্প্রতিক সময়গুলোতে তিনি অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা, ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক হুমকি, গুরুত্বপূর্ণ সহযোগীদের পদত্যাগ এবং নেতিবাচক জনমতের মুখোমুখি ছিলেন।
আরও পড়ুন- পদত্যাগের ঘোষণা কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর
২০১৫ সালে ক্ষমতায় এসে তিনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও আদিবাসীদের প্রতি ঐতিহাসিক অবিচারের সমাধানের মতো বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। তবে তার শাসনের শেষ বছরগুলোতে কানাডার জনগণের মধ্যে অর্থনৈতিক অসন্তোষ বাড়তে থাকে।
ট্রুডোর সরকারের সংকট আরও ঘনীভূত হয় ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের আকস্মিক পদত্যাগের পর। তিনি ট্রুডোর রাজনৈতিক কৌশলের সমালোচনা করে পদত্যাগ করেন।
অন্যদিকে, ট্রুডোকে কানাডার গভর্নর অভিহিত করে পুনর্নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা একত্রিত হওয়ার পক্ষে মন্তব্য করেন। সেই সাথে কানাডার পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
লিবারেল পার্টির সম্ভাব্য নতুন নেতৃত্বের জন্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর মার্ক কার্নি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জলি এবং প্রাক্তন ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড।
ট্রুডোর পদত্যাগের পর বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টির নেতা পিয়েরে পোলিয়েভ্র বলেন, ‘আমাদের সীমান্ত, অভিবাসন, ব্যয়, ঘাটতি এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া উচিত। আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের আগে নতুন নেতৃত্ব লিবারেল পার্টিকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারবে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।’