ওসিকে পেটানোর হুমকি: ছোট সাজ্জাদকে ধরিয়ে দিলে পুরস্কার দেবে সিএমপি
৩০ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:৩৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের ‘শীর্ষ অপরাধী’ হিসেবে খ্যাত সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের সন্ধান অথবা গ্রেফতারে সহায়তা করলে আর্থিক পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে নগর পুলিশ। ফেসবুক লাইভে এসে নগরীর এক থানার অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) নগ্ন করে পেটানোর হুমকি দেওয়ার পর সাজ্জাদের বিষয়ে সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজের এ ঘোষণা এসেছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে কমিশনারের বরাতে সিএমপির হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে পাঠানো এক বার্তায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এ সংক্রান্ত বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মো. সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদকে আইনের আওতায় আনার জন্য যে বা যারা তার অবস্থান সংক্রান্তে সঠিক তথ্য দিয়ে অথবা গ্রেফতারে পুলিশকে সহায়তা করবে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) পক্ষ থেকে তাকে উপযুক্ত অর্থ পুরস্কারে পুরস্কৃত করা হবে। এক্ষেত্রে সহায়তাকারীর পরিচয় অবশ্যই গোপন রাখা হবে।
তবে পুরস্কারের অর্থের পরিমাণ সিএমপির বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়নি।
মো. সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ (২৫) চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বিদেশে পলাতক ‘শিবির ক্যাডার’ হিসেবে পরিচিত আরেক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলীর অনুসারী। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজির অভিযোগে নগরীর বিভিন্ন থানায় ১০টি মামলা আছে।
গত মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাত ১০টা ৩৯ মিনিটে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফুর রহমানকে পেটানোর হুমকি দেন সাজ্জাদ। সাম্প্রতিক সময়ে তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে থানায় দায়ের হওয়া একাধিক মামলায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ওসি’র বিরুদ্ধে তাকে ফাঁসানোর অভিযোগ তোলেন।
১৯ মিনিট ২৯ সেকেন্ডের ফেসবুক লাইভে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় সাজ্জাদ বলেন, ‘ওসি আরিফ দেশের যেখানেই থাকুক না কেন, তাকে আমি ধরে ন্যাংটা করে পেটাব। ওসি আরিফ থানায় দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আমার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সে আমার সন্তানকে হত্যা করেছে। আমার স্ত্রীকে আটক করে জেলে নিয়ে গেছে। তাকে আমি ছাড়ব না। পুলিশ না হলে তাকে আমি অনেক আগেই মারধর করতাম। পুলিশের প্রতি শ্রদ্ধা করি বলেই চুপ করে আছি।’
ওসি আরিফের বিষয়ে তদন্ত করতে সিএমপি কমিশনারকে উদ্দেশ্য করে সাজ্জাদ বলেন, ‘আরিফ আমার আমার সন্তানকে (ভ্রুণ) হত্যা করেছে। তাকে আপনি বদলি করেন। টাকা নিয়ে আমার বিরুদ্ধে মামলা করা করেছে। তার বিরুদ্ধে আপনারা তদন্ত করেন।’
এ ঘটনায় বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফুর রহমান সন্ত্রাসী সাজ্জাদের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
উল্লেখ্য, সাজ্জাদকে ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই চান্দগাঁও থানা-পুলিশ অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছিল। তবে পরের মাসেই তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন। এরপর গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর বায়েজিদ থানার কালারপোল এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবনে চাঁদা না পেয়ে গুলি করেন সাজ্জাদ। ওই ঘটনার একটি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় সাজ্জাদের চাঁদা দাবির বিষয়টি অনেকটা প্রকাশ্যেই চলে। মূলত নির্মাণাধীন ভবন ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা তোলেন এ শীর্ষ অপরাধী।
গত বছরের ৪ ডিসেম্বর নগরীর অক্সিজেন এলাকায় সাজ্জাদকে পুলিশ ধরতে গেলে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যান তিনি। সর্বশেষ গত ২৭ জানুয়ারি ডাকাতির প্রস্তুতির সময় তার ছয় সহযোগীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন সাজ্জাদ ফেসবুকে লাইভে এসে ওসিকে পেটানোর হুমকি দেন।
সারাবাংলা/আরডি/এসআর