কলেজ শিক্ষার্থী তনুশ্রী হত্যার বিচারের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
১২ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:৫৪
মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী তনুশ্রী হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১২ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে তনুশ্রী হত্যাকারীর ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন শেষে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করে তারা। পরে মিছিল নিয়ে শহর প্রদক্ষিণ করেন শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা তনুশ্রী রায় হত্যায় সাত দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেন। এরপর বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করে ও একটি স্মারকলিপি দেন পুলিশ সুপারকে।
উল্লেখ্য বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাতে বিয়ের তিন মাসের মাথায় স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের গালমন্দ ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তনুশ্রী (২১) ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস নেয়।
নিহতের পরিবারের দাবি, বিয়ের পর থেকে মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে শহরের বনগ্রাম এলাকায় স্বামীর বাসভবন এবি ভিলা থেকে তনুশ্রীর মরদেহ উদ্ধার করে সদর থানা-পুলিশ।
মানিকগঞ্জ সদর থানায় দায়ের করা আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চৈল্লা গ্রামের দীনবন্ধু রায়ের ছোট মেয়ে তনুশ্রী রায়ের সঙ্গে পৌর এলাকার বনগ্রাম এলাকার অটল বিশ্বাসের ছেলে অতনু বিশ্বাসের (৩০) গত বছরের ৩ অক্টোবর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে নানান বিষয় নিয়ে তনুশ্রীকে অকথ্য ভাষায় গালাগালিজসহ প্রতিনিয়ত মানসিক নির্যাতন চালাত শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা দীনবন্ধু রায় বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা করেছেন। পুলিশ ওই মামলায় নিহতের স্বামী অতনু বিশ্বাসকে গ্রেফতার করে।
তনুশ্রীর বাবা দীনবন্ধু রায় বলেন, ‘তনুশ্রীকে তার শ্বশুড়বাড়ির লোকজন মানসিক নির্যাতন করত। আমার মেয়ে আমাকে ও তার মাকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এ বিষয়ে জানাত। তখন আমরা তাকে ধৈর্য ধরতে বলতাম। সর্বশেষ নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে স্বামীর বাড়িতে ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আত্মহত্যা করে। পরে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার মেয়েকে মৃত ঘোষণা করেন।’
সদর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম আমানুল্লাহ জানিয়েছেন, নিহতের বাবা বাদী হয়ে নিহতের স্বামী অতনু বিশ্বাস, শ্বশুর অটল বিশ্বাস ও শাশুড়ী আরতী বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আত্নহত্যা প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেছেন। এরই মধ্যে নিহতের স্বামী অতনু বিশ্বাসকে গ্রেফতার করেছেন বলে জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।
সারাবাংলা/এমপি