ঢাকা: তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে। ইতোমধ্যে সম্মেলনের আলোচ্যসূচি প্রায় চূড়ান্ত করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। বিভিন্ন বিষয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে জেলা প্রশাসকদের পক্ষ থেকেও। ৩শ’রও বেশি প্রস্তাব উঠছে এবারের ডিসি সম্মেলনে।
সম্মেলনের প্রস্ততির বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব ( জেলা ও মাঠ প্রশাসন অধিশাখা) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান সারাবাংলাকে বলেন, এবার ডিসি সম্মেলন হবে তিনদিনের। সম্মেলন ঘনিয়ে আসলেও এখনো ডিসিদের পক্ষ থেকে প্রস্তাব আসছে। আমরা সেগুলো পর্যালোচনা করে আলোচ্যসূচি তৈরি করছি।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত বছর ডিসি সম্মেলন হয়েছিলো চার দিনব্যাপী। নিয়ম অনুযায়ী, সম্মেলনের আগেই জেলা প্রশাসকরা মাঠ পর্যায়ের সমস্যা সমাধান ও চ্যালেঞ্জ উত্তরণে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রস্তাব পাঠান। অধিবেশনের সময় এগুলো ছাড়াও ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনাররা তাৎক্ষণিক বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন। এ প্রস্তাবগুলো নিয়ে সম্মেলনে কার্য-অধিবেশনগুলোতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে আলোচনা হয়। আলোচনার পর মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো যে প্রস্তাব বাস্তবায়নযোগ্য মনে করবে সেগুলো বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিয়ে থাকে।
সূত্রমতে, এবার দেশের সকল জেলা প্রশাসকদের কাছ থেকে ৩ শতাধিক প্রস্তাব এসেছে। যা সম্মেলনে উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের কাছে উপস্থাপন করা হবে। এর মধ্যে ডিসিদের অধীনে বিশেষ ফোর্স গঠন, পুলিশের কার্যক্রম মূল্যায়ন এবং পুলিশসহ জেলার অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন (এসিআর) প্রণয়নের দায়িত্ব প্রদান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক আনসার নিয়োগের প্রস্তাব থাকছে।
এছাড়া প্রস্তাবে মোটা দাগে আরো থাকছে, ভূমি ব্যবস্থাপনা, ইজাড়া, জলমহাল, বালুমহাল, মৎস আহরণ, টেটা যুদ্ধ দমন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নরসিংদীর ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে আলাদা থানা গঠন, মোবাইল কোর্ট আইনের বিধিমালা তৈরি, কর্তব্যরত অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বাধ্যতামূলক বডি ক্যামেরা ব্যবহার নিশ্চিত করা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মত জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
উল্লেখ্য, সরকারের নীতিনির্ধারক এবং জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের মধ্যে মুখোমুখি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রতি বছর ডিসি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এবারও সম্মেলনের কার্য অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে। ডিসি সম্মেলনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে ডিসিদের কার্য-অধিবেশন এর বাইরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মুক্ত আলোচনা এবং রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও একটি সমাপনী অনুষ্ঠান থাকবে। সম্মেলন শেষ হবে ১৮ ফেব্রুয়ারি।