১৪০ স্টল নিয়ে চট্টগ্রামে বইমেলার পর্দা উঠছে শনিবার
৩০ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:২১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ভাষার মাসে এবারও চট্টগ্রামে বইমেলার আয়োজন করেছে সিটি করপোরেশন। ফেব্রুয়ারির প্রথম দিনেই অমর একুশের বইমেলার পর্দা উঠবে। এবারের মেলায় মোট ১৪০টি স্টল থাকছে। এরমধ্যে চট্টগ্রামের প্রকাশনা সংস্থাগুলোর স্টল ৭৪টি।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়াম চত্বরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র জানান, শনিবার(১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় মেলার উদ্বোধন হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন গৃহায়ন, গণপূর্ত ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
১ ফেব্রুয়ারি থেকে মেলা চলবে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং ছুটির দিনগুলোতে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে।
সিটি মেয়র বলেন, ‘চট্টগ্রামের পাশাপাশি ঢাকার অভিজাত প্রকাশনী সংস্থাগুলো মেলায় অংশ নিচ্ছে এবং তাদেরকে স্টলও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এক লাখ বর্গফুটের মাঠ জুড়ে ১৪০টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে চট্টগ্রামের স্টল সংখ্যা ৭৪টি এবং ঢাকার স্টল সংখ্যা ৪৪টি। ঢাকা থেকে আরও প্রকাশনা সংস্থা স্টল চেয়েছিল। কিন্তু আমরা বলেছি আগে চট্টগ্রামের প্রকাশনা সংস্থাকে দেওয়া হবে। তারপর আপনাদের দেওয়া হবে। তাই তাদের সবাইকে দিতে পারিনি।’
তিনি বলেন, ‘আশা করি এই মেলায় চট্টগ্রামের সর্বস্তরের লেখক-পাঠক ও সৃজনশীল নাগরিকদের অংশগ্রহণে সংস্কৃতি ও মননের উৎকর্ষের পাশাপাশি ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সম্মিলন ঘটবে। এ ছাড়াও জাতীয় জীবনে যেসব ব্যক্তি কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তাদের একুশে সম্মাননা স্মারক পদক ও সাহিত্য পুরস্কার দেওয়া হবে।’
নিরাপত্তার স্বার্থে পুরো মেলা প্রাঙ্গন সিসিটিভি ক্যামরার আওতায় থাকবে বলে জানান সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন।
প্রতিবছরের মতো চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে এ বইমেলার আয়োজনে সার্বিক সহায়তা দিচ্ছে ‘চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদ’। বই বিকিকিনির পাশাপাশি প্রতিবারের মতো এবারও মেলার মঞ্চে থাকছে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক আয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, মেলা মঞ্চে প্রতিদিনের সাংস্কৃতিক পর্বে শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, রবীন্দ্র-নজরুল ও লোকসংগীত, সাধারণ নৃত্য, লোকনৃত্য, আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা ও দেশের গানের আয়োজন করা হবে। মেলা মঞ্চে প্রতিদিন মুক্তিযুদ্ধের জাগরণী গান ও দেশাত্মবোধক গানের আয়োজন থাকবে। মেলায় মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস নিয়ে প্রদশর্নীর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ২০১৯ সাল থেকে বড় পরিসরে এ বইমেলার আয়োজন করে আসছে। চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদসহ আরও বিভিন্ন নাগরিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এতে সহযোগিতা দেয়। প্রতিবছর নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়াম প্রাঙ্গনে বইমেলার আয়োজন করা হলেও গতবছর জেলা প্রশাসনের আপত্তিতে সেখানে হয়নি। এর পরিবর্তে সিটি করপোরেশন সিআরবিতে বইমেলার আয়োজন করেছিল।
তবে এবার বইমেলা আয়োজনের জন্য আবারও এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়াম মাঠ বরাদ্দ দেওয়ায় জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা, শিক্ষা কর্মকর্তা মোছাম্মৎ রাশেদা আক্তার, সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের শাহাবুদ্দিন বাবু, মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু ও আলী প্রয়াস, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিএমইউজে) সভাপতি মো. শাহ নওয়াজ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, শামসুল হক হায়দরী ও মুস্তফা নঈম এবং চসিকের সমাজকল্যাণ ও সংস্কৃতি কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/আরডি/এইচআই