জলাবদ্ধতা প্রকল্প
অগ্রগতি দেখতে চট্টগ্রামে এবার গৃহায়ণ উপদেষ্টা
৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৪:০৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের অগ্রগতি দেখতে তিন উপদেষ্টার পর এবার এসেছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে নগরীর বহদ্দারহাটের বারইপাড়া ও ষোলশহরের সুন্নিয়া মাদরাসা খাল খনন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন তিনি। এ সময় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন তাকে খাল খননের কাজের অগ্রগতি তুলে ধরেন।
এ ছাড়াও চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউদ্দিন, সিডিএর চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিমসহ বিভিন্ন সেবা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
আগামী বর্ষায় চট্টগ্রাম নগরীতে জলাবদ্ধতা কেমন হবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গত অনেক বছর নদী, নালা, খাল ও শহরের ভেতর যে জলাবদ্ধতা এসবের কোনো খোঁজ করা হয়নি। ব্যাপক অভিযোগ ছিল। জনগণের জন্য যেসব কাজ করা দরকার ছিল সেসব হয়নি। প্রত্যেক বছর চট্টগ্রাম পানির নিচে চলে গেছে। আমরা চেষ্টা করছি শহরের ভেতরে যতগুলো নালা ও সমুদ্র, নদীতে পানি যাওয়ার প্রবাহ সেগুলো চালু করার।’
আদিলুর রহমান খান বলেন, ‘এগুলো কিন্তু রাতারাতি হয়ে যাবে না। কাজটি আমরা শুরু করলাম। কাজটি এগিয়ে যাবে, যাতে এবারের বর্ষায় আমরা যতটুকু পারি জলাবদ্ধতা কমিয়ে আনতে পারি। এ বর্ষার পরেরটাতে যাতে পানি চলে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়, সেজন্য আমরা কাজ করছি। এ বর্ষায় যেন আগের অবস্থার মতো না হয় এবং জলাবদ্ধতা কম হয় সে চেষ্টা করা হচ্ছে।’
সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘এর আগে আরও তিনজন উপদেষ্টা জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনে এসেছিলেন। আমরা সবাই সমন্বিতভাবে কাজ করলে নগরবাসীকে এ জলাবদ্ধতা থেকে রেহাই দিতে পারব বলে আশা করছি। আগে সমন্বয় ছিল না। এখন আমরা সব সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে কাজ করছি। আশা করছি, একটি রেজাল্ট পাব। হয়তো এ মৌসুমে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ফলাফল পাব। ১০০ শতাংশ রেজাল্ট পেতে আরও এক বছর সময় লাগবে।’
এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের অগ্রগতি দেখতে চট্টগ্রাম এসেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত উচ্চপর্যায়ের মনিটরিং টিমের তিন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক। পরিদর্শন শেষে চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোকে আগামী বর্ষার আগে করণীয় হিসেবে ১১ দফা কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ দিয়েছিলেন তারা।
এ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোকে আগামী মে পর্যন্ত চার মাস সময় বেঁধে দিয়েছিলেন তিন উপদেষ্টা। এসময়ের মধ্যে কর্মপরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে সংস্থাগুলোকে শাস্তির আওতায় আনা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টারা।
চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ দুটি, সিটি করপোরেশন একটি এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। চার প্রকল্পে মোট ব্যয় প্রায় ১৪ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০১৭ সালে শুরু হওয়া ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক ৮ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সবচেয়ে বড় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সিডিএ। প্রকল্পের অগ্রগতি প্রায় ৭৫ শতাংশ।
সারাবাংলা/আইসি/এমপি
উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা