ঘুষের দায়ে সাবেক মার্কিন সিনেটরের ১১ বছরের কারাদণ্ড
৩০ জানুয়ারি ২০২৫ ১৪:১৮
ঘুষ গ্রহণের দায়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সিনেটর বব মেনেনডেজকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মেনেনডেজ, যিনি একসময় মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন, মিশর সরকারের জন্য প্রভাব বিস্তারের অপরাধে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের একটি ফেডারেল আদালতে ৭১ বছর বয়সী মেনেনডেজ জানান, দুর্নীতির অভিযোগের কারণে তিনি জীবনের সবকিছু হারিয়েছেন, শুধু স্ত্রী ছাড়া।
মেনেনডেজ একসময় মার্কিন সিনেটের পররাষ্ট্র সম্পর্কবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন এবং কঠোর পররাষ্ট্রনীতির পক্ষে অবস্থান ছিলো তার। ২০১৫ সালে তিনি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করার বিনিময়ে নিষেধাজ্ঞা শিথিলের চুক্তির বিরোধিতা করেছিলেন, যা তার দলের সিদ্ধান্তের বিপরীত ছিল।
২০২৪ সালের জুলাইয়ে এক আদালত তাকে মিশর সরকারের পক্ষে এজেন্ট হিসেবে কাজ করা এবং নগদ অর্থ, স্বর্ণের বার ও মার্সিডিজ-বেঞ্জ গাড়ির বিনিময়ে প্রভাব খাটানোর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে।
বুধবার (৩০ জানুয়ারি) আদালতে, মার্কিন জেলা বিচারক সিডনি স্টেইন মেনেনডেজকে বলেন, “আপনি সফল ও ক্ষমতাশালী ছিলেন। আমাদের রাজনৈতিক ব্যবস্থার শীর্ষে অবস্থান করতেন। কিন্তু জনসেবার পরিবর্তে নিজের স্বার্থে কাজ করা শুরু করলেন।”
তবে মেনেনডেজ আদালতের কাছে অনুগ্রহ প্রার্থনা করে বলেন, “আমি অনেক ভুল করেছি, খারাপ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু আমি ভালো কাজও করেছি, যা খারাপের চেয়ে অনেক বেশি। আমি আপনাকে অনুরোধ করছি, আমাকে সে পরিপ্রেক্ষিতেই বিবেচনা করুন।”
মেনেনডেজ ১৮ বছর সিনেটর হিসেবে এবং তার আগে ১৩ বছর প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে ২০২৪ সালে দুর্নীতির কেলেঙ্কারির কারণে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার হঠাৎ থমকে যায়।
২০২৪ সালের আগস্টে তিনি সিনেট থেকে পদত্যাগ করেন। তার পদত্যাগের এক মাস আগে আদালত তাকে ১৬টি গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে।
মামলার প্রসিকিউটররা তার ১৫ বছরের কারাদণ্ডের আবেদন করেছিল। প্রসিকিউটররা আদালতে বলেন, “মেনেনডেজ, যিনি যুক্তরাষ্ট্র ও নিউ জার্সির জনগণের প্রতিনিধিত্বের শপথ নিয়েছিলেন, তিনি নিজের উচ্চপদ বেচে দিয়েছিলেন ঘুষের বিনিময়ে।”
এর আগে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) মেনেনডেজের দুই সহযোগী নিউ জার্সির ব্যবসায়ী ফ্রেড ডেইবস ও ওয়েল হানা যথাক্রমে সাত বছর এবং আট বছরের বেশি কারাদণ্ড পেয়েছেন।
মেনেনডেজের স্ত্রী নাদিনের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির মামলা রয়েছে। আগামী ১৮ মার্চ শুনানি শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
সারাবাংলা/এনজে