দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভূমি দখলের অভিযোগ ট্রাম্পের
৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৮:৫৩ | আপডেট: ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:৪০
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেয়া ভূমি দখলের অভিযোগ এবং সহায়তা বন্ধের হুমকির প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, তার দেশ কোনো জমি দখল করছেন না।
সোমবার এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক বিবৃতিতে রামাফোসা বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা সংবিধানিক গণতন্ত্রের ভিত্তিতে পরিচালিত একটি রাষ্ট্র, যেখানে আইনের শাসন, ন্যায়বিচার ও সাম্য বজায় রাখা হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার কোনো জমি দখল করেনি।’
তিনি আরও বলেন, তার প্রশাসন মার্কিন সরকারের সঙ্গে ভূমি সংস্কার নীতি এবং পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ হলেও, দেশটি থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা উল্লেখযোগ্য কোনো আর্থিক সহায়তা পায় না, শুধুমাত্র এইচআইভি/এইডস সহায়তা কর্মসূচি ছাড়া।
এর আগে, রোববার (২ জানুয়ারি) ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যাল-এ এক পোস্টে লিখেছেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা জমি দখল করছে এবং কিছু শ্রেণির মানুষের সাথে খুব খারাপ আচরণ করছে। এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা দেশটিকে আর কোনো সহায়তা দেব না।’ ট্রাম্প এই অভিযোগ প্রথমবার নয়, ২০১৮ সালেও একই দাবি করেছিলেন।
দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবৈষম্যমূলক নীতির ফলে অতীতে কৃষ্ণাঙ্গ ও অন্যান্য অশ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠীকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করে শ্বেতাঙ্গদের জন্য জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। ১৯৯৪ সালে বর্ণবাদী শাসনের অবসান ও প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচন হওয়ার পর থেকে দেশটির সংবিধানে ভূমি পুনর্বণ্টন ও পুনরুদ্ধারের নীতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
কিন্তু কৃষ্ণাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকানরা জনসংখ্যার প্রায় ৮০ শতাংশ হওয়া সত্ত্বেও এখনো জমির একটি ক্ষুদ্র অংশের মালিক। দারিদ্র্য ও বেকারত্বের হারও তাদের মধ্যে তুলনামূলকভাবে বেশি।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট রামাফোসা ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত একটি নতুন আইন স্বাক্ষর করেন, যা কিছু ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ ছাড়া জমি অধিগ্রহণের অনুমতি দেয়। তবে সংবিধান অনুযায়ী, এটি একটি আইনি প্রক্রিয়া যা ন্যায়সঙ্গত ও সমানভাবে জনসাধারণের জন্য জমি প্রবেশাধিকারের নিশ্চয়তা দেয় বলে রামাফোসা দাবি করেন।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষমতাসীন দল যদি এই নীতি বাস্তবায়নের চেষ্টা করে, তাহলে এটি আইনি জটিলতার মুখে পড়তে পারে। সংবিধানে এখনও ক্ষতিপূরণ ছাড়া জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদানের আইন রয়ে গেছে।
সারাবাংলা/এনজে