টোল প্লাজায় দুর্ঘটনা: হতাহতদের ক্ষতিপূরণ দিতে আইনি নোটিশ
২১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:১১ | আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:১০
ঢাকা: ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজায় বাস দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে দেড় কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া আহতদের প্রত্যেককে ৫০ লাখ টাকা এবং গাড়ির ক্ষতিপূরণ বাবদ ২৫ লাখ টাকা দিতে বলা হয়েছে।
গত ২৭ ডিসেম্বর টোল প্লাজায় অপেক্ষমাণ কয়েকটি যানবাহনকে বেপারী পরিবহনের একটি বাস অতর্কিত ধাক্কা দিলে ছয় জন নিহত হন।
ওই ঘটনায় দুর্ঘটনাকবলিত প্রাইভেটকারে আরোহনকারী ও মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার নন্দনকোনা গ্রামের বাসিন্দা আমেনা আক্তারের (৪০) স্বামী নুর আলমের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শামসুর রহমান বাদল ও মো. রিপন হোসাইন আজ এই নোটিশ পাঠিয়েছেন।
সড়ক ও পরিবহন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন, সচিব, সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক, কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ের কান্ট্রি ম্যানেজার, ঢাকা ও মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) এবং পুলিশ সুপার (এসপি), কেরানীগঞ্জের উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও), বেপারী পরিবহনের মালিকপক্ষ, হাইওয়ে পুলিশ সুপার (হাসারা) ও ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা বরাবরে করে এই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশ পাওয়ার তিন দিনের (কার্যদিবস) মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় এর প্রতিকার চেয়ে রিট দায়ের করা হবে।
নোটিশে বলা হয়, সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মানুষের জীবনধারণের অধিকার অন্যতম মৌলিক অধিকার। বাসমালিক, ড্রাইভার, সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ এবং হাইওয়ে পুলিশের চরম অবহেলার কারণেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় এমন মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে, বেপারী পরিবহনের বাসটির ফিটনেস সনদ ছিল না। ড্রাইভারের লাইসেন্সের মেয়াদ অনেক আগেই উত্তীর্ণ হয়েছে। এ ছাড়া ড্রাইভার স্বীকার করেছেন তিনি ক্যানাবিস নামক মাদক সেবন করতেন। কাজেই এটি স্পষ্ট যে বাসের ফিটনেস প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ এবং ড্রাইভারের লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের চরম গাফিলতির কারণে ৬ জন মানুষের মৃত্যু হয়। বাসের ফিটনেস সনদ উত্তীর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল বাসের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা এবং সংশ্লিষ্টদের অবহিত করা।
এ ছাড়া হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্ব ছিল বাসটির ফিটনেস আছে কি না সেটি পরীক্ষা করা এবং সংশ্লিষ্ট ড্রাইভারের বৈধ লাইসেন্স আছে কি না সেটাও নিরীক্ষা করা।
অন্যদিকে বাসের মালিক ফিটনেসবিহীন বাস রাস্তায় নামিয়ে এবং বৈধ লাইসেন্স ছাড়া ড্রাইভারকে দিয়ে বাস চালিয়ে চরম বেআইনি কাজ করেছেন। কাজেই সবার পারস্পারিক অবহেলার ফলাফল এই দুর্ঘটনা। যার কারণে ৬ জন ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা তাদের একান্ত কর্তব্য ছিল।
পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে বিষয়টি স্পষ্ট যে, সংশ্লিষ্টদের চরম অবহেলার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
সারাবাংলা/কেআইএফ/ইআ