হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের দাবি করা ২৩ হত্যার কোনোটিই সাম্প্রদায়িক সহিংসতার না
৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:৫১ | আপডেট: ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০০:০৬
ঢাকা: বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ গত বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছে গণঅভ্যুত্থানের পর গত সাড়ে চার মাসে দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় ২৩ জন হত্যার শিকার হয়েছেন। তাদের এই দাবিকে অন্তর্বর্তী সরকার অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেয় এবং উল্লিখিত ২৩টি হত্যাকাণ্ডের তালিকা সংগ্রহ করে। ওই তালিকাকে প্রধান উপদেষ্টার দফতর থেকে পুলিশের কাছে পাঠিয়ে প্রতিটি ঘটনার প্রকৃত কারণ ও গৃহীত আইনি ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, পুলিশ সদর দফতর থেকে প্রতিটি ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়। উল্লিখিত ২৩টি ঘটনার ২২টির প্রাথমিক কারণ সম্পর্কে পুলিশ অবগত হয়েছে এবং যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে। তবে একটি ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
যে ২২টি ঘটনার বিস্তারিত ইতোমধ্যে জানা গেছে তার মধ্যে একটি ঘটনার সঙ্গেও সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কোনো সম্পর্ক নেই। হত্যাকাণ্ডের মধ্যে সর্বোচ্চ সাতটির সঙ্গে চুরি ও দস্যুতার সম্পর্ক রয়েছে, চারটিতে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কলহের ঘটনা জড়িত, তিনটি ক্ষেত্রে সাধারণ অপরাধ যেমন, ধর্ষণ, অতিরিক্ত মদ পানে মৃত্যু এবং বিদ্রুপ মন্তব্য করা নিয়ে দুই পক্ষের মারামরি থেকে মৃত্যু, দুইটি দুর্ঘটনা জনিত মৃত্যু, দুইটি ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরে মৃত্যু, একটিতে স্থানীয়দের সংঘাতে মৃত্যু, একটি জমিজমার বিরোধ সংক্রান্ত ঘটনায় মৃত্যু, একটি আত্মহত্যার ঘটনা এবং একটি মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এখনো না জানা গেলেও এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে যে সেখানে কোনো সাম্প্রদায়িক সংঘাতের বিষয় নেই।
এই তালিকায় এমন ব্যক্তিও রয়েছেন যিনি গত বছরের জানুয়ারি মাসে একটি ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ডিসেম্বর মাসে হাসপাতালে মারা যান।
এই প্রত্যেকটি ঘটনাকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে আইনি পদক্ষেপ ইতোমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে। এই ২৩ ঘটনার দুটোতে যেখানে আত্মহত্যা ও পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা রয়েছে সেই দুটি পুলিশ ইতোমধ্যে তদন্ত শেষে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। অপর ২১টি তদন্তাধীন মামলায় ইতোমধ্যে ৪৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ১৭ জন নিজেদের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার কোনো ধরনের সংহিসতাকেই সমর্থন করে না। একইসঙ্গে এই ধরনের ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বলে প্রচারকে উদ্বেগজনক বলে মনে করেন অন্তর্বর্তী সরকার। এই ধরনের বিভ্রান্তিমূলক প্রচরণা দেশের সার্বিক সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের সূত্রপাত ঘটাতে পারে বিবেচনায় সকল পক্ষকে আরোও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানায় অন্তর্বর্তী সরকার।
সারাবাংলা/জিএস/এইচআই