Tuesday 28 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চরমোনাই পীরের ১ বছরের কথা শুনেই হাঁটতে শুরু করলেন ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:৩৪ | আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:২৭

ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ রেজাউল করীম ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ঢাকা:  কতদিনের মধ্যে নির্বাচন চান- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ রেজাউল করিম বলেছেন, ‘‘খুব বেশি সময় না নিয়ে, যৌক্তিক… সেই যৌক্তিক সময়টা আমরা বলেছি এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে— এই রকম একটা কথা আমরা বলেছি। ছয় মাস তো চলেই গেল। আর এক বছরের মধ্যেই সুন্দর একটা জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) করবে। মূলত এটাই আমাদের কথা।’’

চরমোনাই পীর তখনো কথা শেষ করেন নি। এরইমধ্যে বিএনপির মহাসিচব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার দিকে এগিয়ে এসে দ্রুত ক্যামেরার সামনে থেকে সরে পড়ার তাগিদ দিয়ে নিচু স্বরে বলেন, ‘‘আপনি শেষ করে দিন’’।- এ কথা বলেই সাংবাদিকরা যাতে তাকে কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ না পান, সেজন্য হাঁটতে শুরু করেন মির্জা ফখরুল।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ ঘটনার অবতারণা হয়। এর আগে, সেখানে বৈঠক করেন বিএনপির মহাসিচব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।

তাদের সঙ্গে ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতুল্লাহ বুলু, ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান ও যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম।

বৈঠকে শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লিখিত সিদ্ধান্তগুলো তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আজকের আলোচনায় আমরা মোটুমুটি একমত হয়েছি যে, ১. আধিপত্য-বাদ, সম্প্রসারণ-বাদ ও সাম্রাজ্যবাদ মুক্ত স্বাধীন সার্বভৌম টেকসই গণতান্ত্রিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা, ২. দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি ও টাকা পাচারকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা, ৩. ভোটাধিকারসহ সকল মানবাধিকার রক্ষায় জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলা, ৪. নুন্যতম প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করা, ৫. দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ এবং সকল অধিকার বঞ্চিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা এবং আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক করে নিয়ে আসা, ৬. আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল শক্তি দেশ পুনর্গঠনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা, ৭. ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে আঘাত করে কথা না বলা, ৮. আগামীতে যাতে আওয়ামী লীগের মতো আর কোনো ফ্যাসিবাদী শক্তি ক্ষমতায় আসতে না পারে, সে ব্যাপারে রাজনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকা, ৯. ইসলামী শরিয়াহ্বিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়া এবং ইসলামবিরোধী কোনো কথা কেউ না বলা এবং ১০. প্রশাসনে বিদ্যমান আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসরদের দ্রুত অপসারণ করা।

বিজ্ঞাপন

লিখিত এ বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের সুযোগ না দিয়েই চরমোনাই পীরকে মাইক ছেড়ে দেন মির্জা ফখরুল। এ সময় চরমোনাই পীর বলেন, ‘‘আলোচনা শেষে এই বিষয়গুলোই নিয়েই আমরা ঐক্যমতে পৌঁছেছি এবং আপনাদের সহযোগিতা আমরা কামানা করছি। আমরা যেন সুন্দর একটা দেশ গঠন করতে পারি। সে ব্যাপারে আপনাদের সহযোগিতা ও আন্তরিকতাও আমরা চাচ্ছি। যে কথাগুলো আমাদের হয়েছে, সেগুলোর জিস্ট ব্যাপারটা আপনাদের সামনে বিএনপির মহাসচিব উপস্থাপন করেছেন। সেটাই আমাদের কথা।’’

উল্লেখ্য, যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকারকে ক্রমাতগত চাপ দিয়ে আসছে বিএনপি। অন্যদিকে ইসলামী আন্দোলন চায়, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করেই নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। নইলে আগামী নির্বাচনও অতীতের মতো প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন হবে।

নির্বাচন নিয়ে দুই দলের এই বিপরিতমুখী অবস্থানের মধ্যেই ইসলামী আন্দোলনের আমিরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠক শেষে আয়োজিত যৌথ বিবৃতিতেও বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে উঠল।

সারাবাংলা/এজেড/ইআ

ইসলামী আন্দোলন চরমোনাই পীর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মুফতি সৈয়দ রেজাউল করিম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর