Wednesday 15 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সিটি মিনিস্টার পদ থেকে টিউলিপের পদত্যাগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৪ জানুয়ারি ২০২৫ ২২:৩৩ | আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ ০০:০১

টিউলিপ সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে দ্য রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, টিউলিপের খালা বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আর্থিক সম্পর্কের বিষয়ে বারবার প্রশ্ন ওঠায় টিউলিপ সিদ্দিক মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।

৪২ বছর বয়সী টিউলিপ সিদ্দিক বারবার কোনো অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। এমনকি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার গত সপ্তাহে বলেছেন যে, ‘টিউলিপের ওপর তার পূর্ণ আস্থা আছে।’

গত জুলাইয়ে দেশটির নির্বাচনের পর টিউলিপ সিদ্দিককে দেশটির আর্থিক পরিষেবা নীতির পোর্টফোলিও হস্তান্তর করা হয়েছিল। সিটি মিনিস্টার হিসেবে অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্বও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

এক বিবৃতিতে টিউলিপ বলেন, ‘আর্থিক বিষয়ক তদন্তে দেখা গেছে যে, আমি মন্ত্রিত্বের আচরণবিধি লঙ্ঘন করিনি। কিন্তু এই অভিযোগ সুরাহা করতে গেলে সরকারি কাজে ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনা আছে। তাই আমি আমার মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে দুর্নীতি ও অর্থপাচারের তদন্ত চলছে। এই তদন্তে তার বোনের মেয়ে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের নাম উঠে এসেছে।

১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলারের পারমাণবিক বিদ্যুৎ চুক্তি সম্পাদনে কোটি কোটি ডলারের আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটি বলছে, এই চুক্তি সম্পাদনে শেখ হাসিনা ও তার বোনের মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে যুক্তরাজ্যে টিউলিপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করছে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের পর্যবেক্ষক স্যার লরি ম্যাগনাস। অভিযোগ আছে, আব্দুল মোতালিফ নামে একজন ডেভেলপার টিউলিপকে উপহার হিসেবে একটি ফ্ল্যাট দিয়েছেন। ওই ফ্ল্যাট ব্যবহার করেছেন টিউলিপ। কিন্তু এ তথ্য গোপন ছিল।

বিষয়টি সামনে আসায় জানা যায়, আব্দুল মোতালিফ হলেন ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার রাজনৈতিক মিত্র। তার সঙ্গে মোতালিফের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। এসব অভিযোগ ওঠার পর গত সোমবার নিরপেক্ষ উপদেষ্টা বা মিনিস্টারিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস স্যার লরি ম্যাগনাসের কাছে গিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করেন টিউলিপ। এক চিঠিতে স্যার লরিকে বলা হয়, তদন্ত উন্মুক্ত। তিনি কোনো অন্যায় করেননি।

এদিকে সানডে টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিকের লন্ডনের সম্পত্তিগুলো তদন্ত করা উচিত। যদি তিনি সেগুলো ‘প্লেইন ডাকাতি’ (সরাসরি ডাকাতি) করে অর্জন করে থাকেন, তবে তা সরকারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত।

টিউলিপ সিদ্দিককে ক্ষমা চাইতে এবং পদত্যাগ করতে আহ্বান জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘তিনি নিজে দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী হয়ে নিজেকে রক্ষা করছেন। হয়তো আপনারা তখন বুঝতে পারেননি, কিন্তু এখন বুঝতে পারছেন।’

এদিকে, তাকে বরখাস্ত করতে স্টারমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন যুক্তরাজ্যের প্রধান বিরোধীদল কনজারভেটিভ পার্টির নেতা কেমি ব্যাডেনোচ। তিনি টিউলিপ সিদ্দিকের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তার এক্স অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট করেন। সেই পোস্টে তিনি লিখেন, ‘স্টারমার ব্যক্তিগত বন্ধুকে দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। যেখানে সিদ্দিক নিজেই দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত। এখন কিয়ার স্টারমারের টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার সময় এসেছে।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/পিটিএম

টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগ যুক্তরাজ্য সিটি মিনিস্টার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর