ছয় মাসে এডিপি বাস্তবায়ন ১৮%
বাজেট ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক পরিবর্তন আসছে: পরিকল্পনা উপদেষ্টা
২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:২৪
ঢাকা: পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, বাজেট ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক পরিবর্তন আসছে। এবার উন্নয়ন বাজেটে (এডিপি) সংশোধনের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে, দেশীয় অর্থায়নের চেয়ে বৈদেশিক অর্থায়ন বেশী হবে। যেমন- বৈদেশিক ঋণ হবে উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ৬০ ভাগ, আর দেশীয় অর্থায়ন হবে ৪০ ভাগ। রাজস্ব আয় না বাড়ার কারণে এ উদ্যোগ আছে। তবে রাজস্ব বাড়ানোরও উদ্যোগ নেওয়া হবে।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক শেষে ব্রিফিং এ তিনি এসব কথা বলেন।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, বিদেশি ঋণ যদি সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ তৈরি করে তাহলে ভালো। বৈদেশিক ঋণ বেশি নিলেও সেটি উৎপাদনশীল কাজে লাগানো হবে। রফতানিমুখী খাতে বৈদেশিক ঋণ ব্যয় করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, গত সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোতে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের চাপ বাড়ছে এবং তা এ অর্থবছর থেকেই। আগামী অর্থবছরগুলোতে আসল পরিশোধের ব্যাপক চাপ বাড়বে। এরপরও বলবো বৈদেশিক ঋণ আমাদের জন্য খারাপ নয়। যেমন- ভিয়েতনাম অনেক বৈদেশিক ঋণ নিয়েছিল। কিন্তু তারা তো কোন সমস্যায় পড়েনি।
সভায় চলতি অর্থবছরের এডিপি বাস্তবায়ন অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) বাস্তবায়ন হয়েছে ১৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ হার ছিল ২২ দশমিক ৪৮ শতাংশ। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই হার ছিল ২৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
তিনি জানান, জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো ব্যয় করতে পেরেছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। গত অর্থবছর খরচ হয়েছিল ৬১ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে খরচ হয়েছিল ৬০ হাজার ২৪৯ কোটি টাকা। তবে আগের অর্থবছরের হিসাবগুলো হলো সংশোধিত এডিপির। আর চলতি অর্থবছরের হিসাবটি হচ্ছে মূল এডিপির। সুতরাং এডিপি সংশোধন করা হলে আকার ছোট হবে। ফলে বাস্তবায়ন হার বেড়ে যাবে।
একনেক সভায় চীনা অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন মোংলা বন্দরের সুবিধাদি সম্প্রসারণ প্রকল্পের বিষয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, গত সরকারের আমলে চীনা প্রকল্পের ঠিকাদাররা রাতারাতি কোটিপতি হয়ে গিয়েছিলেন। আমরা সে অবস্থার পরিবর্তনে কাজ করছি। মোংলা বন্দরের সুবিধাদি সম্প্রসারণ প্রকল্পটি আমাদের সরকারের নয়, গত সরকারের ছিল। এ প্রকল্পে চীনের অর্থায়ন আছে। আমরা খতিয়ে দেখেছি যে, এই ঋণের ক্ষেত্রে কোন দুর্বলতা বা ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে কি না। সেটি হয়নি। তাই গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বিগত সরকারের আমলে গৃহীত চলমান প্রকল্পগুলোর বিষয়ে তিনি বলেন, চলমান প্রকল্প চলছেই। সেগুলোতো মাঝপথে বন্ধ করা যাবে না। তবে অবকাঠামো অংশ বাদ দিয়ে মানব সম্পদ উন্নয়ন খাতে ব্যয় করা হবে। যেমন- শুধু মেডিকেল কলেজ বা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল কলেজের অবকাঠামো উন্নয়ন করা হচ্ছে । কিন্তু সেগুলো যন্ত্রপাতি পরিচালনা এবং শিক্ষা দেওয়ার মতো দক্ষ শিক্ষক নেই। কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে কিন্তু ৮০ ভাগ শিক্ষক নেই। সেজন্য দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়ন করা হবে।
সারাবাংলা/জেজে/আরএস