Wednesday 02 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রশিক্ষণ সেমিনারে বক্তারা
‘সংবাদ মাধ্যমে জেন্ডার সংবেদনশীল শব্দ ব্যবহার করতে হবে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৫ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:৪৬ | আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২৫ ২৩:৩৩

শনিবার ‘জেন্ডার সেনসেটিভ রিপোর্টিং ফর জার্নালিস্টিস অ্যান্ড উইমেন হিউম্যান রাইটস ডিফেনডার’ শীর্ষক এক প্রশিক্ষণ সেমিনারের আয়োজন করে ‘ভয়েস ফর ইন্টারএ্যাকটিভ চয়েজ অ্যান্ড ইমপাওয়ারমেন্ট (ভয়েস)

ঢাকা: অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে জেন্ডার সমতার বিকল্প নেই। শুধু নারী-পুরুষের অধিকারই নয়, অন্য লিঙ্গের মানুষের সমঅধিকারের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। মানুষের মানবাধিকার রক্ষা করা না গেলে মানুষ পূর্ণাঙ্গ হতে পারে না। এক্ষেত্রে গণমাধ্যম বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে। তবে সংবাদ লেখা ও পরিবেশনের ক্ষেত্রেও জেন্ডারের স্পর্শকাতরতা এবং ভাষার বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের মনে রাখা জরুরী।

শনিবার ‘জেন্ডার সেনসেটিভ রিপোর্টিং ফর জার্নালিস্টিস অ্যান্ড উইমেন হিউম্যান রাইটস ডিফেনডার’ শীর্ষক এক প্রশিক্ষণ সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

রাজধানীর লালমাটিয়ায় এনজিও ফোরাম কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এর আয়োজন করে ‘ভয়েস ফর ইন্টারএ্যাকটিভ চয়েজ অ্যান্ড ইমপাওয়ারমেন্ট (ভয়েস)’।

বিজ্ঞাপন

বক্তারা বলেন, আজ সমাজে পরিবর্তন আসছে। অনেক গণমাধ্যমের শীর্ষে নারীরা আসছেন। এছাড়া ব্যাংক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, খেলাধুলাসহ প্রায় সব স্তরেই নারীদের শক্ত বিচরণ দেখা যাচ্ছে। সমাজের দৃষ্টি ভঙ্গির অনেক পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু এর পরেও জেন্ডার সমতার বিষয়টি এখনো অনেক ক্ষেত্রে উপেক্ষিত থাকছে। এটি কাম্য নয়।

সংবাদ লেখার ক্ষেত্রে বখাটে,শ্লীলতাহানি ও ইভ টিজিং এর মতো ভাষার ব্যবহার অহরহ হচ্ছে। কিন্তু এই ভাষাগুলোর অস্পষ্টতা রয়েছে। সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে না। এক্ষেত্রে দেখা যায় যে, নিপীড়ক ব্যক্তি যিনি কথায় বা ইশারা ইঙ্গিতে বা গায়ে হাত দিয়ে কিংবা ধর্ষণের মাধ্যমে নারীকে যৌন হয়রানি করেন। কিন্তু তার পরিচয় হিসেবে সংবাদ মাধ্যমগুলো বিশেষণবাচক শব্দ ‘বখাটে’ ব্যবহার করে। এদিকে যিনি যৌন নির্যাতনের শিকার- তাকে বলা হয় শ্লীলতাহানির শিকার। কিন্তু এগুলোর আভিধানিক অর্থ দেখা হয় না। এই ভাষার অস্পষ্টতা দূর করতে হবে। পাশাপাশি নারীকে নিয়ে সংবাদ লেখার সময় নামের আগে বিভিন্ন বিশেষণ যুক্ত করা হয়। যেমন সুন্দরী, কিশোরী, চরিত্রহীনতা, সম্মানহানি, সম্ভ্রমহানি, পতিতা, ফস্টি-নষ্টি, দেহ মিলন ইত্যাদি শব্দ। এগুলো ব্যবহার পরিহার করতে হবে। সংবাদ লেখার সময় অবশ্যই গণমাধ্যমকর্মীদের জেন্ডার সংবেদনশীল শব্দ ব্যবহার করতে হবে। যাতে নির্যাতিত নারীর সম্মানে কোনভাবেই আঘাত না লাগে।

বক্তারা বলেন, নারীর প্রতি প্রচলিত পুরুষতান্ত্রিক সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে গিয়ে নারীর অবস্থা ও অবস্থানের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে হবে। অর্থনৈতিক,সামাজিক, সাংস্কৃতিক, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার ভেদে পুরুষ ও নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব মানুষ সমানভাবে স্বাধীনতা এবং সমান মর্যাদা ভোগ করবে। সব কাজে নারী-পুরুষ সমানভাবে অংশগ্রহণ করবে। তাহলেই সমাজে ও দেশে ন্যায্যতা নিশ্চিত হবে। পাশাপাশি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

এদিকে জাতীয় বাজেট প্রণয়নের সময় জেন্ডার বাজেট আলাদা করে তৈরি ও তা বাস্তবায়নে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। কেননা অর্থনৈতিকভাবে সমতা নিশ্চিত করা না গেলে এর নেতিবাচক প্রভাব অনেক ক্ষেত্রেই পড়বে।

প্রশিক্ষণ সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ভয়েসের নির্বহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ, রাইটস অ্যান্ড জেন্ডার ইস্যুর ফ্রিল্যান্স কনসালটেন্ট সানিয়া ফাহেম আনসারী, অ্যাসিসট্যান্ট প্রফেসর আফরোজা সোমা, আমার দেশের ডেপুটি এডিটর সুলতান মাহমুদ বাদল, রাইটস এক্টিভিস্ট শেখ মঞ্জুর-ই-আলম এবং ভয়েস এর প্রজেক্ট ম্যানেজার প্রমিতি প্রভা চৌধুরী।

সারাবাংলা/জেজে/আরএস

গণমাধ্যম জেন্ডার সমতা নারী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর