Thursday 30 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঘন ঘন পিডি পরিবর্তনের ধাক্কা সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজে

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৩০ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:০০ | আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ ০৩:০৭

সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ – ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ঘন ঘন প্রকল্প পরিচালক (পিডি) পরিবর্তনের ধাক্কা লেগেছে সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে। প্রকল্পের বাস্তবায়ন ধীর হওয়ায় এর মেয়াদ এক বছর বাড়ানোর (২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত) প্রস্তাব করা হয়েছে। গত ২০১৮ সালে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের মেয়াদ ইতোপূর্বে একবার বাড়ানো হয়েছিল।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত প্রকল্পের স্টিয়ারিং কমিটির (পিএসসি) সভায় উপস্থাপিত সংশোধনীতে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনার জন্য এ সভার আয়োজন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

বৈঠকে জানানো হয়,  এ প্রকল্পের শুরু থেকে গত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ক্রমপুঞ্জিভূত ব্যয় হয়েছে ৫৯৯ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ৫৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ এবং ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৮৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ। চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের এডিপিতে (বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি) প্রকল্পটির অনুকূলে বরাদ্দ রয়েছে ৫০১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এর বিপরীতে গত ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৪৩ কোটি ৪৬ লাখ ৭৯ হাজার টাকা।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, সভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) গত পিএসসি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ৩০ জুনের মধ্যে হাসপাতালের আউটডোর এবং ৩১ ডিসেম্বরর মধ্যে হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজ চালু, জনবল নিয়োগ এবং চিকিৎসা যন্ত্রপাতি (হাসপাতাল এ নার্সিং কলেজ) ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি সরবরাহের জন্য দরপত্র আহবান না হওয়ার কারণ জানতে চান।

জবাবে প্রকল্প পরিচালক জানান, ঘন ঘন প্রকল্প পরিচালক পরিবর্তন হওয়ায় জনবল নিয়োগ এবং যন্ত্রপাতি সংগ্রহের জন্য দরপত্র আহবান করা যায়নি। এছাড়া অবকাঠামোগত কাজ পুরোপুরি শেষ না হওয়ায় হাসপাতালের আউটডোর ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ চালু করা সম্ভব হয়নি।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরো জানান, হাসপাতাল ভবনটি বেইজমেন্টসহ ৮ তলা ভিত বিশিষ্ট ৮ তলা ভবন যার বেড সংখ্যা ৫০০। একাডেমিক ভবনটি বেজমেন্টসহ ৯ তলা ভবন। এছাড়া প্রকল্পে ছাত্র- ছাত্রী হোস্টেল, নার্সিং একাডেমিক ভবন, নার্সিং হোস্টেল, ইন্টার্ন ডক্টরস ডরমেটরি (পুরুষ এবং মহিলা), সিঙ্গেল ডক্টরস ডরমেটরি, অডিটরিয়াম, প্রিন্সিপাল ও ডাইরেক্টরস ভবন (পুরুষ এবং মহিলা) ইত্যাদি ভবন নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। মেডিকেল কলেজ একাডেমিক ভবনটি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর না হলেও  সেখানে বর্তমানে ক্লাস চলছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে দিরাই রোডে একটি ব্রীজ নির্মাণ হচ্ছে। এই ব্রিজের এপ্রোচ রোডের নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নার্সিং কলেজ ক্যাম্পাসের গেইট ও রাস্তা নির্মাণ, হাসপাতালের ইমার্জেন্সীর সামনের রাস্তা ও গেইটের নির্মাণ কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না। কেননা, ব্রিজের উচ্চতার সঙ্গে এ কাজগুলোর সম্পর্ক রয়েছে।

প্রকল্প পরিচালক আরো বলেন, হাসপাতালের লিফটের এলসি খুলতে বেশ কিছুটা সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। অবশেষে এলসি খোলা সম্ভব হয়েছে। লিফটগুলো বর্তমানে ম্যানুফেকচারিং পর্যায়ে রয়েছে। প্রকল্পে পৌঁছাতে আরো সাত-আট মাসের মত সময় লাগবে। এছাড়া প্রকল্প এলাকার আশেপাশে কোন জ্বালানি গ্যাস লাইন না থাকায় প্রায় ১৩ কিলোমিটার দূরে সুনামগঞ্জ শহর থেকে জালালাবাদ গ্যাসের লাইন নিয়ে আসতে হবে, যা সময় সাপেক্ষ এবং ব্যয়বহুল।

তিনি জনান, সুনামগঞ্জ শহর থেকে ডেডিকেটেড প্রাকৃতিক গ্যাসের লাইন প্রকল্প এলাকা পর্যন্ত নিয়ে আসতে হলে প্রায় ১৭ থেকে ১৮ কোটি টাকার প্রয়োজন হতে পারে। আরডিপিপিতে গ্যাস লাইনের জন্য ২ কোটি ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ গ্যাস লাইন সংযোগ দিলে এবং এ খাতে অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হলে প্রকল্পের অনাবাসিক খাতে বরাদ্দ করা অব্যয়িত অর্থ দ্বারা ব্যয়ের সংস্থান করা যাবে।

অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) গ্যাস লাইন নির্মাণের বিষয়ে জালাগাবাদ গ্যাস কোম্পানি থেকে লিখিত প্রাক্কলন সংগ্রহ করে  পিএসসি’র পরবর্তী সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করতে বলেন।

বৈঠকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের  মহাপরিচালক ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া দ্বিতীয়বার আরো এক বছর মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে মত দেন।

সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, বেসরকারি গ্যাস কোম্পানি ওমেরার সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রকল্পের নির্ধারিত বাজেটের মধ্যে হাসপাতালের ক্যাম্পাসে সিলিন্ডার ভিত্তিক লোকাল প্ল্যান্ট স্থাপন করে দিতে পারবে। এক্ষেত্রে বাড়তি অর্থে প্রয়োজন পড়বে না।

অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) বলেন, বেসরকারি কোম্পানি দ্বারা সিলিন্ডার ভিত্তিক প্লান্ট স্থাপন করা হলে নিরাপত্তা ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকবে, এছাড়াও রিফিলের ব্যয় বাড়বে। ফলে দীর্ঘ মেয়াদে হাসপাতালটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পাইপলাইন ভিত্তিক গ্যাস লাইন স্থাপনের পক্ষে মত দেন তিনি।

সারাবাংলা/জেজে/আরএস

সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর