চীন দুই ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে, যারা নভেম্বর মাসে ভয়াবহ হামলা চালিয়ে একাধিক মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল। এই ঘটনাগুলি ‘সমাজের প্রতি প্রতিশোধমূলক অপরাধ’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, যা দেশটিতে ক্রমবর্ধমান সামাজিক অস্থিরতার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।
রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম সিসিটিভি জানিয়েছে, সোমবার (২০ জানুয়ারি) ফ্যান ওয়েইকু এবং শু জিয়াজিন নামে দুই ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
গতবছর ১২ নভেম্বর ৬২ বছর বয়সী ফ্যান ওয়েইকু তার গাড়ি চালিয়ে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ঝুহাইয়ের একটি ক্রীড়া স্টেডিয়ামের বাইরে ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পড়ে, যার ফলে অন্তত ৩৫ জন নিহত হন। চীনের এক দশকের মধ্যে এটিই ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা। পুলিশ জানায়, বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে হতাশায় ভুগছিলেন ফ্যান।
একই মাসে, ১৪ নভেম্বর পূর্বাঞ্চলীয় শহর উক্সির ইসিং আর্টস অ্যান্ড ক্র্যাফটস ভোকেশনাল অ্যান্ড টেকনিক্যাল কলেজে ২১ বছর বয়সী শু জিয়াজিন ছুরিকাঘাতে ৮ জনকে হত্যা ও ১৭ জনকে আহত করেন। পুলিশ জানায়, শু ঐ স্কুল থেকে পরীক্ষায় পাস করতে ব্যর্থ হন এবং ইন্টার্নশিপের বেতন নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন তিনি।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং স্থানীয় সরকারগুলোকে এই ধরনের হামলা প্রতিরোধে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ডিসেম্বর মাসে ঝুহাই ও উক্সি শহরের মধ্যবর্তী জন আদালত এই মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয় এবং তা সুপ্রিম পিপলস কোর্ট দ্বারা অনুমোদিত হয়।
চীনে পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় সহিংস অপরাধের সংখ্যা কম হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এমন হামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ধরনের ঘটনা শাসক কমিউনিস্ট পার্টির জননিরাপত্তা ও অপরাধ প্রতিরোধের কৌশল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এই হামলাগুলো সামাজিক সমস্যার প্রতি নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে, যেমন অর্থনৈতিক মন্দা, বেকারত্ব বৃদ্ধি ও সামাজিক অগ্রগতির অভাব।
চীন মৃত্যুদণ্ডের পরিসংখ্যানকে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা হিসেবে বিবেচনা করে, তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর বিশ্বাস, দেশটি প্রতিবছর হাজার হাজার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে। ঐতিহ্যগতভাবে গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মৃত্যুদণ্ডের ক্ষেত্রে লিথ্যাল ইনজেকশনও চালু করা হয়েছে।