ঢাকা: জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বরগুনা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু ও তার স্ত্রী মাধবী দেবনাথের নামে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সেই সঙ্গে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের সন্দেহে শম্ভুর ছেলে সুনাম দেবনাথ, সুনামের স্ত্রী কাপসিয়া তালুকদার, শম্ভুরর মেয়ে শুল্কা দেবনাথ, মনীষা দেবনাথের সম্পদ বিবরণ দাখিল করতে বলেছে দুদক।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুদকের উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আসামি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু সরকারের দায়িত্বশীল পদে থেকে অবৈধ উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ ৫ কোটি ৪১ লাখ ২০ হাজার ১২৫ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। নিজ নামে ১৬টি ব্যাংক হিসাবে মোট ৪১ কোটি ৯৩ লাখ ২৫ হাজার ৭০২ টাকার অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেন করে উক্ত টাকা হস্তান্তর, রুপান্তর, ও স্থানান্তর করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। আসামির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
এদিকে, অন্য একটি মামলায়ও আসামি হয়েছেন শম্ভু ও তার স্ত্রী মাধবী দেবনাথ। এই মামলায় শম্ভুকেও আসামি করা হয়েছে। মাধবী দেবনাথের বিরুদ্ধেপারস্পরিক যোগসাজসে অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ স্বার্থে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য তার স্বামী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভূ এর ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রভাব ও আর্থিক সহায়তায় জ্ঞাত আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ ২ কোটি ২ লাখ ৪১ হাজার ৪০৪ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া তার নিজ নামে ৭টি ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনকভাবে মোট ৮ কোটি ৪৫ লাখ ৬১ হাজার ২৭৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু’র ছেলে সুনাম দেবনাথ ও তার স্ত্রী কাসপিয়া তালুকদারের সম্পদ বিবরণী তলব করেছে দুদক। ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু ক্ষমতার অপব্যবহার করে সুনাম ৯৬ লাখ ৫৮ হাজার ৪৪৩ টাকা ও কাসপিয়া ৪৯ লাখ ৮৮ হাজার ৪০০ টাকা সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।
এছাড়া শম্ভুর দুই মেয়ে শুক্লা দেবনাথের বিরুদ্ধে ৬৮ লাখ ৯১ হাজার টাকার ও মনীষা মুনমুনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের সম্পদ বিবরণীর নোটিশও জারি করেছে দুদক।
এর আগে, গত ২৫ আগষ্ট শম্ভুর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। বরগুনা-১ আসন থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। জেলার বিভিন্ন কাজে নজিরবিহীন অনিয়ম-দুর্নীতি আর অপরাজনীতির মাধ্যমে শতকোটি টাকার মালিক হয়েছে এমন অভিযোগ রয়েছে শম্ভুর বিরুদ্ধে।