তালেবান সরকারের এক উচ্চ পর্যায়ের নেতা নারীদের শিক্ষার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন, যা সরকারি নীতির বিরল প্রকাশ্য সমালোচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দক্ষিণ-পূর্ব আফগানিস্তানের খোস্ত প্রদেশে একটি ধর্মীয় বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক উপমন্ত্রী শের আব্বাস স্টানিকজাই বলেন, ‘নারীদের শিক্ষার ওপর নিষেধাজ্ঞার কোনো যুক্তি নেই। অতীতেও এর কোনো যৌক্তিকতা ছিল না, তেমনি ভবিষ্যতেও থাকা উচিত নয়।’
তালেবান সরকার নারীদের শিক্ষা গ্রহণ ষষ্ঠ শ্রেণির পর থেকে নিষিদ্ধ করেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে নারীদের চিকিৎসা প্রশিক্ষণ গ্রহণ এবং কোর্সও বন্ধ করা হয়েছে।
আফগানিস্তানে নারী ও মেয়েরা শুধুমাত্র নারী চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছ থেকে চিকিৎসা নিতে পারেন। তবে চিকিৎসা প্রশিক্ষণের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সরকার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।
স্টানিকজাই একটি ভিডিওতে বলেন, ‘আমরা আবারও নেতৃত্বের কাছে আহ্বান জানাই যেন শিক্ষার দরজা খুলে দেওয়া হয়। আমরা ৪ কোটি মানুষের মধ্যে ২ কোটিকে তাদের সমস্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত করে অন্যায় করছি। এটি ইসলামী আইনের অংশ নয়, বরং আমাদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত বা মানসিকতা।’
স্টানিকজাই একসময় তালেবান দলের প্রধান ছিলেন, যারা বিদেশি সেনাদের আফগানিস্তান থেকে সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের জন্য আলোচনা করেছিল।
এটি প্রথমবার নয় যে তিনি নারীদের শিক্ষার পক্ষে কথা বলেছেন। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে, মেয়েদের স্কুল বন্ধ হওয়ার এক বছর পর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার কয়েক মাস আগে, তিনি একই ধরনের মন্তব্য করেছিলেন।
তবে এইবার তার বক্তব্যে নীতির পরিবর্তনের সরাসরি আহ্বান এবং তালেবান নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার উদ্দেশ্যে আবেদন স্পষ্ট ছিল।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, নারীদের শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকা অবস্থায় তালেবান সরকারের স্বীকৃতি প্রায় অসম্ভব। এছাড়া নারীরা পুরুষ অভিভাবক ছাড়া প্রকাশ্যে চলাফেরা করতেও পারছে না সেখানে।