টিউলিপ ইস্যুতে চাপের মুখে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী
১৩ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:৩২ | আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:৪৪
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার জন্য দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের ওপর নানামুখী চাপ বাড়ছে। এরইমধ্যে টিউলিপের জায়গায় নতুন কাউকে দায়িত্ব দেওয়ার চিন্তা করছে তার দল। যদিও এর আগে টিউলিপের প্রতি আস্থা প্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার। তবে টিউলিপকে নিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মন্তব্যের পর এ চাপ আরও বেড়েছে।
এদিকে তাকে বরখাস্ত করতে স্টারমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির নেতা কেমি ব্যাডেনোচ। তিনি টিউলিপ সিদ্দিকের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তার এক্স অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট করেছেন।
এক্সের পোস্টে তিনি বলেন, ‘এখন কিয়ার স্টারমারের টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার সময় এসেছে।’ ড. ইউনূসের মন্তব্যের পর তিনি এই বিবৃতি দেন।
পোস্টে স্টারমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে কেমি বলেছেন, তিনি তার “ব্যক্তিগত বন্ধুকে দুর্নীতি বিরোধী মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন, যেখানে সিদ্দিক নিজেই দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত।”
টিউলিপের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ তদন্ত করছে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের পর্যবেক্ষক স্যার লরি ম্যাগনাস। অভিযোগ আছে, আব্দুল মোতালিফ নামে একজন ডেভেলপার টিউলিপকে উপহার হিসেবে একটি ফ্ল্যাট দিয়েছেন। ওই ফ্ল্যাট ব্যবহার করেছেন টিউলিপ। কিন্তু এ তথ্য গোপন ছিল।
বিষয়টি সামনে আসায় জানা যায়, আব্দুল মোতালিফ হলেন ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার রাজনৈতিক মিত্র। তার সঙ্গে মোতালিফের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে।

কিয়ার স্টারমার ও টিউলিপ সিদ্দিক।
এসব অভিযোগ ওঠার পর গত সোমবার নিরপেক্ষ উপদেষ্টা বা মিনিস্টারিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস স্যার লরি ম্যাগনাসের কাছে গিয়ে গত সোমবার ধরা দেন টিউলিপ। তিনি আত্মপক্ষ সমর্থন করেন। এক চিঠিতে স্যার লরিকে বলা হয়, তদন্ত উন্মুক্ত। তিনি কোনো অন্যায় করেননি।
তবে সানডে টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, টিউলিপ সিদ্দিকের লন্ডনের সম্পত্তিগুলো তদন্ত করা উচিত। যদি তিনি সেগুলো “প্লেইন ডাকাতি” (সরাসরি ডাকাতি) করে অর্জন করে থাকেন, তবে তা সরকারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া উচিত।
টিউলিপ সিদ্দিককে ক্ষমা চাইতে এবং পদত্যাগ করতে আহ্বান জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “তিনি নিজে দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী হয়ে নিজেকে রক্ষা করছেন। হয়ত আপনারা তখন বুঝতে পারেননি, কিন্তু এখন বুঝতে পারছেন।”
পিটার কাইল স্কাই নিউজের ‘সানডে মর্নিং উইথ ট্রেভর ফিলিপস’ অনুষ্ঠানে বলেন, “আমি মনে করি সিদ্দিক ঠিকই করেছেন। তিনি নিজের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য আবেদন করেছেন। সেই তদন্ত চালিয়ে যেতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এই পরিস্থিতি সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে হবে এবং কর্তৃপক্ষকে তদন্ত করার সুযোগ দিতে হবে। আমরা তাদের আরও ক্ষমতা দিয়েছি যাতে তারা স্বাধীনভাবে তদন্ত করতে পারে। আপনারা জানেন, সময় হলে কিয়ার স্টারমার অবশ্যই কর্তৃপক্ষের কথা শুনবেন।”
সূত্র: গার্ডিয়ান
সারাবাংলা/ইআ