Monday 27 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জন্মদিনে প্রিয়জনদের শুভেচ্ছায় সিক্ত মির্জা ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:১৩ | আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:৫৩

জন্মদিনে প্রিয়জনদের শুভেচ্ছায় সিক্ত মির্জা ফখরুল। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: ৭৮তম জন্মদিনে ভোর থেকেই শুভাকাঙ্ক্ষী-প্রিয়জনের শুভেচ্ছায় সিক্ত বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) ৭৭ বছর পূর্ণ করে ৭৮ বছরে পা দিয়েছেন তিনি। ১৯৪৮ সালের এই দিনে ঠাকুরগাঁওয়ে তার জন্ম।

জন্মদিনে শুভেচ্চা ফোনালাপে গণমাধ্যমকে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বুড়ো হয়ে গেছি এখন তো বিদায়ের প্রান্তে। তারপরও মনের ভেতরে যে স্বপ্ন, যে প্রত্যাশা, তা কিন্তু চিরঞ্জীব আছে, সেটা হচ্ছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে। বয়সের এই প্রান্তে এসে এই বিশ্বাসটুকু আমি করি। আমাদের রাজনৈতিক যে সংকটগুলো, যে চ্যালেঞ্জগুলো তা অধিকাংশই সমাধান করা সম্ভব হবে এবং বাংলাদেশ গণতন্ত্র ফিরে যাবে সেই প্রত্যাশায় আছি আর কি।’

শরীরটা ভালো যাচ্ছে না’ জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এবার আমার গোটা পরিবারই ঢাকায়। একসাথে এবার এই দিনটি কাটছে।’

জন্মদিন নিয়ে নিজের অনুভূতি কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জন্মদিন আমি আসলে পালন করি না। ৭৭ বছর বয়স পেরুলাম। বলতে পারেন একটা লং জার্নি। এই ৭৭ বছরে বহু পরিবর্তন দেখেছি, বহু ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছি, বহু জীবন দেখেছি, অনুপ্রাণিত হয়েছি। বেঁচে থাকার অর্থ খুঁজে পেয়েছি। এখন যাওয়ার পালা। তবে, আশা এখন একটাই, প্রত্যাশা বাংলাদেশ গণতন্ত্রের দিকে যাবে, গণতন্ত্র ফিরে পাবে। এই গণতন্ত্রের জন্য আমাদের দেশের মানুষ, আমাদের বিএনপির লাখ লাখ নেতা-কর্মী যে আত্মত্যাগ করেছে, যে নিপীড়ন, নির্যাতন ভোগ করেছে, গুম-খুনের শিকার হয়েছে, নির্মমতার মুখে পড়েছে এই রকম চিত্র আপনি কোথাও খুঁজে পাবে না, নজিরবিহীন। এগুলো থেকে দেশর মানুষ পরিত্রাণ পাবে, এটাই প্রত্যাশা।’

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘সকালে ঘুম ভেঙে দুই মেয়ের ‘হ্যাপি বার্থ ডে’ শুনে, আমার নাতি-নাতনিরাও উইশ করেছে নানাকে, এটা অন্যরকম এক আনন্দ। ২৬ জানুয়ারি জন্মদিনের প্রথম প্রহর থেকেই বন্ধু, স্বজন, নেতাদের অনেকে টেলিফোন করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সকাল বেলা স্ত্রী রাহাত আরা বেগমও এক কাপ চা দিয়ে জন্মদিনের উইশ করেছেন। লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, সিনিয়র নেতারাও টেলিফোন করেছেন।’’

ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন শাখার সভাপতি এবং এসএম হল শাখার নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে শিক্ষাগত পেশায় যোগ দেন। তিনি ঢাকা কলেজে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ছিলেন।

১৯৮৬ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে সক্রিয় রাজনীতিতে আসেন মির্জা ফখরুল। ১৯৮৮ সালে ঠাকুরগাঁও পৌর সভার প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান হন। ছাত্র জীবনের বাম রাজনীতি থেকে মির্জা ফখরুলের জাতীয় রাজনীতিতে হাতেখড়ি মজলুম জননেতা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর দল ন্যাপে। সেখান থেকেই তার বিএনপিতে আসা।

মির্জা ফখরুলের বিএনপির রাজনীতির শুরুটা একেবারে তৃণমূল থেকে। প্রথমে ১৯৯২ সালে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি দিয়ে। পরে দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য থেকে শুরু করে মির্জা ফখরুল সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, ২০১১ সাল থেকে দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এবং ২০১৬ সালে ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে মহাসচিব নির্বাচিত হন তিনি।

বিজ্ঞাপন

বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃত্বে আসার আগে তিনি জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের প্রথম সহসভাপতি এবং পরে সভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন দীর্ঘদিন।

ঠাকুরগাঁও আসনে বিএনপি থেকে দুই বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি এবং এবং খালেদা জিয়ার সরকারের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে উপপ্রধানমন্ত্রী এস এ বারীর একান্ত সচিবও ছিলেন।

২০১৮ সালে একাদশ নির্বাচনে বগুড়া-৬ আসন থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু বিতর্কিত ওই নির্বাচনে জেতার পরও তিনি শপথ নেননি। নীতিনৈতিকতার প্রশ্নে দেশের বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক সবার কাছে অনুকরণীয় হয়ে উঠেছেন।

সারাবাংলা/এজেড/এমপি

বিএনপি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর