Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এক বছরে সড়কে প্রাণহানি বেড়েছে ১১.৮%

সারাবাংলা ডেস্ক
৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:১৭ | আপডেট: ৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:০৪

ট্রেনের ধাক্কায় পুকুরের পাশে পড়ে যায় মাইক্রোবাস। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ২০২৪ সালে দেশে ছয় হাজার ৯২৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন সাত হাজার ২৯৪ জন, আহত হয়েছেন ১২ হাজার ১৯ জন। নিহতদের মধ্যে ৮৯৩ জন নারী ও এক হাজার ১৫২ শিশু রয়েছে। এর আগে ২০২৩ সালে ছয় হাজার ৯১১টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন ছয় হাজার ৫২৪ জন, আহত হয়েছিলেন ১১ হাজার ৪০৭ জন।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এই হিসাব বলছে, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে সড়কে দুর্ঘটনা মাত্র ১৬টি বাড়লেও ৭৭০ জন বেশি নিহত হয়েছেন, যা আগের বছরের চেয়ে ১১ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। এ বছর আহতের সংখ্যা বেড়েছে ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৮ জানুয়ারি) রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পাঠানো ‘২০২৪ সালের সড়ক দুর্ঘটনার বার্ষিক প্রতিবেদন’ এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। সংস্থাটি ৯টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সময়ে ১১৮টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১৫২ জন নিহত, ১৬১ জন আহত এবং ৩৯ জন নিখোঁজ হয়েছেন। ৩৪৭টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ৩২৪ জন নিহত এবং ২৭৭ জন আহত হয়েছেন।

সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে মোটরসাইকেলে। এই যানে দুই হাজার ৭৬১টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন দুই হাজার ৬০৯ জন, যা মোট নিহতের ৩৫.৭৬ শতাংশ। দুর্ঘটনায় এক হাজার ৫৩৫ জন পথচারী নিহত হয়েছেন। বিভিন্ন যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৯৮৪ জন।

বাস যাত্রী ৩৬৯ জন, পণ্যবাহী যানবাহনের আরোহী ৪৯৯, প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স-জীপ আরোহী ৩৬৩, থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান ইত্যাদি) ১৩৯২ জন, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-করিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্র-টমটম) ৩৩১ জন এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা আরোহী ১৯৬ জন নিহত হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে দুই হাজার ৩৫৭টি জাতীয় মহাসড়কে, দুই হাজার ৭৩৬টি আঞ্চলিক সড়কে, ৯৭২টি গ্রামীণ সড়কে, ৭৮৪টি শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৭৮টি সংঘটিত হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। এক হাজার ৫৮২টি দুর্ঘটনায় এক হাজার ৮৪০ জন নিহত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ৪৩৫টি দুর্ঘটনায় ৪৪৩ জন নিহত হয়েছেন।

সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল ও তরুণ-যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোয় ঘটছে এসব দুর্ঘটনা।

এছাড়া দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি ও গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজির কারণেও।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ১০ দফা সুপারিশও করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। এগুলো হলো: দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে, চালকদের বেতন-কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট করতে হবে, বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে, পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা রাস্তা (সার্ভিস লেন) তৈরি করতে হবে, পর্যায়ক্রমে সকল মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে, রেল ও নৌ-পথ সংস্কার করে সড়ক পথের উপর চাপ কমাতে হবে, টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করতে হবে, ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

সারাবাংলা/ইআ

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন সড়কে প্রাণহানি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর