বাংলাদেশে টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্তে ব্রিটিশ দল, তথ্য দিয়েছে দুদক
২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:৩৯ | আপডেট: ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:২০
ব্রিটেনের জাতীয় অপরাধ সংস্থা (এনসিএ) দুর্নীতির অভিযোগে লেবার পার্টির সাবেক সিটি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। সংবাদমাধ্যম ‘দ্য মেইল অন সানডে’ জানিয়েছে, এনসিএ কর্মকর্তারা সম্প্রতি ঢাকায় গোপন বৈঠকে যোগ দেন। যেখানে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন সংস্থার কর্মকর্তারা তাদের কাছে টিউলিপের বিরুদ্ধে কিছু নতুন তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করেন।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ এখন টিউলিপের ব্যাংক হিসাব, ইমেইল রেকর্ড এবং অন্যান্য আর্থিক লেনদেন যাচাই করছে। এমনকি তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকাও হতে পারে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের চুক্তি নিয়ে দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি ও তার পরিবারের চার সদস্য প্রায় ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাৎ করেছেন। এই প্রকল্পটি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান রোসাটম নির্মাণ করে, যার ৯০ শতাংশ ঋণ দিয়েছিল ক্রেমলিন।
২০১৩ সালে এই প্রকল্পের চুক্তি সইয়ের সময় তুলিপ সিদ্দিককে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা যায়।
বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের মতে, এনসিএ টিউলিপের বিরুদ্ধে ব্রিটেনে তদন্ত চালিয়ে তাকে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় বিচারের মুখোমুখি করার প্রস্তাব দিয়েছে। এমনকি যুক্তরাজ্যের ঘুষ ও দুর্নীতি দমন আইন ২০১০-এর আওতায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হতে পারে, যার শাস্তি সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এনসিএ কর্মকর্তারা এই তদন্তে যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা এমআই-৬ এবং ব্রিটিশ রাজস্ব বিভাগ (এইচএমআরসি)-এর সহযোগিতার বিষয়েও খোঁজখবর নিচ্ছেন।
টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্তের খবর প্রকাশ্যে এলে তিনি গত মাসে পদত্যাগ করেন। জানা যায়, তিনি লন্ডনের কিংস ক্রসে দু’কক্ষের একটি ফ্ল্যাট উপহার হিসেবে পেয়েছেন, যা এক ব্রিটিশ ডেভেলপারের দেওয়া বলে অভিযোগ উঠেছে, যিনি তার খালার সঙ্গে যুক্ত।
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন টিউলিপ এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে অন্তত দুটি ফৌজদারি তদন্ত চালাচ্ছে। তবে তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
লেবার পার্টির এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘এসব অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই। তুলিপ সিদ্দিককে এই বিষয়ে এখনো কোনো কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করেনি, এবং তিনি এসব অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন।’
এদিকে ব্রিটেনের ছায়া মন্ত্রিসভার এক সদস্য মাইক উড ব্রিটেনের স্বাধীন পরামর্শক স্যার লরি ম্যাগনাসকে একটি চিঠি লিখে জানতে চেয়েছেন, তিনি এমআই-৬ বা এনসিএ থেকে তুলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে কোনো তথ্য পেয়েছেন কি না। তবে এখনো এই চিঠির কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। এনসিএ এবং ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র দফতর এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
সারাবাংলা/এনজে