Tuesday 14 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পুরান ঢাকায় চলছে ‘সাকরাইন’ উৎসব

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:১৫ | আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:৪৫

একেকটা ঘুড়ির নকশা একেক রকম সুন্দর।

ঢাকা: লাল-নীল, সবুজসহ নানা রঙের ঘুড়িতে পরিপূর্ণ পুরান ঢাকার আকাশ। একেকটা ঘুড়ির নকশা একেক রকম সুন্দর। সুতোঁয় সুঁতোয় কাটাকাটি। একজনের ঘুড়ি চলে যাচ্ছে আরেকজনের নাটাইতে। হারজিত যাই হোকনা কেনো, আনন্দটাই মূখ্য। আর এভাবে, হাসি ঠাট্টা, আনন্দ ও মজার মুহূর্ত নিয়ে পুরান ঢাকায় পালিত হচ্ছে ঘুড়ি উৎসব।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) পুরান ঢাকায় দিনভর পালন করা হচ্ছে এই ‘সাকরাইন’ উৎসব।

ঢাকাইয়া ভাষায় ‘সাকরাইন’ নামেই এটি অধিক পরিচিত। পৌষ সংক্রান্তি, সংক্রান্তি বা সাকরাইন যেভাবেই বলা হোক এ উৎসব নিয়ে পুরান ঢাকাবাসীর থাকে ব্যাপক আগ্রহ। সপ্তাহখানেক আগে থেকেই ঘুড়ি, নাটাই, আতশবাজি, ফানুস, মাইক্রোফোন সবকিছুই আলাদাভাবে এলাকার ছেলে-পেলেরা জড়ো করতে থাকে।

এই উৎসবে বয়সের কোনো ধরাবাধা নিয়ম নেই। তরুনদের অংশগ্রহণ বেশি থাকলেও সব বয়সী মানুষরাই এই উৎসবে অংশগ্রহণ করে। কেউ ঘুড়ি খেলায় অংশ নিয়ে আনন্দ করে। কেউ সেই খেলা দেখে উৎসবকে উপভোগ করে।

পুরান ঢাকায় বসবাসকারী রাসেল আহমেদ বলেন, আমি শৈশব থেকে এই উৎসব দেখে আসছি। যখন থেকে ঘুড়ি ওড়ানো শিখেছি, তখন থেকে আমি নিজেও ঘুড়ি ওড়াই এবং এরপর থেকে আর এই ঘুড়ি উৎসব কখনোই মিস করিনি।

৬৩ বছরের বৃদ্ধ তাপস রায়। তিনি বলেন ‘আমার জন্মই তাঁতিবাজার এলাকায়। আমি এই উৎসবে ছেলে বেলা থেকেই অংশ নিই। আমার ছেলেরাও অংশগ্রহণ করেছে। এখন আমার নাতিদের নিয়ে উৎসবে আসি। আমিও ঘুড়ি ওড়াই। এইটা অনেক ভালোলাগার উৎসব আমাদের।’

জানা গেছে, প্রায় দুই হাজার বছর আগে চীনে প্রথম ঘুড়ির উৎপত্তি। ইউরোপ বা আমেরিকায় ঘুড়ি ওড়ানোর রেওয়াজ থাকলেও মূলত চীন, জাপান, কোরিয়া, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, ভারত আর বাংলাদেশের মতো এশিয়ার দেশগুলোতেই এই খেলার জনপ্রিয়তা বেশি।

বিজ্ঞাপন

পুরান ঢাকার শাঁখারিবাজার, তাঁতিবাজার, কলতাবাজার, শিংটোলা, কাগজীটোলা, সূত্রাপুর, লক্ষীবাজার, বাংলাবাজার, ফরাশগঞ্জ, বানিয়ানগর, আইজি গেট, আরসিন গেট, গেন্ডারিয়া এলাকা সাকরাইনের দিনে যেন নতুন প্রাণ পায়।

সাকরাইনের উৎসব পরিসর এখন ব্যাপক। দিনের প্রথম পর্বে চলে ঘুড়ি কাটাকাটির প্রতিযোগিতা; সাউন্ড সিস্টেমের তালে তালে গানবাজনার মাধ্যমে আনন্দ-উল্লাস চলতে থাকে শীতের মিষ্টি বিকেল জুড়ে।

সন্ধ্যায় শুরু হয় চোখ ধাঁধানো আতশবাজির প্রদর্শনী। লেজার শো আর ‘ডিস্কো লাইট’ এর পাশাপাশি কেউ কেউ কেরোসিন মুখে মশালে ফুঁ দিয়ে অগ্নিকুণ্ড তৈরি করে; সন্ধ্যার আকাশে ঘুড়ির জায়গা নেয় রঙিন ফানুস।

যুগ যুগ ধরে এ উৎসব ধরে রেখেছে পুরান ঢাকার বসবাসকারী মানুষেরা। আজীবন এই উৎসব চলবে এবং দিনকে দিন আরও ব্যাপক পরিসরে পালিত হবে, এই প্রত্যাশা পুরান ঢাকাবাসীদের।

সারাবাংলা/এফএন/ইআ

পুরান ঢাকা সাকরাইন সাকরাইন উৎসব

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর