আ.লীগের কর্মসূচির প্রতিবাদে রাবিতে বিক্ষোভ
২৯ জানুয়ারি ২০২৫ ২৩:৫৮ | আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:৪৮
ঢাকা: ফেব্রুয়ারিতে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাত পৌনে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্যারিস রোড়ে গণঅভ্যুত্থান মঞ্চের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জোহা চত্বরে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। এরপর পৌনে নয়টার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্যারিস রোড হয়ে জোহা চত্বরে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে ইতিহাস বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী গোলাম আযম সাব্বির বলেন, ‘আমাদের আজকের বিক্ষোভ শুধু ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে নয়, বরং যাদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তারা এই কর্মসূচি দেওয়ার সাহস পেয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও। সেনাবাহিনীর নিরাপত্তাকে বেষ্টন করে হাজার হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী দেশ থেকে পালিয়েছে। আমরা এর জবাব চাই। এই সমাবেশ থেকে আমরা ঘোষণা দিতে চাই, আগামীর বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ কিংবা ফ্যাসিস্টদের দোসর যারাই রাজপথে নামার সাহস করবে ছাত্র-জনতা তাদের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক মেহেদী সজিব বলেন, ‘৫ আগস্টে যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করেছি, এই স্বাধীনতাকে কোনোভাবেই ভুলণ্ঠিত হতে দেওয়া যাবে না। এই স্বাধীনতার পেছনে এখনো যদি আওয়ামী দোসররা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়, আমরা এর দাঁতভাঙা জবাব দেবো। আমরা এখনো রাজপথ ছেড়ে যাই নাই। দুই হাজার শহিদের রক্তের বদলা নিয়েই আমরা ঘরে ফিরব। আওয়ামী লীগকে অবশ্যই বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে বলতে চাই, অবিলম্বে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করুন। খুনি হাসিনাকে দিল্লিতে বসে ষড়যন্ত্রের সুযোগ দেওয়া যাবে না। ছাত্রলীগকে কবর দেওয়া হয়েছে, কোনোভাবেই ছাত্রলীগকে এই দেশে জীবিত করতে দেওয়া যাবে না। দ্বিতীয় শাহবাগের নামে এই দেশে আর কোনো মব তৈরি করতে দেওয়া হবে না। ছাত্রলীগকে প্রতিহত করার জন্য বাম-ডান সকলে মিলে রাজপথে আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি।’
গণঅভ্যুত্থান মঞ্চের সভাপতি জায়িদ জোহা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ফ্রেব্রুয়ারিতে যে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আমরা ঘৃণা ভরে সেটা প্রত্যাখ্যান করেছি। এটা অন্তর্বর্তী সরকারের দায়বদ্ধতা। স্বৈরাচার শক্তির বিচার নিয়ে গড়িমসি করতে দেওয়া যাবে না। আমরা বলতে চাই, এই স্বৈরাচারী দল ১৬ বছর মানুষের ওপরে যেভাবে অন্যায় করেছে, অবিচার করেছে, দূর্নীতি করেছে, লুটপাট করেছে- তারা এই দেশে সাংবিধানিক ভাবে কোনো দলীয় কর্মসূচি পালন করতে পারে না। জুলাই অভ্যুত্থানের পরও যদি আমাদের দেখতে হয়, এই স্বৈরাচারী দল স্বাধীনভাবে কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে তাহলে আমি মনে করি আমাদের শহিদ ভাইদের রক্ত বৃথা।’
বিক্ষোভ মিছিলে শেষে সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন গণঅভ্যুত্থান মঞ্চের সদস্য মো. মামুন সরদার। এ সময় প্রায় চার শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/পিটিএম