Monday 03 Feb 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঘুষ-চাঁদাবাজি বন্ধে ‘গুন্ডা প্রতিরোধ স্কোয়াড’ গঠনের সুপারিশ টাস্কফোর্সের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:১১

ঢাকা: চাঁদাবাজি ও ঘুষ লেনদেন বন্ধে একটি স্বাধীন ও স্বতন্ত্র ‘গুন্ডা প্রতিরোধ স্কোয়াড’ গঠনের সুপারিশ করেছে ‘বৈষম্যহীন টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণ ও প্রয়োজনীয় সম্পদ আহরণ সংক্রান্ত টাস্কফোর্স কমিটি’।

সোমবার ( ৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে টাস্কফোর্স কমিটির সংবাদ সম্মেলনে এমন সুপারিশ করা হয়। পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ এবং টাস্কফোর্সের সভাপতি ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. কে এ এস মুর্শিদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

টাস্কফোর্সের সভাপতি ড. কে এ এস মুর্শিদ বলেন, সরকারি সেবা পেতে অনেক সময় ঘুষ দিতে হয়। সরকারি সেবা প্রাপ্তির পাশাপাশি হাট-বাজার, ঘাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি, অনৈতিক লেনদেন বা ঘুষ বন্ধে এ স্কোয়াড কাজে লাগবে। এ ধরনের অনৈতিক লেনদেনের সমস্যা সরকারি সেবার বাইরে বেসরকারি খাতেও বিস্তৃত হয়েছে। যেমন বাজারঘাট, পরিবহন ও নির্মাণ খাত।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু প্রচলিত ব্যবস্থায় সরকারের সাধারণ বাহিনী দিয়ে এগুলো দমন করা যায় নি। তাই এই বিশেষ স্কোয়াড গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়নে অনেক বড় কিছুর প্রয়োজন নেই। এটি পরীক্ষামূলকভাবেও করা যেতে পারে। এই স্কোয়ার্ড গঠনে সরকারি সংস্থার সদস্যদের দিয়ে কিংবা বেসরকারি নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের কর্মীও নেওয়া
যেতে পারে।

টাস্ক ফোর্সের সুপারিশে অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে সুশাসন নিশ্চিত করতে ‘নিয়ন্ত্রক সংস্থা সংস্কার কমিশন’ (রেগুলেটরি রিফর্মস কমিশন) গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে ড. মুর্শিদ বলেন, আইন কানুন-নিয়মনীতির অতি নিয়ন্ত্রণ এবং আমলাতন্ত্রের লাল ফিতার দৌরাত্ম্যের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। এ জন্য একটি সংস্কার কমিশন গঠন অপরিহার্য।

টাস্কফোর্সের সুপারিশে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা, পেশাদারদের দিয়ে সরকারি পর্যায়ে নেতৃত্ব গঠন, সরকারি সেবা সহজ করা, বাজারের চাহিদা অনুসারে শ্রমশক্তি প্রস্তুত করা, রপ্তানি বৈচিত্র্যময় করা, তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি, নিত্যপণ্যের মজুত বাড়ানোসহ বিভিন্ন বিষয় সুপারিশ করা হয়েছে।

বিনিয়োগকারীদের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ করতে ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার স্থাপন করা এবং রফতানি বাড়াতে উদীয়মান ও সম্ভাবনাময় খাতগুলোকে নানা ধরনের নীতি সহায়তা প্রদানের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া তৈরি পোশাকের বাইরে প্রায় দেড় হাজার প্রতিষ্ঠান আছে, যারা বছরে ১০ লাখ ডলারের বেশি পণ্য রফতানি করে। এসব প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।

স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে তথ্য প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার বৃদ্ধিকে কৌশলগত অগ্রাধিকারে আনতে হবে বলে মনে করছে কমিশন।

টাস্কফোর্স বলেছে, ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা দরকার। কেননা, দেশের সরকারি-বেসরকারি সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে প্রচলিত ছাত্র রাজনীতি একাডেমিক স্বাধীনতার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।

এ প্রসঙ্গে ড. কেএ এস মুর্শিদ বলেন, গত ৫০ বছরে ক্যাম্পাসে অনেক রাজনীতি হয়েছে। কিন্তু আমরা ভালো কোন ফল দেখিনি। এশীয় মহাদেশ ছাড়া বিশ্বের কোথাও ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নেই। ছাত্ররা নিজেদের দাবি দাওয়া এমনকি সামাজিক বিভিন্ন ইস্যুতে আন্দোলন করতে পারে। তাই বলে লেজুর বৃত্তিক রাজনীতি বন্ধ করা দরকার।

শিক্ষা ক্ষেত্রে আরো যেসব সুপারিশ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো- যেকোন পরিস্থিতিতে অটোপাস বন্ধ করা। জিপিএ-৫ পদ্ধতি কোচিং নির্ভরতা বাড়াচ্ছে। এটি বন্ধ করতে হবে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা কমিয়ে রাখতে হবে।

প্রতিবেদনের খসড়ায় আরো বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে হবে। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য খাতে বিদেশি বিনিয়োগ সহজ করা হলে সাধারণ মানুষের উন্নত স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া নিশ্চিত হবে। ফলে বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা খরচের অর্থ সাশ্রয় হবে।

টাস্কফোর্স বলেছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে দক্ষ শ্রমশক্তির অভাব অন্যতম বড় সমস্যা। এক্ষেত্রে কারিগরি শিক্ষায় বিদেশি বিনিয়োগ এলে দক্ষ শ্রমিকের চাহিদার ঘাটতি পূরণ হবে এবং ওই সনদ আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পেতে পারে। পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় এনে দুই বছরের বিএ (টেক) ডিগ্রি দেওয়া যেতে পারে।

সারাবাংলা/জেজে/আরএস

অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণ ও প্রয়োজনীয় সম্পদ আহরণ সংক্রান্ত টাস্কফোর্স কমিটি’ ড. কে এ এস মুর্শিদ

বিজ্ঞাপন

মেলার তৃতীয় দিনে নতুন বই এসেছে ৩২টি
৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০০:০০

আরো

সম্পর্কিত খবর