বেতন না দিয়ে কারখানা বন্ধ, সড়কে পোশাক শ্রমিকরা
৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:৪৬ | আপডেট: ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:১২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর টেকনিক্যাল মোড়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে দুই পোশাক কারখানার কয়েক’শ শ্রমিক। তারা জানিয়েছেন, দুই মাসের বকেয়া বেতন না দিয়ে আকস্মিকভাবে মালিকপক্ষ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করায় তারা বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছেন। শ্রমিকদের অবরোধের কারণে আশপাশের এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে প্রায় তিন শতাধিক শ্রমিক নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার টেকনিক্যাল মোড়ে অবস্থান করছেন। কারখানা দুটি হচ্ছে- আনোয়ারা ড্রেস মেকার্স লিমিটেড ও ফ্রান্ক অ্যাপারেলস লিমিটেড।
আনোয়ারা ড্রেস মেকার্সের সুই অপারেটর রুবি আক্তার সারাবাংলাকে বলেন, ‘একবছর ধরে মালিক আমাদের বেতন নিয়ে ঝামেলা করছে। দুই মাস পর একমাসের বেতন দেয়। এখন ফেব্রুয়ারি মাস শুরু হয়েছে। অথচ আমাদের ডিসেম্বর মাসের বেতন এখনও দেয়নি। এরপর কোনো ঘোষণা না দিয়ে ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দিয়েছে। এজন্য আমরা সকাল ৮টা থেকে এখানে বসে আছি। মালিক এসে বেতন না দেয়া পর্যন্ত আমরা যাব না।’
‘আমরা গরীব মানুষ, বাজারে জিনিসপত্রের যে দাম, বেতন না পেলে ভাত কিভাবে খাব? বাসা ভাড়া কোত্থেকে দেব, বাড়িওয়ালা কী শুনবে আমাদের বেতন না পাবার কথা?’
একই কারখানায় সুইং বিভাগে কর্মরত আশরাফুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি পাঁচ বছর ধরে এখানে কাজ করি। শুরু থেকেই এখানে বেতন-ভাতা অনিয়মিত। অনেকবার আমরা আন্দোলন করে বেতন-ভাতা আদায় করেছি। এবার দুই মাস ধরে বেতন বন্ধ রেখে গত ২৬ জানুয়ারি মালিকপক্ষ হঠাৎ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে। এরপর আমরা নিজেরা আমাদের অফিসারদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেছি। প্রশাসনের মাধ্যমে মালিকপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ হয়েছে। কিন্তু তারা বেতন পরিশোধ করতে নানা বাহানা দিচ্ছেন। এজন্য আমরা রাস্তায় এসেছি।’
এদিকে অবরোধস্থলে পুলিশ সদস্যরা অবস্থান করছেন। বায়েজিদ বোস্তামি থানার পাশাপাশি শিল্প পুলিশের সদস্যরাও সেখানে আছেন। তবে পুলিশকে শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরানোর কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি।
অবরোধের কারণে নগরীর ষোলশহর দুই নম্বর গেট থেকে রুবি গেট অভিমুখে সড়কের দুইপাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। আশপাশের সড়কগুলোতে অনেক গাড়ি আটকে আছে। এর ফলে যানজটে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ওই এলাকা দিয়ে গন্তব্যমুখী লোকজনকে।
শিল্প পুলিশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সোলাইমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘দুই কারখানা মিলিয়ে তিনশর মতো শ্রমিক আছে। এখানে বারবার বেতন নিয়ে সমস্যা হয়। এবারও কারখানা বন্ধের পর আমরা মালিকের সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগ করেছি। উনি বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিয়েও এক সপ্তাহ পার করে ফেলেছেন। আজ যখন শ্রমিকরা রাস্তায় নামল, সকাল থেকে যোগাযোগ করছি, উনি আসবেন বলে সময়ক্ষেপণ করছেন। আমি পুলিশের একটি টিম পাঠিয়েছি উনাকে কারখানায় নিয়ে আসার জন্য। দেখা যাক, একটা সমাধান অবশ্যই হবে।’
সারাবাংলা/আরডি/এনজে