‘জুলাই বিপ্লব ইসলামপ্রিয় লেখক-সাংবাদিকদের মূল্যায়নের সুযোগ করে দিয়েছে’
২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:৩৫ | আপডেট: ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:২৬
ঢাকা: ৫ আগস্টের জুলাই বিপ্লব দেশের ইসলামপ্রিয় লেখক, সাংবাদিক ও সাহিত্যিকদের মূল্যায়নের সুযোগ করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে দেশের প্রথিতযশা তিন সম্পাদককে দেওয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। ১২তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ এ সংবর্ধনার আয়োজন করে।
সংবর্ধনাপ্রাপ্ত তিন সম্পাদক হলেন- দৈনিক নয়াদিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দীন, দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদ, দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। অনুষ্ঠানে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের অন্যতম সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবদুর রব।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আমার দেশ সম্পাদক বলেন, ‘নব্বই শতাংশ মুসলমানের দেশ হওয়ার পরও এ দেশের ইসলামপ্রিয় লেখক ও সাংবাদিকরা তাদের মেধার মূল্যায়ন পান না। এক্ষেত্রে ওআইসিরও কোনো ভূমিকা নেই। মুসলিম লেখকরাও পশ্চিমা বিশ্বের দেওয়া পুলিৎজার কিংবা নোবেল পুরস্কারের দিকে তাকিয়ে আছেন তাদের মেধার মূল্যায়নের জন্য। এটাই মুসলিম বিশ্বের ব্যর্থতা। এ কারণে আমাদের আবুল আসাদ ও আলমগীর মহিউদ্দীনের মতো প্রতিথযশা সাংবাদিক ও সম্পাদকরা মূল্যায়ন পান না।’
তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের পরে এই বৃত্ত ভাঙার সুযোগ তৈরি হয়েছে আমাদের জন্য। আমি মনে করি, মানরাত ইউনিভার্সিটি সেই বৃত্ত ভাঙার চেষ্টা করছে সম্পাদকদের সংবর্ধনা দেওয়ার মধ্য দিয়ে।’ দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদকে বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক হিসেবে উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘তিনি শুধুমাত্র ইসলামপ্রিয় মানুষ হওয়ার কারণে মেধার সঠিক মূল্যায়ন পাননি।’
‘দেশের কয়েকটি বড় বড় পত্রিকার দিকে খেয়াল করলে দেখা যায়, বাংলাদেশের পারিপার্শ্বিকতায় বিশিষ্টজন হতে হলে ভারতপন্থি ও ইসলাম বিদ্বেষী হতে হবে।’- বলেন মাহমুদুর রহমান।
অনুষ্ঠানে দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদ বলেন, ‘আমাদের দেশে যে অসত্য বা হলুদ সাংবাদিকতার কথা বলা হয়, সেজন্য সাংবাদিকরা দায়ী নন। এর পুরো দায় যারা সাংবাদিকদের খাটান, বা আরও ওপরে আছেন তাদের।’
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তৃতায় অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘আজ সংবর্ধনা দেওয়া দেশের প্রতিথযশা তিন গুণী সম্পাদকের মাঝে তিনটি বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। এ জন্য আমরা তাদের সংবর্ধনা দিতে পেরে কৃতজ্ঞ।’
সভাপতির বক্তৃতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবদুর রব সংবর্ধনাপ্রাপ্ত তিন সম্পাদককে জীবন্ত কিংবদন্তি উল্লেখ করে বলেন, ‘তাদের নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। তারা বাংলাদেশ তথা এশিয়ার সাংবাদিকতার ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছেন। আগামী দিনে তারা তাদের কলমকে শানিত করে আরও উচ্চকিত কণ্ঠে জাতিকে পথ দেখাবেন আশা করছি।’
জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রধান রফিকুজ্জামানের স্বাগত বক্তৃতার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম।
এদিন তিন সম্পাদকের হাতে সংবর্ধনা ক্রেস্ট তুলে দেন প্রধান অতিথি ও অনুষ্ঠানের সভাপতি। এ সময় বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে কেক কাটেন অতিথিরা। দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ (সোমবার) সকালে আশুলিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের সেমিনার হলে জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সাবেক ও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে সেমিনার ও মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হবে।
সারাবাংলা/এমএইচ/পিটিএম