নওগাঁয় ১ লাখ কেজি মধু উৎপাদনের সম্ভাবনা
১৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:০০ | আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:১০
নওগাঁ: রবি মৌসুম মানেই মাঠজুড়ে সরিষার হলুদ খেত। যা দেখতে দেখতে চোখ জুড়িয়ে যায়। কিন্তু চোখ জুড়ানো এই দৃশ্যের মধ্যে আরেকটি দৃশ্য উঁকি দেয়। সেটি হলো মৌবাক্স। সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহের জন্য খেতের পাশেই এগুলো স্থাপন করা হয়। সরিষার পাশাপাশি মধু সংগ্রহও এখন বেশ লাভজনক ব্যবসা।
চলতি চলতি রবি মৌসুমে নওগাঁ জেলায় সরিষা খেতের পাশে মৌবাক্স বসিয়ে ৯১ জন মৌয়াল মধু আহরণ করছেন। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, এ বছর জেলায় সরিষা খেতের পাশে ৮ হাজার ৩৭৮টি মৌবাক্স বসানো হয়েছে। চলতি মৌসুমে জেলার আট উপজেলা থেকে কমপক্ষে এক লাখ কেজি মধু সংগ্রহ করা যাবে।
জানা গেছে, নওগাঁ সদর উপজেলায় পাঁচ জন মৌয়াল ৬১৫টি বাক্স, রানীনগর উপজেলায় একজন ১০টি বাক্স, আত্রাই উপজেলায় আট জন ৫৪৫টি বাক্স, ধামইরহাট উপজেলায় দু’জন ১০টি বাক্স, সাপাহার উপজেলায় ১৬ জন মৌয়াল ২ হাজার ৩২০টি বাক্স, পোরশা উপজেলায় ছয় জন মৌয়াল ৬২৩টি বাক্স, মান্দা উপজেলায় ৫০ জন মৌয়াল ৪ হাজার ২০০টি বাক্স এবং নিয়ামতপুর উপজেলায় তিন জন মৌয়াল ৫৫টি বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করছেন।
মান্দা উপজেলার গোপালপুর মাঠে মধু সংগ্রহ করছেন রাজশাহী জেলার মোহনপুর উপজেলাধীন কেশরহাট এলাকার জহির মীর ও মোরশেদ আলী। জানা গেছে, তারা এই মাঠে ৪০০টি বাক্স বসিয়েছেন। প্রতি ৫/৬ দিন পর প্রতিটি বাক্স থেকে কমপক্ষে তিন কেজি করে মধু সংগ্রহ করতে পারেন। তাদের সংগৃহীত মধু রাজশাহীতে একটি নির্দিষ্ট ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে বিক্রি করে থাকেন। স্থানীয় খুচরা ক্রেতাদের কাছে ৪০০ টাকা কেজি বিক্রি করলেও পাইকারিভাবে তারা প্রতি কেজি মধু ৩০০ টাকায় বিক্রি করে থাকেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আবুল কালাম আজাদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘উল্লিখিত পরিমাণ বাক্স থেকে এ বছর কমপক্ষে এক লাখ কেজি মধু সংগৃহীত হবে। পাইকারি মূল্য প্রতিকেজি ৩০০ টাকায় বিক্রি হলেও সংগৃহীত পুরো মধুর মোট মূল্য ৩ কোটি টাকার ও বেশি।’ এদিকে, কৃষি বিভাগের তথ্য বলছে, গত রোববার (১২ জানুয়ারি) পর্যন্ত জেলায় ৩৬ হাজার ২৯৫ কেজি মধু সগ্রহ করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক আরও বলেন, ‘চলতি মৌসুমে নওগাঁ জেলায় মোট ৬০ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। সরিষার পাশাপাশি মৌমাছি চাষ করার ফলে পরাগায়নের মাধ্যমে কমপক্ষে ১০ শতাংশ সরিষার ফলন বেশি হচ্ছে। ফলে একদিকে যেমন মধু আহরণ করে কোটি কোটি টাকা আয় করা সম্ভব হচ্ছে, অন্যদিকে সরিষার ফলন বাড়ছে ১০ শতাংশ।’
সেজন্য কৃষি বিভাগের সহায়তায় সরিষা খেতের পাশে মৌবাক্স বসিয়ে মৌমাছি চাষের মাধ্যমে মধু উৎপাদনে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
সারাবাংলা/পিটিএম