চাকরির প্রলোভনে নিরপরাধ ‘আজির’ আসামি সেজে ধরা
২৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:৫২ | আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:৫৫
চট্টগ্রাম ব্যুরো: মামলার আসামির নাম মো. নজিব উদ্দিন। দেড় মাস আগে এ নামে একজন আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করলে কারাগারে পাঠানো হয়। কারা কর্তৃপক্ষ যাচাইবাছাই করে নিশ্চিত হয় তিনি নজিব নন, ওই আসামির নাম ‘আজির উদ্দিন’। শেষপর্যন্ত আদালতের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে বিচারক নিজে বাদী হয়ে আজিরসহ দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হক বাদী হয়ে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর সিদ্দিকের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- আজির উদ্দিন ও নাজমুল হোসেন। উভয়ে কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার বালাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী নুর-ই খোদা সারাবাংলাকে বলেন, ‘আজির উদ্দিনকে সোমবার আদালতে হাজির করা হয়েছিল। তাকে আদালতের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে দায়ের মামলায়ও গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। নাজমুল পলাতক আছেন। তার বিরুদ্ধে আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।’
আদালত সূত্রে জানা গেছে, নাজমুল হোসেন ও নজিব উদ্দিন আপন ভাই। তারা ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ থানায় দায়ের হওয়া প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের একটি মামলার আসামি। ওই মামলায় ২০২৪ সালের ১০ ডিসেম্বর আসামি ‘নজিব উদ্দিন’ সেজে আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন আবেদন করেন ‘আজির উদ্দিন’। আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান।
কারাগারে নেয়ার পর জাতীয় টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের ডাটাবেইজে তথ্য যাচাই করে কারা কর্তৃপক্ষ দেখতে পান, ‘আজির উদ্দিন’ জামিন আবেদনে নিজেকে ‘নজিব উদ্দিন’ পরিচয় দিয়েছেন। কারাগার থেকে এ প্রতারণার ঘটনা অবহিত করে চিঠি পাঠানো হয় আদালতে।
আদালতের নির্দেশে সোমবার আজির উদ্দিনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। প্রতারণার ঘটনা স্বীকার করে আজির আদালতে জবানবন্দি দেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, নাজমুল হোসেন তাকে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ‘নজিব’ সেজে আদালতে আত্মসমর্পণের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। নাজমুলের কথামতো ও যোগসাজশে তিনি এ প্রতারণা করেছেন।
সোমবার দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামি নজিব উদ্দিন না হয়েও ওকালতনামায় ‘নজিব’ হিসেবে স্বাক্ষর করেছেন আজির উদ্দিন। নাজমুল ও আজির পরস্পর যোগসাজশে আদালতে জাল ওকালতনামা দিয়েছেন যা দণ্ডবিধির ২০৫ ও ৪৬৬ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. সেলিম আনছার খান জামিন আবেদনের জন্য আদালতের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি জামিনের আবেদন প্রত্যাহারের আবেদন করেন। আদালত ‘জামিনের দরখাস্ত উত্থাপিত হয়নি’ মর্মে আইনজীবীর আবেদন মঞ্জুর করেন।
সারাবাংলা/আরডি/এসআর