ঢাবি উপাচার্য বরাবর শিক্ষক সমিতির বক্তব্য প্রত্যাখ্যান সাদা দলের
২৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:০১ | আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:২৩
ঢাবি: উপাচার্য বরাবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির দেওয়া চিঠির বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে ঢাবির জাতীয়তাবাদী মতাদর্শের শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সংগঠনটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, যুগ্ম-আহ্বায়ক অধ্যাপক আব্দুস সালাম ও অধ্যাপক আবুল কালাম সরকারের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের বৈষমাবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানের বিরোধিতা ও ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের অনুগত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন শিক্ষক সমিতি এখনও নিজেদের বৈধ সমিতি হিসেবে দাবি করে মাননীয় উপাচার্য বরাবর পাঠানো পত্রের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। আমরা শিক্ষক সমিতির নামে দেওয়া এই পত্রের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করছি।
তারা বলেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে নীল দল ছাড়া অন্য কোনো দল ও প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় নীল দলের। প্যানেলকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। গত ২০২৪-এর জুলাই-আগস্টে পরিচালিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় অভ্যুত্থান বিরোধী অবস্থান ও স্বৈরশাসকের পক্ষে নির্লজ্জ ভূমিকা পালনের জন্য গত আগস্ট মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দল সমর্থক শিক্ষকেরা বিনা ভোটে নির্বাচিত তৎকালীন শিক্ষক সমিতিকে প্রত্যাখ্যান করে।
তারা আরও বলেন, শুধু তাই ন্যয় স্বৈরশাসক খুনি শেখ হাসিনার সরকারের পতন ও দেশ ছেড়ে তার পলায়নের ঠিক দু’দিন আগে গণভবনে উপস্থিত হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সমর্থন এ ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় সাদা দল তৎকালীন শিক্ষক সমিতির নেতাদের বিচার দাবি করে। শিক্ষক সমিতির এই গণবিরোধী ভূমিকার জন্যে ইতোমধ্যেই সংগঠনটি একটি গণধিকৃত সংগঠনে পরিণত হয়েছে। দেশের বিবেকবান অনেক ব্যক্তিও ইতোমধ্যে তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছে।
শিক্ষক সমিতিকে প্রত্যাখ্যান করে তারা বলেন, শিক্ষক সমিতির নামে দেওয়া পরে ২০০৭ সালের যে দৃষ্টান্ত উল্লেখ করা হয়েছে তা দেখিয়ে ফ্যাসিস্টের দোসর এই শিক্ষক সমিতিকে বৈধ শিক্ষক সমিতি হিসেবে দাবি করার কোনো সুযোগ নেই। কারণ সেই সময় শিক্ষক সমিতির দায়িত্ব চলমান রাখা হয়েছিল শিক্ষকদের সর্বসম্মত সমর্থনের ভিত্তিতে। তাছাড়া যে সময়কার শিক্ষক সমিতির অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা কেবল শিক্ষক সমাজের কাছেই নয়, গোটা জাতির কাছে ছিল প্রশংসনীয়। কিন্তু বৈধ শিক্ষক সমিতি হিসেবে দাবিদার তথাকথিত এই শিক্ষক সমিতি ইতোমধ্যেই শিক্ষকগণ ও দেশবাসী কর্তৃক প্রত্যাখ্যাতি এবং নিন্দিত হয়েছে।’
সর্বশেষ তারা বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজের মর্যাদাহানী এবং ঐতিহ্যকে ভুলণ্ঠনকারী ফ্যাসিস্টের দোসর এই শিক্ষক সমিতির নেতাদের দাবিকে আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। একই সঙ্গে শিক্ষক সমিতির পরিচয় ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার জোর দাবি জানাচ্ছি। এ ছাড়াও তাদের গণবিরোধী ভূমিকা ও গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার প্রতি অব্যাহত সমর্থনের জন্য তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও সরকারে প্রতি আমাদের জোর দাবি পূণর্ব্যক্ত করছি।’
উল্লেখ্য, আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করতে শিক্ষক সমিতির আওয়ামী পন্থি শিক্ষকদের বাদ দিয়ে নতুন করে কার্যক্রম শুরু করেছে ঢাবি প্রশাসন। যেখানে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূইয়া ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা এক বিবৃতিতে তাদরকে বাদ দেওয়ায় উপাচার্য বরাবর তীব্র প্রতিবাদ জানান তারা।
এ ছাড়া তাদেরকে সমন্বয় করে ২১ ফেব্রুয়ারি পালনের দাবিতে উপাচার্য বরাবর পত্র দিলে তা প্রত্যাখ্যান করে ঢাবি সাদা দলের নেতারা।
সারাবাংলা/এআইএন/এমপি