Sunday 02 Feb 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

লে-অফ প্রত্যাহার করে বেক্সিমকো গ্রুপের সকল কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৩ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:০০ | আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৫১

ঢাকা: লে-অফ প্রত্যাহার করে বেক্সিমকোর গার্মেন্টস ডিভিশনের সকল কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বেক্সিমকোর কর্মীরা। একইসঙ্গে রফতানি বাণিজ্য শুরু, বিদেশিদের কার্যাদেশ প্রাপ্তির সুবিধার্থে ব্যাংকিং কার্যক্রম এবং ব্যাক টু ব্যাক এলসি খোলার অনুমতি দিয়ে কারখানা ও ব্যবসা চলমান রেখে সকল বকেয়া বেতন এবং কোম্পানির দায়-দেনা পরিশোধের দাবি জানিয়েছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ সব দাবি জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে বেক্সিমকো ফ্যাশন লিমিটেডের অ্যাডমিন বিভাগের প্রধান সৈয়াদ মো. এনাম উল্লাহ ও বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের অ্যাডমিন বিভাগের প্রধান আব্দুল কাইয়ুম বক্তব্য রাখেন।

সৈয়াদ মো. এনাম উল্লাহ লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে বেক্সিমকো গ্রুপের গার্মেন্টস ও এর সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এই গুলোতে কর্মরত প্রায় ৪২ হাজার চাকুরীজীবীকে লে-অফের আওতায় জনতা ব্যাংকের ঋণ সুবিধায় জানুয়ারি-২০২৫ পর্যন্ত বেতনাদি প্রদান করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এই বিশাল জনবলকে আর কোনো প্রকার আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা হবে না। যার প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ১৬টি কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাবে এবং এগুলোতে কর্মরত প্রায় ৪২ হাজার কর্মজীবী মানুষ চাকরি হারাবেন। সেই সাথে এই ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ককে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়ি ওয়ালা, দোকানদার, অটোরিকসা চালক, স্কুল-মাদ্রাসা-কিন্ডার গার্ডেন বন্ধ হয়ে যাবে, যার সাথে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আছে প্রায় ১০ লাখ মানুষের জীবন ও বেঁচে থাকার সকল মৌলিক চাহিদা।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘বেক্সিমকোর মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন এবং বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গ্রুপ বন্ধ হয়ে গেলে ৪২ হাজার কর্মজীবী মানুষ চাকরি হারাবে। তাদের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রায় ২ লাখ পরিবারের সদস্য এবং এই শিল্প ও কর্মজীবীদের কেন্দ্র করে গড়ে উঠা কর্মসংস্থানের আরও প্রায় ৮ লাখ মানুষের রিজিক বন্ধ হয়ে যাবে। এই ৪২ হাজার কর্মজীবী মানুষের মাঝে প্রায় ২ হাজার প্রতিবন্ধী, শতাধিক তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ এবং ৫ হাজারের মতো ষাটোর্ধ ব্যক্তি রয়েছেন, যাদেরকে আমরা পরম মমতায় আরও যত্নে সমাজ ও পরিবারের বোঝা হওয়া থেকে রক্ষা করছি। সরকারের সিদ্ধান্তের যদি কোনো পরিবর্তন না হয়, তাহলে এরা সবাই মানবেতর জীবনের দিকে এগিয়ে যাবে। সেই সাথে প্রায় ৪২ হাজারের নতুন বেকার এবং ব্যবসা-বাড়িভাড়া বঞ্চিত লাখো মানুষ নৈরাজ্য আর অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে গিয়ে নতুন সংকট তৈরি করবে।’

সংবাদ সম্মেলন থেকে লে-অফ প্রত্যাহার করে ১৬টি বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে বলা হয়, বেক্সিমকো শুধু বাংলাদেশে নয়, এশিয়া মহাদেশের একটি বড় ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রুপ এবং শুধু মাত্র বেক্সিমকো গার্মেন্টস ডিভিশনই আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিমাসে প্রায় ৩০ লাখ ডলারের পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশের রফতানি আয়ে প্রধান ভূমিকা পালন করত। আজ সেই গার্মেন্টস ও সংশ্লিষ্ট কারখানাগুলোকে বন্ধ ও ব্যাংকিং সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রাখায় সরকার ও জনগণ সেই বিশাল বৈদেশিক মুদ্রা আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যা আমাদের জাতীয় আয় ও রিজার্ভ ঘাটতির অন্যতম কারণ।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের অ্যাডমিন বিভাগের প্রধান আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘বেক্সিমকোর যে পরিমাণ ঋণ রয়েছে তা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে আদায় করা সম্ভব না। এই ঋণ আদায় করতে হলে প্রতিষ্ঠান চালু রাখতে হবে। এ লক্ষ্যে আমরা বেশকিছু প্রস্তাবও দিয়েছি। এর মধ্যে একটি প্রস্তাব ছিল ২৩ একর জমি বন্ধক রেখে ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দেয়া। এই ঋণ চাওয়া হয় ৪ মাসের জন্য। এই ঋণ দেয়া হলে আমরা কার্যক্রম পরিচালনা করে বকেয়া ঋণও পরিশোধ করতে পারবো। সেক্ষেত্রে বছরে ৪০০ কোটি টাকার মতো বকেয়া ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব, এ ধরনের একটি প্ল্যানও আমরা দিয়েছি।

সারাবাংলা/জিএস/এমপি

বকেয়া বেতন বেক্সিমকো লে-অফ প্রত্যাহার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর