মেসিডোনিয়ার নাম পরিবর্তনে ঐতিহাসিক চুক্তি সই
১৭ জুন ২০১৮ ১৭:৫৫
।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
প্রতিবেশী দেশ মেসিডোনিয়ার নাম বদলের জন্য সেদেশের সঙ্গে এক চুক্তি করেছেন গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সি সিপারাস। দেশটির নতুন নাম রিপাবলিক অব নর্থ মেসিডোনিয়ার বিষয়ে সিপারাস ও মেসিডোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী জোরান জায়েভ সম্মত হন। এই চুক্তির মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে চলমান বিতর্কের অবসান হচ্ছে। চুক্তি অনুযায়ী এখন থেকে দেশটি নর্থ মেসিডোনিয়া নামে পরিচিত হবে।
রোববার (১৭ জুন) দুই দেশের সীমান্তে গ্রিসের পররাষ্ট্র মন্ত্রী নিকোস কোৎজিয়াস ও মেসিডোনিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী নিকোলা দিমিত্রভের মধ্যে এই চুক্তি সই হয় যেখানে সিপারাস ও জোরান উপস্থিত ছিলেন।
অবশ্য এই চুক্তির পরেও মেসিডোনিয়ার নাম বদল নাও হতে পারে। দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, নাম পরিবর্তনে সেপ্টেম্বর কিংবা অক্টোবরে গণভোট করতে হবে। দেশটির নাগরিকরা এতে সমর্থন দিলে বদল করতে হবে সংবিধান। এরপরের ধাপে পার্লামেন্টের অনুমোদনের প্রয়োজন পড়বে। মেসিডোনিয়ার প্রেসিডেন্ট জর্জ ইভানভ নাম বদলের আইনে স্বাক্ষর করতে না চাইলে দেখা দেবে নতুন সমস্যা। সেক্ষেত্রে বিলটি দ্বিতীয় দফা পার্লামেন্টে যাবে। এরপরও সাংসদরা পক্ষে থাকলে স্বাক্ষর করা ছাড়া অবশ্য উপায়ও থাকবে না ইভানভের। মেসিডোনিয়ার পাশাপাশি গ্রিসের পার্লামেন্টেও নাম বদলের চুক্তি অনুমোদিত হতে হবে, সেটিও খুব সহজে অর্জিত হবে না বলেই ধারণা পর্যবেক্ষকদের।
নির্বাচনে জিতে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সি সিরাপাস জনগণের এই রায়কে সাহসী, ঐতিহাসিক এবং গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। প্রধান বিরোধী দল নিউ ডেমোক্রেসি শনিবার পার্লামেন্টে সিপারাসের বিরুদ্ধে অসাস্থা প্রস্তাব আনলেও তা ১৫৩-১২৭ ভোটে খারিজ হয়। এর ফলে চুক্তিতে স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে যাবতীয় বাধা দূর হয়ে যায়।
দুই দশকেরও বেশি সময় আগে সাবেক যুগোস্লাভিয়া থেকে স্বাধীন হয় মেসিডোনিয়া। তখন থেকেই নাম নিয়ে দেশটির সঙ্গে গ্রিসের বিরোধ ছিল। গ্রিসের একটি প্রদেশের নাম মেসিডোনিয়া। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের কারণে দেশটির অনেক নাগরিকও নিজেদের মেসিডোনিয়ান হিসেবে পরিচয় দেন। যুগোস্লাভিয়া থেকে স্বাধীন মেসিডোনিয়ার সঙ্গে পরিচয়ের এই বিরোধ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে- এমন শঙ্কায় প্রথম থেকেই দেশটির নাম বদলে চাপ দিয়ে আসছিলেন গ্রিকরা।
মেসিডোনিয়া নাম ব্যবহার করে দেশটি গ্রিক অঞ্চলের ওপর অধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় নিয়োজিত বলেও অভিযোগ এথেন্সের। নামের এ বিরোধ মেটাতেই ধারাবাহিক আলোচনা চালায় সিপারাস ও জোরান সরকার। অবশ্য এই চুক্তির বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ হয়েছে।
নিউ ডেমোক্রেসিসহ গ্রিসের বেশ কয়েকটি বিরোধীদল নতুন এ চুক্তির বিরোধিতা করছে। সিপারাস চুক্তিতে মেসিডোনিয়াকে বেশি ছাড় দিয়ে ফেলেছেন বলেও অভিযোগ তাদের। শনিবার পার্লামেন্ট ভবনের সামনে সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের কয়েকদফা সংঘর্ষও হয়।
সারাবাংলা/এমআইএস