সিরাজগঞ্জে দিনব্যাপী ৩০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী দই মেলা
৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:৩৯ | আপডেট: ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:৩৩
সিরাজগঞ্জ: সরস্বতি পূজা উপলক্ষে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে প্রায় ৩০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী দই মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সরস্বতী পূজা উপলক্ষে দিনব্যাপী দইয়ের মেলা ঘিরে উপজেলাজুড়ে সাজ সাজ রব পড়ে গেছে। এই মেলায় বাহারি স্বাদের দইয়ের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দই বিক্রেতারা।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকার নামকরা ঘোষদের দই আনার মধ্য দিয়ে প্রায় ৩০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী তাড়াশের দই মেলার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে।
দিনব্যাপী এ মেলায় দইয়ের পাশাপাশি ঝুড়ি, মুড়িমুড়কি, চিড়া, বাতাসা, কদমাসহ রসনাবিলাসী নানা ধরনের খাবার কিনতে ভিড় করেন ক্রেতারা। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় যুগ যুগ ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসা এই মেলা আগামী দিনে আরও প্রসারিত হবে এমনটাই প্রত্যাশা দই প্রেমীদের।
জানা যায়, চলনবিল অধ্যুষিত জেলা তাড়াশের তৎকালীন জমিদার পরম বৈঞ্চব বনোয়ারী লাল রায় বাহাদুর প্রথম দই মেলার প্রচলন করেছিলেন। এলাকায় জনশ্রুতি আছে জমিদার রাজা রায় বাহাদুর নিজেও দই ও মিষ্টান্ন পছন্দ করতেন। তাই জমিদার বাড়িতে আসা অতিথিদের আপ্যায়নে এ অঞ্চলে ঘোষদের তৈরি দই পরিবেশন করতেন। আর সে থেকেই জমিদার বাড়ির সামনে রশিক রায় মন্দিরের মাঠে স্বরস্বতী পূজা উপলক্ষে দিনব্যাপী দই মেলার প্রচলন শুরু করেন।
ঐতিহ্যবাহী মেলায় দই নিয়ে আসা উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, ‘আজ ১৫ মণ দই নিয়ে এসেছি। দইয়ের চাহিদা থাকায় দুপুরের মধ্যেই শেষ হবে বলে তিনি আশাবাদি। তবে দুধের দাম, জ্বালানি, শ্রমিক খরচ, দই পাত্রের মূল্য বৃদ্ধির কারণে দইয়ের দামও বেড়েছে।’
মেলায় দই কিনতে আসা সুরজিত সাহা বলেন, ‘প্রতি বছর সকালে এই মেলা থেকে দই কিনি। স্বরস্বতি পূজা উপলক্ষে বাড়িতে অনেক অতিথি এসেছে। তাদের আপ্যায়নের জন্য দই কিনছি।’
দই কিনতে আসা দীপক কর বলেন, ‘সরস্বতি পুজা উপলক্ষে বোন ও জামাইসহ অনেক আত্মীয় স্বজন এসেছে। এখানকার দই খুব সুস্বাদু। প্রতি বছর ১০ থেকে ১২ কেজি দই কিনে থাকি। তবে এবার একটু দাম বেশি থাকায় কম কিনলাম।’
তাড়াশ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি গোপন চন্দ্র ঘোষ বলেন, প্রায় ৩০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী তাড়াশের এই দইমেলা প্রতি বছরের ন্যায় এবাও অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শীত মৌসুমের মাঘ মাসে শ্রী পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পূজা উপলক্ষে এ দই মেলা বসে থাকে। তাড়াশে আনন্দ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে এ দই মেলার উৎসব উদযাপিত হচ্ছে।
সারাবাংলা/এনজে