মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইসরায়েল ও মিশর বাদে অন্যান্য বিদেশি সাহায্য প্রকল্পের জন্য প্রায় সব নতুন তহবিল স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) আল-জাজিরায় প্রচারিত সংবাদে এ তথ্য প্রকাশ হয়েছে।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর থেকে জারি করা আদেশে বলা হয়েছে, জরুরি খাদ্য কর্মসূচির জন্য কিছু ব্যতিক্রম থাকবে, তবে স্বাস্থ্য কর্মসূচির জন্য কোনো সাহায্য তহবিল থাকবে না। নতুনভাবে নিশ্চিত হওয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও নির্দেশ দিয়েছেন, ‘যতদূর আইনে সম্ভব, বিদেশি সাহায্যের জন্য কোনো নতুন তহবিল বরাদ্দ করা হবে না।’
এই সিদ্ধান্তে মানবিক সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, কারণ এটি বৈশ্বিক অস্থিরতা এবং জীবনহানির কারণ হতে পারে বলে তাদের আশঙ্কা।
বিদেশি উন্নয়ন সহায়তা স্থগিত করে, ট্রাম্প প্রশাসন সংকটে থাকা কমিউনিটিগুলোর জীবন ও ভবিষ্যৎকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অক্সফাম আমেরিকার প্রধান অ্যাবি ম্যাক্সম্যান।
এই সাময়িক স্থগিতাদেশ কমপক্ষে তিন মাস স্থায়ী হবে বলে জানানো হয়েছে। প্রথম ৮৫ দিনের মধ্যে রুবিও বিদেশি সহায়তার কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া, পরিবর্তন আনা বা বাতিল করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
স্বাস্থ্য কর্মসূচিগুলোর মধ্যে প্রেসিডেন্টের জরুরি এইডস ত্রাণ পরিকল্পনা (পিইপিএফএআর)-এর তহবিলও স্থগিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ২০০৩ সালে জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রশাসনের অধীনে চালু হওয়া এই কর্মসূচি দুই দশক ধরে দ্বিদলীয় সমর্থন উপভোগ করলেও ২০২৩ সালে এর তহবিল নবায়নে কংগ্রেস ব্যর্থ হয়। একটি এক বছরের মেয়াদে থাকলেও তা ২০২৫ সালের মার্চে শেষ হবে, যা এই তিন মাসের মধ্যে পড়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পিইপিএফএআর শুরু হওয়ার পর থেকে তা ২৫ মিলিয়ন জীবন রক্ষা করতে সাহায্য করেছে।
তবে ইসরায়েল ও মিশরের জন্য সাহায্য এই স্থগিতাদেশ থেকে বাদ রাখা হয়েছে। এই দুই দেশ মার্কিন সামরিক সহায়তার বড় অংশ পায়। যদিও তাদের মানবাধিকার রেকর্ড নিয়ে সমালোচনা রয়েছে এবং মার্কিন সহায়তার পরিবর্তে বড় ধরনের সংস্কারের দাবি উঠেছে।
শুক্রবারের (২৪ জানুয়ারি) মেমোতে ইসরায়েল ও মিশরের বিদেশি সামরিক তহবিল এবং প্রশাসনিক খরচ, যার মধ্যে বেতনও অন্তর্ভুক্ত, পরিচালনা করার জন্য বিশেষ ছাড় উল্লেখ করা হয়েছে।
ইউক্রেনের জন্য একই ধরনের কোনো ব্যতিক্রম রাখা হয়নি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইউক্রেন প্রধানত মার্কিন অস্ত্র সহায়তার উপর নির্ভর করছে।
২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ৬০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিদেশি সহায়তা খরচ করেছিল, যা অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় বেশি। তবে এটি যুক্তরাষ্ট্রের মোট সরকারি ব্যয়ের মাত্র ১ শতাংশ।
শুক্রবারের (২৪ জানুয়ারি) মেমোর পর বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সাহায্য প্রকল্পগুলো বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।